শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

পুকুর-খাল খনন প্রকল্পে আরো বরাদ্দ চায় এলজিইডি

আড়াই বছরে আর্থিক অগ্রগতি মাত্র ৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

সারা দেশে পুকুর-খাল খনন প্রকল্পের আড়াই বছরে মাত্র ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ কাজ বাস্তবায়ন হয়েছে। আর্থিক অগ্রগতি আরো কম, মাত্র ৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এ প্রকল্পের শুরুতে দুর্নীতি করা হয়েছে। এদিকে পুকুর-খাল খননের কাজ শুরু না হওয়ায় স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এলজিইডিকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুর রশীদ খান ইনকিলাবকে বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) প্রকল্পটির জন্য ৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে প্রকল্পটির ভৌত অগ্রগতি ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৬৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বা ৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ। আলোচ্য প্রকল্পের আরডিপিপি (সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) মোতাবেক যাবতীয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে এ প্রকল্পের কাজ শুরু করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, সারাদেশে পুকুর, খাল উন্নয়ন বা খননের প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)। গত ২০১৭ সালের জুলাই প্রকল্পটির প্রক্রিয়া শুরু করে। কিন্তু আড়াই বছরে বা ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মাত্র ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ কাজ বাস্তবায়ন হয়েছে। আর্থিক অগ্রগতি আরো কম, মাত্র ৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ। মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে চলতি অর্থবছরে প্রকল্পটি নিম্ন অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে। এ অর্থবছরে প্রকল্পটির জন্য বরাদ্দ ৪৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে অতিরিক্ত ১০৫ কোটি বরাদ্দ চেয়ে অর্থ বিভাগ ও পরিকল্পনা কমিশনকে চিঠি দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। ২০১৭ সালের ২৯ আগস্ট জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। এর মোট খরচ ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৩৩৪ কোটি ৯৮ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রকল্পটির প্রথম সংশোধন আনা হয়। সংশোধনীতে এর খরচ বাড়িয়ে ধরা হয় ১ হাজার ৭৫৭ কোটি ৪৭ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। আর প্রকল্পটি মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয় ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত।
স্থানীয় সরকার বিভাগের এক যুগ্মসচিব জানান, আড়াই বছরে প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মিজানুর রহমান প্রকল্পের কাজ শুরু না করে। কিভাবে খনন কাজে ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ কাজ বাস্তবায়ন হয়েছে। আর্থিক অগ্রগতি আরো কম, মাত্র ৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরে প্রকল্পটি নিম্ন অগ্রাধিকার তালিকাভুক্ত থাকায় গত অর্থবছরে শুধু প্রশাসনিক ব্যয় ছাড়া কোনো অর্থ বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। প্রকল্পটির বিপরীতে মোট ৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও এ যাবত তৃতীয় কিস্তি পর্যন্ত মোট ২৭ কোটি টাকা অবমুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজস্ব ১৫ কোটি এবং মূলধন ১২ কোটি টাকা। মূলধন খাতের এ অর্থ প্রকৃত প্রয়োজনের তুলনায় অপর্যাপ্ত।
কর্মকর্তারা আরো জানান, জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্তই এ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের প্রকৃত সময়। বর্তমানে ১৯ কোটি টাকার চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে এবং মাঠ পর্যায়ে কাজ চলমান রয়েছে। ২০২১ সালের জানুয়ারি নাগাদ চলমান কাজের চুক্তিমূল্য ২৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। গত অর্থবছরে বাস্তবায়িত কাজের বিপরীতে মাঠ পর্যায়ে পরিশোধের পর প্রায় ২৫ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। পরিকল্পনা মোতাবেক প্রত্যাশিত অগ্রগতি নিশ্চিত করতে এ মুহূর্তে মূলধন খাতে অন্তত ১০৫ কোটি বরাদ্দের প্রয়োজন। চলতি অর্থবছরের এডিপিতে অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রদানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) এলজিইডি, মো. মিজানুর রহমান প্রকল্পের বিষয়ে ফোনে কিছুই বলতে চান না। এ প্রকল্পের দুর্নীতি হয়েছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন সেটা এলজিইডি প্রধান প্রকৌশলী বলতে পারে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন