জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলার স্বার্থে বিশেষজ্ঞসহ সংশ্লিষ্ট সকলের মতামতের ভিত্তিতে কার্বন নির্গমণ কমানোর কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের আহবান জানিয়েছে সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি) এবং ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক সাউথ এশিয়া-বাংলাদেশ।
গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এই আহবান জানানো হয়। জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় গ্রীণ হাউজ গ্যাস নির্গমন হ্রাসকল্পে বাংলাদেশের জাতীয়ভাবে নির্নীত অবদান (এনডিসি-ন্যাশনাল ডিটারমাইন্ড কনট্রিবিউশনস) প্রকাশের প্রেক্ষিতে আমাদের প্রত্যাশা ও প্রস্তাবনা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সিপিআরডি’র নির্বাহী প্রধান মো. শামসুদ্দোহা। আলোচনায় অংশ নেন ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিষ্ট ফোরামের (সিসিজেএফ) সভাপতি কাওসার রহমান, সুন্দরবন ও উপকুল সুরা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল ভদ্র এবং সিপিআরডি’র সিনিয়ার রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট আকিব জাবেদ ও আল ইমরান।
সংবাদ সম্মেলনে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর, বাস্তবায়নযোগ্য ও যুগোপযোগী এনডিসি প্রণয়ণের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলা হয়, পুনঃমূল্যায়িত এনডিসি (জাতীয়ভাবে নির্নীত অবদান) বিষয়ে নাগরিক সমাজের প্রত্যাশা, সদ্য জমাদানকৃত অন্তঃবর্তীকালীন নথিটির বিশ্লেষণ উত্থাপন এবং এনডিসি বিষয়ে সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সুপারিশে বলা হয়, বাংলাদেশকে একটি সর্বজন গ্রহণযোগ্য পুনর্ম‚ল্যায়িত এনডিসি তৈরি করতে হবে। কৃষির মতো দেশের বেশিরভাগ মানুষের জীবিকা নির্ভরশীল কোনো খাতকে এনডিসিতে অন্তর্ভ‚ক্ত করা যাবে না। গ্রীণ হাউজ গ্যাস-ভুক্ত নতুন কোন গ্যাসের উদগীরণ হ্রাসের টার্গেট নেয়া যায় কি-না তা খতিয়ে দেখতে হবে। এনডিসি পুনঃমূল্যায়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অংশীজনের জ্ঞান এবং যুক্তিযুক্ত প্রস্তাবনাকে বিবেচনায় নিতে হবে। এনডিসি পুনঃমূল্যায়ন প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণ মূল করতে দেশের নাগরিক সমাজ, গবেষক, উন্নয়ন কর্মী ও উন্নয়ন সহযোগীদের যুক্ত করতে হবে।
লিখিত বক্তব্যে মো. শামসুদ্দোহা বলেন, বর্তমানে বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা ৪২০ পিপিএম ছাড়িয়ে গেছে। যা বিগত ৪ লাখ ২০ হাজার বছরেও দেখা যায়নি। বায়ুমন্ডলে তাপ বৃদ্ধিকারী (তাপ শোষণ ও তাপ ধারণকারী) এসব গ্যাস যেমন কার্বন-ডাই-অক্সাইড, কার্বন-মনো-অক্সাইড, কোরোফোরো কার্বন, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড ইত্যাদি গ্রীণ হাউজ গ্যাসের উত্তরোত্তর বৃদ্ধির ফলে পৃথিবীর গড় উষ্ণতা ইতোমধ্যে শিল্প-বিপ্লবের পর্যায় থেকে এক দশমিক ১০ সে. বেড়েছে। ইতোমধ্যে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির এই উর্ধমূখী প্রবণতার ফলে নেতিবাচক প্রভাব পরিলতি হচ্ছে। আবহাওয়াজনিত চরম দুর্যোগ বাড়ছে। মানুষের জীবন-জীবিকা ক্রমেই ঝুঁকিগ্রস্থ হচ্ছে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়ছে। এমতাবস্থায় কার্বন উদগীরণের মাত্রা কমানোর জন্য ধনী দেশগুলোর আইনী বাধ্যবাধকতা থাকলেও তারা দায়ভার এড়িয়ে গেছে। তাই এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী।
সিসিজেএফ সভাপতি কাওসার রহমান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সারাপৃথিবীতেই কথা হচ্ছে কিন্তু তারপরও আমরা দেখছি এখনো নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে জানা-বোঝার ঘাটতি রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন