ব্রণ বা একনি ভালগারিস মেয়েদের জন্য খুব বিব্রতকর। বিশেষ করে অবিবাহিত মেয়েদের জন্য তা মারাত্মক হতাশা সৃষ্টি করে। অনেকে সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকেন। কারো কারো মুখে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়। সুতরাং একনি বা ব্রন হলে অবশ্যই গুরুত্বের সাথে নিতে হবে।
বহুদিন ধরেই চর্মরোগ বিশেষজ্ঞগণ জন্মনিয়ন্ত্রন বড়ি ব্রণের চিকিৎসায় ব্যবহার করেছেন। সিবাসিয়াস বা তৈলগ্রন্থি যখন অতিরিক্ত সিবাম তৈরি করে তখন ব্রণ হয়। এন্ড্রোজেন জাতীয় হরমোন টেস্টোস্টেরোন সিবাম বেশী বেশী তৈরি করে তখনই ব্রণ হয়।
আবার মেয়েদের ওভারি এবং এড্রোনাল গ্রন্থি থেকে এন্ড্রোজেন হরমোন বের হয়। তবে কম পরিমানে। যদি কখনো অতিরিক্ত পরিমানে বের হয় তবে তা অতিরিক্ত সিবাম তৈরি করে। তখন ব্রণ দেখা দেয়।
জন্মনিয়ন্ত্রন বড়িতে ইস্ট্রোজেন এবং প্রজেস্টেরন থাকে। এ দুটি হরমোন এন্ড্রোজেন হরমোন কমিয়ে দেয়। ফলে সিবাম কম তৈরি হয় এবং ব্রণ হয়না।
ব্রণ ডায়াগনসিসের সাথে সাথেই কিন্তু জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি চিকিৎসা হিসেবে দেয়া হয়না। যখন বিশেষ সাবান, এন্টিবায়োটিক এবং ক্রীম পুরোপুরি কাজ করে না তখন ওরাল কন্ট্রাসেপটিপ পিল বা ওসিপি দেয়া হয়। তবে সব পিল কিন্তু ব্রণে কাজ করে না।
কম্বাইন্ড ওরাল কণ্ট্রাসেপটিভ পিল অর্থাৎ যেখানে ইস্ট্রোজেন এবং প্রজেস্টেরন থাকে ব্রণে ভাল কাজ করে। শুধু প্রজেস্টেরন জাতীয় ওসিপি ব্রনে তেমন কাজ করেনা। অনেক ক্ষেত্রে এটা ব্রণ আরও বাড়িয়ে দেয়।
অনেকের ব্রন থাকে, মুখে চুল গজায়, মাসিকে সমস্যা এবং স্থুলতা থাকে, তখন পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমের কথা মাথায় রাখা উচিত। সেক্ষেত্রে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শমত কাজ করা উচিত। জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ির কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে। যাদের মাইগ্রেণ এবং লিভারের অসুখ আছে তাদের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। যদি উচ্চরক্তচাপ, হার্টের অসুখ এবং আগে পায়ে এবং ফুসফুসে রক্ত জমাট বাঁধার ইতিহাস থাকে তবে ওসিপি দেয়া উচিত নয়।
জন্মনিয়ন্ত্রন বড়ি ব্রনে কখন ব্যবহার করতে হবে তা একজন বিশেষজ্ঞের মত অনুসারেই হওয়া উচিত। নিজে নিজে এখানে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ঠিক নয়। দোকানদারের পরামর্শেও জন্মনিয়ন্ত্রন বড়ি গ্রহণ ঠিক নয়। আবার সব বড়ি ব্রনে কাজও করে না। একই সাথে যদি জন্মনিয়ন্ত্রনের প্রয়োজন থাকে এবং ব্রন থাকে তখন এটি ভাল কাজ করে। তবে ব্যবহারের আগে সবকিছু বিবেচনা করে তবেই সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।
ডা. ফজলুল কবির পাভেল
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন