দেশের আনাচে-কানাচে অনেক পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে, যেগুলো আবার বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, তৈরি পোশাক, হিমায়িত খাদ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, প্রকৌশল পণ্য, হস্তশিল্প এবং চামড়াবিহীন জুতা রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সামগ্রিক রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সারাবিশ্বে প্লাস্টিক পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। সিঙ্গাপুরে মাথাপিছু ১৩০ কেজি প্লাস্টিক সামগ্রী ব্যবহার হয়, সেখানে বাংলাদেশে হচ্ছে মাত্র ৫-৭ কেজি। কিন্তু আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ মাথাপিছু ৩৫ কেজি প্লাস্টিকের চাহিদা তৈরি হবে। আগামী ১০ বছরে প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ১০ বিলিয়নে উন্নীতকরণের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন এই খাতের উদ্যোক্তারা।
তারা বলছেন, দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে আগামী ২০৩০ সালে ১০ বিলিয়ন টাকার প্লাস্টিক পণ্যসামগ্রী রপ্তানির স্বপ্ন দেখছি। এই রপ্তানি আগামী বছর ২ বিলিয়নে উন্নীত হবে। এই লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি সহায়তায় দক্ষ জনবল তৈরি ও বিশ্বমানের পরীক্ষাগার স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লাস্টিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি-বিআইপিইটি। প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি বাড়াতে সরকার সব ধরনের নীতিগত সহায়তা দেবে। দক্ষ জনবল তৈরি এবং আন্তর্জাতিকমানের টেস্টিং ল্যাব স্থাপনসহ এ শিল্প খাত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বিআইপিইটি। প্লাস্টিক শিল্প বাংলাদেশের জন্য একটি সম্ভাবনাময় খাত, বিশ্বে প্লাস্টিক পণ্যের বিশাল রপ্তানি বাজার রয়েছে। পণ্যের মান, ডিজাইন ও দক্ষতা দিয়ে বিশ্ববাজার দখল করতে হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, শুরুতে গার্মেন্ট পণ্যও সীমিত আকারে রফতানি হতো। এখন পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম গার্মেন্ট রফতানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ জায়গা করে নিয়েছে। শনিবার ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ পানগাঁও কনটেইনার পোর্ট রোডে প্লাস্টিক ইনস্টিটিউটের নিজস্ব ক্যাম্পাস উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, দক্ষজনবল তৈরি এবং আন্তর্জাতিকমানের টেস্টিং ল্যাব স্থাপনসহ এ শিল্পখাত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বিপেট (বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লাস্টিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (বিআইপিইটি)। এ লক্ষ্যে সরকার বিপেটের অবকাঠামো উন্নয়নে অর্থ সহায়তাসহ সব ধরনের নীতিগত সহায়তা দেবে। প্লাস্টিক শিল্প বাংলাদেশের জন্য একটি সম্ভাবনাময় খাত, বিশ্বে প্লাস্টিক পণ্যের বিশাল বাজার রয়েছে। পণ্যের মান, ডিজাইন ও দক্ষতা দিয়ে বিশ্ববাজার দখল করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার এ শিল্পখাত উন্নয়নে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীদেরও এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে দক্ষতা অর্জনের বিকল্প নেই। এ ইনস্টিটিউট দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি। এক সময় বাংলাদেশ তৈরি পোশাক শিল্পের চাহিদা মেটাতে বিদেশ থেকে প্লাস্টিক পণ্য আমদানি করতো। আজ বাংলাদেশ এসব প্লাস্টিক পণ্যের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রফতানি করছে। সরকার এখন মুক্ত বাণিজ্য ও অগ্রাধিকার বাণিজ্য চুক্তির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এ কারণে বিশ্ব বাজারে রফতানি বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হবে।
বর্তমানে দেশে ছোট-বড় মিলে ৫ হাজার কারখানায় প্রায় ১৫ ক্যাটাগরিতে পণ্য উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে পোশাক খাতের জন্য পলিব্যাগ, হ্যাঙ্গার, প্লাস্টিক ক্লিপ, বোতাম, খেলনা সামগ্রীর মধ্যে পুতুল, বল, গৃহে ব্যবহারের জন্য চেয়ার, টেবিল, ডাইনিং টেবিল, বিভিন্ন ধরনের রেক, ঝুড়ি, বাথটাব, জগ, মগ, ঝুড়ি; অফিসে ব্যবহারের জন্য পেপারওয়েট, স্কেল, টেবিল, বলপেন, ফাইল কভার অন্যতম। কৃষি খাতের জন্য পাইপ, সাইকেলের যন্ত্রাংশের মধ্যে বাম্পার, হাতলের কভার, ব্যাক লাইট, স্পোক লাইট, মাছ ও ডিম রাখার ঝুড়ি, ভিডিও ও অডিও ক্যাসেট, কম্পিউটারের উপকরণসহ বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক সামগ্রী তৈরি হচ্ছে।
লেখক: সহ-সভাপতি, এফবিসিসিআই, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেড।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন