ধুলোবালিতে কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে বাংলাবান্ধা। দেশের উত্তরের প্রবেশদ্বার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর। আর প্রতিদিন শতশত পর্যটক দেখতে আসে জিরো পয়েন্ট। এছাড়াও আশপাশে কয়েকটি গ্রামগুলোতে বসবাস করছে হাজার হাজার জনগণ। কিন্তু বাংলাবান্ধা সীমান্ত ফাঁড়ি হতে স্থলবন্দর জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত মহাসড়কের উভয় পাশে বসানো হয়েছে পাথর ভাঙা মেশিন। এসব মেশিন দিয়ে পাথর ভাঙার ফলে ঘন কুয়াশার মত ধুলায় পরিণত হয় হাইওয়েসহ উভয় পাশের গ্রামগুলো। এতে চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ পথচারীসহ এলাকাবাসীকে। এ ভোগান্তি লাঘবের জন্য গত বছর স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় ট্রলি দিয়ে পানি সরবরাহ করে ধুলোবালি কমানোর চেষ্টা করেছিলেন বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুদরত-ই খুদা মিলন। গত শীত মৌসুমের পর থেকেই বন্ধ হয়ে যায় পানি সেচ ব্যবস্থা। পানি সেচ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়ায় এলাকাবাসী ও বন্দরে প্রবেশের রাস্তাটুকু চলাচলে স্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে পড়েছে জনগণ। বিষয়টি নিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের নিকট জানতে চাইলে তারা প্রশাসনের উপর দায় এড়িয়ে যায়। এভাবে চলতে থাকলে এলাকায় বসবাসরত লোকজনসহ অন্যরাও বিভিন্ন জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী জানান, বাংলাবান্ধা এলাকায় শিশু ও বয়স্কদের এ্যাজমা, এলার্জি, নিউমোনিয়া ও ফুসফুসের রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ পাথর ক্রাশিং মেশিন বন্ধ করা না হলে এলাকাবাসী বিভিন্ন জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রোকনুজ্জামান জানান, বাংলাবান্ধা এলাকায় ধুলোবালির জন্য জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত যাওয়া খুব কঠিন। এ এলাকায় শিশু ও বয়ষ্কদের এ্যাজমা এলার্জি নিউমোনিয় ও ফুসফুস জনিত জটিল রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ধুলোবালি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিয়মিত সকাল-বিকাল পানি ছিটিয়ে ধুলোবালি থেকে এলাকাবাসিকে রক্ষা করতে হবে। তা না হলে শিশু ও বয়স্কদের জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে অকালে মৃত্যুবরণ করবে বলে আশঙ্কা করেছেন।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লোড-আনলোড শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. ইদ্রিশ আলী জানান, ধুলোবালির জন্যে শ্রমিকদের কাজ করা খুবই ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ ঝুঁকির মধ্যে কাজ করতে থাকলে আমরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে বিছানায় পড়ে থাকতে হবে। এ বিষয়ে বাংলাবান্ধা ইউপি চেয়ারম্যন কুদরত-ই খুদা মিলন জানান, গত বছর নিজ উদ্যোগে বাংলাবান্ধা বিওপি থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত সকাল-বিকেল দুইবার পনি সরবরাহ করার ব্যবস্থা করেছিলাম। এতে ব্যবসায়ীরা খরচ বহন করার কথা ছিল কিন্তু কোন ব্যবসায়ীই আমাকে সহযোগিতা করেননি। সহযোগিতা না করার কারণে এ বছর রাস্তায় পানি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। এভাবে ধুলোবালি চলতে থাকলে এলাকার পরিবেশর বিরুপ প্রভাবসহ এলাকায় নানান রোগে দেখা দিতে পারে।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা আল-আমিন জানান, ধুলোবালির কারণে আমাদের বন্দরে কাজ করা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। পানি সরবরাহ করে ধুলোবালি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, আমরা ব্যবসায়ীদেরকে বারবার বলেছি তারা যেন পানি সেচ দিয়ে পাথর ক্রাসিং করেন। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে কিভাবে দ্রুত সমস্যা সমাধান করা যায় সে বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যদি তারা সহযোগিতায় এগিয়ে না আসে তাহলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন