উত্তরবঙ্গের বিখ্যাত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মহিষলুটি মৎস্য আড়তে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। হাটিকুরুল-বনপাড়া মহাসড়ক-সংলগ্ন উত্তরবঙ্গের বিখ্যাত মাছের আড়ত উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের মহিষলুটি এলাকা। আর এ আড়তের খাজনা আদায়ে সরকারি নিয়ম মানা হয় না। এখানে ইজারাদারের কথাই শেষ কথা। ফলে কাঙ্খিত আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শত শত খুচরা ও পাইকারি মাছ ব্যবসায়ী। জানা যায়, মহিষলুটির ১১০টি আড়তে প্রতিদিন গড়ে ৪০-৪৫ লাখ টাকার মাছ কেনা-বেচা হয়। সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, পাবনার ফরিদপুর,ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর, নাটোরের গুরুদাসপুর, সিংড়া ও নওগাঁর জেলার আত্রাই উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে শতশত মণ পুকুরে চাষ করা ও দেশীয় প্রজাতির বিলের ভাসা মাছ আসে এ আড়তে। এ ছাড়া ঢাকা, ময়মনসিংহ, জামালপুর, পাবনা, কুষ্টিয়া, সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৩৫০ জন (মাছ ক্রেতা) পাইকার মহিষলুটি মাছের আড়তে মাছ কিনতে আসেন।
মাছ কেনাবেচার গুরুত্বপূর্ণ এ স্থানটিতে খাজনা আদায়ে নেই কোনো নিয়মনীতি। ইজারাদার সরকারি নিয়ম না মেনে নির্ধারিত হারের চেয়ে ১০-১২ গুণ বেশি খাজনা আদায় করছেন বলে অভিযোগ মাছ ক্রেতা পাবনার সুজানগরের আরব আলীর। তিনি জানান, তারা এক অর্থে ইজারাদারের কাছে জিম্মি ও অসহায়। কেননা আড়তে ইজারার মূল্য তালিকা টানানো হয় না। ফলে ইচ্ছে মতো প্রতি মণ মাছ কিনতে পাইকারদের কাছ ইজারাদার ৬ টাকার স্থলে খাজনা আদায় করছেন ৮০ থেকে ১২০ টাকা। রসিদ পর্যন্ত দেন না ইজারাদার।
তাড়াশের মাঝিড়া গ্রামের সোহানুর রহমান জানান, বাড়ির একটি অনুষ্ঠানের জন্য মহিষলুটি মাছের আড়ত থেকে ১০০ কেজি মাছ কেনেন তিনি। এ সময় ইজারাদারের লোক তার কাছ থেকে ৩০০ টাকার খাজনা আদায় করেন। খাজনার রসিদ চাইলে তারা বেঁধে রাখার হুমকি দেন।
ঢাকার মহাজন আয়নাল শেখ, জামালপুরের মিনহাজ, ময়মনসিহের ফরহাদ আলীসহ একাধিক মাছ ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, ইজারাদার এক ঝাকা মাছের জন্য ৮০ থেকে ১২০ টাকা ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে এর চেয়ে বেশি নেন। আবার প্রতি বরফ (পাটা) জন্য ১০-১৫, আড়তদারদের পাল্টা প্রতি ১০, প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র মাছ বিক্রেতাদের কাছ থেকে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা আদায় করা হয়।
এ বিষয়ে মহিষলুটি মাছের আড়তের ইজারাদার মোহাম্মাদ আলী ঝাঁকা প্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, একটা ঝাকায় অনেক মাছ থাকে আর সব অভিযোগ ঠিক না এই বলে তিনি প্রতিবেদককে দেখা করতে বলেন। তাড়াশ তাড়াশ উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মেজবাউল করিম বলেন, এ বিষয়ে ইজারাদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন