বাগেরহাটের শরণখোলা থেকে ক্রেতা সেজে ফাঁদে ফেলে একটি বাঘের চামড়াসহ গাউস ফকির (৫২) নামের এক পাচারকারীকে আটক করেছে র্যাব ও বন বিভাগ। গত মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে উপজেলা সদর রাজৈর বাসস্টান্ড সংলগ্ন জলিলের ব্রিজ এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক গাউস ফকির উপজেলার দক্ষিণ সাউথখালী গ্রামের রশিদ ফকিরের পুত্র। গতকাল দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া বাঘের চামড়াটির দৈর্ঘ্য ৮ ফুট ১ ইঞ্চি এবং প্রস্থ ৩ ফুট ১ ইঞ্চি।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানায়, শরণখোলা রেঞ্জের বনরক্ষীরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত শনিবার থেকে চারদিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় আটক পাচারকারীকে অনুসরণ করতে থাকেন। এরপর র্সোসের মাধ্যমে পাচারকারীর সাথে চামড়াটি ১৩ লাখ টাকায় ক্রয় করার চুক্তি করে ফাঁদ পাতেন বনরক্ষীরা। ওই ফাঁদে পা দেয় বাঘ শিকারী গাউস ফকির। এক পর্যায়ে সে চামড়া নিয়ে আসার কথা জানালে শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তার নেতৃত্বে বন রক্ষীদের একটি দল ও র্যাব-৮ এর একটি দল পূর্ব থেকে ওই এলাকায় ওৎ পেতে থাকে। চুক্তি অনুযায়ী ১৩ লাখ টাকা নিয়ে আসার কথা জানানো হলে গাউস ফকিরও বাঘের চামড়া নিয়ে সেখানে হাজির হয়। এসময় চারিদক থেকে ঘিরে ফেলে তাকে চামড়াসহ হাতেনাতে আকট করতে সক্ষম হয় যৌথ বাহিনী।
গ্রেফতার হওয়া গাউস ফকির জানান, তিনি পেশায় একজন জেলে। উপজেলার সোনাতলা গ্রামের অহিদুল ও দক্ষিন সাউথখালী গ্রামের ওবায়দুল করিম নামের দুই ব্যক্তি বাঘের চামড়াটি তাকে বিক্রি করতে দিয়েছে। চামড়াটি বিক্রি করলে তাকে দেড় লাখ টাকা কমিশন দেয়া হবে।
বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. জয়নাল আবেদীন জানান, এ ব্যপারে বণ্যপ্রাণী নিধন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হবে। ২০১২ সালের বন আইনের পরিবর্তন এসেছে। তাতে বাঘ হত্যাকারীদের ১০ বছরের কারাদন্ড ও ১৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। এছাড়া বাঘ শিকারের সাথে আরো কারা জড়িত তা তদন্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি আরও বলেন, বাঘ শিকারিরা খাবারের সাথে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে খাইয়ে বাঘ শিকার করে থাকে। এই বাঘটিকে প্রায় এক মাস আগে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন