শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

দক্ষিণাঞ্চলে ক্যাপসিকামের আবাদ ক্রমশ বাড়ছে

ভোলার চরাঞ্চলে লাভবান কৃষক

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৬:২৪ পিএম | আপডেট : ৬:৩৯ পিএম, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

দক্ষিণাঞ্চলের বিস্তীর্ন চরাঞ্চলে অপ্রচলিত ও লাভজনক কৃষিপণ্য ‘ক্যাপসিকাম’ আবদ ও উৎপাদনের ব্যপক সম্ভবনার দুয়ার খুলছে। কম খরচে অধিক লাভজনক রপ্তানিযোগ্য এ কৃষিপণ্যের প্রতি ভোলা সহ দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি এলাকার কৃষকরা ক্রমশ ঝুকছে। ভোলার ভাটি মেঘনার মধ্যবর্তি চরগুলোতে গত কয়েক বছরে বিদেশী সবজি ক্যাপসিকাম’র চাষ ক্রমশ বাড়ছে। কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর থেকে উন্নত বীজ ও চাষ প্রযুক্তি মাঠ পর্যায় কৃষকদের কাছে পৌছে দিতে পারলে খুব দ্রুত এ লাভজনক কৃষিপণ্যের আবাদ ও উৎপাদনে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে বলে মনে করছেন চাষিগন। ডিএই’র বরিশাল কৃষি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক জানিয়েছেন, এ অঞ্চলে ক্যাপসিকাম-এর আবাদ অতি সম্প্রতি শুরু হয়েছে। আমরা কৃষক পর্যায়ে এর আবাদ প্রযুক্তি সহ ভাল বীজের সন্ধান দেয়ার লক্ষে কাজ শুরু করছি। আগামী রবি মৌসুম থেকে এ কৃষিপণ্যের আবাদ ও উৎপাদন যাতে উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পায় ষে লক্ষ্যে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করতে মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
ভোলা জেলায় ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ১৫ হেক্টর, ২০১৯-২০ সালে ৩৭ হেক্টর এবং চলতি ২০২০-২১ অর্থ বছরে ৭০ হেক্টর জমিতে ক্যাপসিকাম-এর আবাদ হয়েছে বলে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর-ডিএই সূত্রে জানা গেছে। এ হিসেবে গত তিন বছরের শুধু ভোলাতেই এ কৃষিপণ্যের আবাদ ৫ গুণ বেড়েছে। এমনকি এ সবজি চাষ করে ভাগ্যর পরিবর্তন হচ্ছে ভোলার বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের চাষীদের। তবে এখনো ডিএই বা কৃষি গবেষনা প্রতিষ্ঠান থেকে ক্যাপসিকাম চাষে প্রশিক্ষণ বা কোন ধরনের প্রযুক্তিগত সহায়তা পায়নি ভোলার চরাঞ্চলে সবজি চাষিরা। এধরনে প্রশিক্ষন বা প্রযুক্তি হস্তান্তর হলে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলেই রপ্তানিযোগ্য এ কৃষি পণ্য আবাদ ও উৎপাদনে বিপ্লব ঘটানো সম্ভব বলে দাবি করছেন চাষীরা।
ভোলার মেঘনা নদীর বুকে জেঁগে উঠা ‘মাঝের চর’ ও দৌলতখান উপজেলার ‘চর মদনপুর’ এলাকায় দু বছর আগে কৃষকরা পরীক্ষামূলক ভাবে বিদেশী সবজি ক্যাপসিকাম চাষ শুরু করেন। প্রথম বছর সফলতা পেয়ে পরবর্তী বছর বাণিজ্যিকভাবে এ সবজির চাষ করেন তারা। কম খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় গত বছরে এ সবজির চাষ ও চাষীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৪ গুন। এসব চরে চাষীরা এখন খুবই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ক্যাপসিকাম-এর পরির্র্যায়। পানি দেয়া থেকে শুরু করে আগাছা বাছাই ও নিয়মিত বালাই ব্যাবস্থাপনায় ব্যস্ত কৃষকগন।
এবার ভোলার সদরের মাঝের চর ও দৌলতখানের চর মদনপুরে প্রায় পৌনে ২শ একর জমিতে প্রায় ৩শ চাষী ক্যাপসিকাম চাষ করেছেন। তবে এখনো উৎপাদিত ক্যাপসিকাম-এর ভাল বাজার তৈরী হয়নি দক্ষিণাঞ্চলে। ভাল দাম পেলে রপ্তানীযোগ্য এ কৃষি পন্য উৎপাদনে ব্যাপক ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে পারে বলেও মনে করছেন মাঠ পর্যায়ের কৃষিবীদগন। কৃষকগন এ অপ্রচলিত কৃষিপণ্য আবাদে সরকারী তরফ থেকে যৌক্তিক সহযোগীতা কামনা করছেন।
প্রতিদিনই ট্রলারযোগে ভোলার এসব চরাঞ্চলের ক্যাপসিকাম বরিশাল, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী ছাড়াও ঢাকা বাজারেও যাচ্ছে সিমিতকারে। তবে এখনো ঢাকার বাইরে এর বাজার সৃষ্টি হয়নি বিধায় কৃষকরা ভাল দাম পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন।
ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর-এর দাযিত্বশীল সূত্রের মতে, জেলায় ক্যাপসিকাম চাষ বাড়াতে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও বিভিন্ন ধরণের সহায়তা প্রদান করে আগামী বছর এ অপ্রচলিত কৃষিপণ্যের আবাদ অন্তত ৪ গুন বাড়ানোর পরিকলপনা গ্রহন করা হয়েছে। এলক্ষে কৃষক পর্যায়ে প্রযুক্তি হস্তান্তর ও ভাল বীজের সন্ধান সহ প্রয়োজনীয় সব কিছু করা হবে বলেও জানিয়েছে সূত্রটি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন