শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

পাইপ লাইনে গ্রামের সাড়ে ৩ হাজার পরিবার পাচ্ছে সুপেয় পানি

গোপালগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০৯ পিএম

গোপালগঞ্জে পাইপ লাইনে নিরাপদ ও সুপেয় পানি সরবরাহের মাধ্যমে শহরের সুবিধা পাচ্ছে গ্রামের সাড়ে ৩ হাজার পরিবার। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া থেকে এ প্রকল্প শুরু করা হয়েছে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জম্মস্থান গর্বিত টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পরিবারে পরিবারে সুপেয় পানি সরবরাহ শুরু করেছে। পর্যায়ক্রমে গোপালগঞ্জ সদর, কোটালীপাড়া, কাশিয়ানী ও মুকসুদপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে এ প্লান্ট স্থাপন করে পানি সরবাহ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তর।

গোপালগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক চন্দ্র তালুকদার জানান, প্রায় ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে টুঙ্গিপাড়া- কোটালীপাড়া উপজেলা ও পৌরসভা সমূহে নিরাপদপানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতী ও কুশলী ইউনিয়নে ২টি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। পাটগাতী প্লান্ট থেকে ঘন্টায় ১ লাখ ৫০ হাজার লিটার নিরাপদ পানি উৎপাদন করে সকাল বিকাল ২ হাজার পরিবারকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে সংযোগ দিয়ে সুপেয় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়া কুশলী প্লান্টে ঘন্টায় ৫০ হাজার লিটার পানি উৎপাদ করা হবে। কুশলী প্লান্টের কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এখন সরবরাহ লাইনের কাজ শেষ হয়েছে। এখান থেকে চলতি জানুয়ারী মাসের শেষ দিকে কুশলী ও বর্ণি ইউনয়নের ১ হাজার ৫শ’ পরিবারে সুপেয় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এ প্রকল্প সম্প্রসারণ করে গোটা জেলার সব গ্রামকে নিরাপদ পানির আওতায় আনা হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

গোপালগঞ্জ জনস্বাস্থ্যের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক চন্দ্র তালুকদার বলেন, গত সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী গ্রামে শহরের সুবিধা দিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এটি বাস্তবায়ন করতে আমরা সারাদেশের মধ্যে টুঙ্গিপাড়া থেকে প্রথম প্লান্ট স্থাপন ও পাইপ লাইনের মাধ্যমে সুপেয় ও নিরাপদ পানি গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছি। এরমধ্য দিয়ে গ্রামের মানুষ শহরের সুবিধা পাচ্ছেন।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী প্রদীপ মজুমদার বলেন, পাটগাতী, কুশলী ও বর্ণি ইউনিয়নে গভীর নলকূপ স্থাপন করা যায়না। এসব ইউনিয়নের অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আয়রণ ও আর্সেনিক রয়েছে। এছাড়া খালের পানিতে শুস্ক মৌসুমে লবন চলে আসে। নিরাপদ পানির অভাবে ৩টি ইউনিয়নের ১০ ভাগ মানুষ ডায়রিয়া, আমাশয়, টায়ফয়েড সহ পানি বাহিত রোগে ভুগছিলেন। এছাড়া ৩ ইউনিয়নের সব মানুষের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে ২টি পানির প্লন্ট স্থাপন করা হয়েছে। এ প্লান্টে ৪ স্তরে পানি ফিল্টার করা হয়। এর মাধ্যমে ইতিমধ্যে ২ হাজার পরিবার সুপেয় পানির আওতায় এসেছে। আরো ১ হাজার ৫ শ’ পরিবার দ্রæত এ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এ ৩ ইউনিয়নের আরো কয়েক হাজার পরিবারকে এর আওতায় আনা হবে। সে লক্ষেই কাজ চলছে।
পাটাগাতী ইউনিয়নের গিমাডাঙ্গা গ্রামের মোঃ হাফিজ বিশ্বাস বলেন, আমাদের ইউনিয়নের সুপেয় ও নিরাপদ পানির বড় অভাব ছিলো। এখন পানির প্লান্ট স্থাপন করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এ পানির স্বাদ-গন্ধ চমৎকার। পান করতেও ভাল লাগছে। এ পানি আমাদের জীবনকে সহজ করে দিয়েছে।
উপকারভোগী মাওলানা শফিউল্লাহ বলেন, নিরাপদ পানির অভাবে আমাদের এলাকায় পানি-বাহিত রোগ ব্যাধি লেগেই থাকত। এখন আমরা ভাল পানি পাচ্ছি। এ পানি পান করে আমরা এখন পরিবার পরিজন ও প্রতিবেশীদের নিয়ে সুস্থ্য আছি।

উপকারভোগী জাকিয়া বেগম বলেন, গ্রামে বসেই শহরের সুযোগ পাচ্ছি। বাড়িতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে সরকার পানি দিচ্ছে। এ পানি আমরা পান করছি। এছাড়া রান্না, গোসল সহ বাড়ির সব কাজ এ পানি দিয়েই করছি। সুপেয় নিরাপদ পানি পেয়ে আমরা খুবই উপকৃত হয়েছি। নিরাপদ পানি আমাদের জীনযাত্রায় পরিবর্তন এনে দিয়েছে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন