কৃষকের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা হচ্ছে ষাড়ের মই দৌড় প্রতিযোগিতা। কিন্তু নানা কারণে এ খেলাটি দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে। তবে শুকনো মওসুমে শেরপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হয়ে থাকে এ খেলা। এ খেলা দেখতে ভিড় করে অনেক মানুষ।
হাজার হাজার বয়স্ক, যুবক শিশু-কিশোরসহ অনেকেই উপস্থিত হয় ষাড়ের মই দৌড় দেখার জন্য। তবে আগের মতো এখন আর এ খেলা অনুষ্ঠিত হয় না। খেলাটি প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। কিন্তু হারিয়ে যেতে বসলেও এ খেলার জনপ্রিয়তা এখনও কমেনি।
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ খেলাকে অনেকেই এখনও দেখেই নি। নতুন করে এ খেলা দেখে তারা খুব আনন্দ পেয়ে থাকে। যে এলাকায়ই ষাড়ের মই দৌড় খেলা অনুষ্ঠিত হয় সেখানেই উৎসবের আমেজ বয়ে যায়। একটি মইয়ে ৪টি ষাড় গরু থাকে। আর এরকম তিনটি করে মই দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। অনেক সময় নির্ধারিত দাগের বাইরে চলে যায় ষাড়ের মই। এতে আউট ধরা হয় ওই মইকে। এখানে থাকে দুই জন মইয়াল। আরো থাকে ৩জন ধরাল। রেফারীর বাঁশি ফুকানোর সাথে সাথেই মইগুলোর ষাড়েরা দৌড়ানো শুরু করে। যে মই বিজয়ী হয় তখন তারা মেতে উঠে আনন্দে। আর চারদিকে দাঁড়িয়ে থাকা হাজার হাজার নারী, পুরুষ, শিশুর উল্লাস ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে। এ খেলা দেখাতে পেরে ময়ালরাও অনেক খুশি। ময়াল, ধরাল ও ষাড়ের মালিকরা বাপদাদার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চালিয়ে যাচ্ছেন এ খেলা।
গ্রামবাংলার ষাড়ের দৌড় খেলা হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এবং নতুন প্রজন্মকে জানান দিতে শ্রীবরদীর উত্তর ছনকান্দা সমাজ কল্যাণ সমবায় সমিতি প্রতি বছর আয়োজন করে এ খেলার। এবারও আয়োজন করেছিল ঐতিহ্যবাহী ষাড়ের মই দৌড় প্রতিযোগিতা। ১৮ জানুয়ারি বিকেলে শ্রীবরদী পৌর এলাকার ছনকান্দার খোলা মাঠে আয়োজন করা হয় এ খেলার। শেরপুরসহ আশপাশের জেলা থেকে অন্তত অর্ধশতাধিক ষাড় এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। এতে প্রথম স্থান অধিকার করে জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলার চন্দনপুরের হাবু ব্যাপারী চঙ্গ (মই), দ্বিতীয় স্থান করে উপজেলার চরশিমুলচুরা দুলা মন্ডলের চঙ্গ (মই), ৩য় স্থান অধিকার করে শ্রীবরদীর ভট্টু মন্ডলের চঙ্গ।
আয়োজক কমিটির সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম মৃধা জানান, এখেলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে আমরা প্রতি বছরই আয়োজন করবো এখেলা। গ্রাম বাংলার এতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় এ খেলা যেন হারিয়ে না যায় এ দাবি কৃষকসহ সবার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন