ঈশ্বরদী (পাবনা) উপজেলা সংবাদদাতা : ঈশ্বরদীতে নদীর তীরবর্তী চরাঞ্চলে রোপণ করা প্রায় দুই হাজার একর জমির আখ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ভারতের ফারাক্কা বাঁধের সবগুলো গেট খুলে দেয়ার কারণে সৃষ্ট বন্যায় এমনটি হয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে একেবারেই পানির নিচে ডুবে গেছে প্রায় তিনশ’ একর জমির আখ এবং বাকি প্রায় সতেরশ’ একর জমির আখ বন্যার পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে পদ্মা নদীর তীরবর্তী চরাঞ্চল লক্ষীকু-া, কামালপুর, চর কামালপুর, পাকশী, সাহাপুর ও সাঁড়া এলকা ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।
ঈশ্বরদীস্থ পাবনা সুগার মিলের আওতাধীন বিভিন্ন সাব জোনের অধীনে কৃষকরা মিল থেকে ঋণ ও বীজ নিয়ে নদীর তীরবর্তী ওই সমস্ত চরে আখ রোপণ করেছিলেন। বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত ডোবা আখের ক্ষেত দেখতে গতকাল (বুধবার) আসেন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের উপ-মহাব্যবস্থাপক মোঃ লিয়াকত আলী। তিনি সরেজমিন ওই সমস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন।
পাবনা সুগার মিলের কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে পাবনা সুগার মিলের অধীনে ৪১১৫ একর জমিতে আখ রোপণ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় দুই হাজার একর জমির আখ সম্প্রতি বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। বন্যার পানিতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লক্ষ্মীকু-া ও সাহাপুর ইউনিয়নের শত শত একর জমির আখ। কৃষি বিভাগ আরও জানায়, পানি স্থায়ী হলে আখের গাছ পচন ধরে নষ্ট হয়ে যাবে। আর যে সমস্ত জমির আখ পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে সেগুলোও ফলনের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ইতিমধ্যেই পানিতে নিমজ্জিত আখের গাছ লালচে রং ধারণ করেছে। সপ্তাহখানেক পানি স্থায়ী হলে গাছগুলো মারা যাবে বলেও জানায় কৃষি বিভাগ। অতিরিক্ত পানির কারণে প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণও নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি বলেও জানায় কৃষি বিভাগ।
পাবনা সুগার মিলের মহা-ব্যবস্থাপক (কৃষি) কৃষিবিদ মোঃ সায়েদুর রহমান জানান, এই মিলের চাহিদার অর্ধেক আখ আসে লক্ষীকু-া ও সাহাপুর এলাকার নদীর তীরবর্তী চরাঞ্চল থেকে। কিন্তু এবার ফরাক্কার বাঁধ খুলে দেয়ার কারণে সৃষ্ট বন্যায় ওই সমস্ত এলাকার শত শত একর জমির আখ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পানি কমলেও আখের ব্যাপক ক্ষতি হবে। সে ক্ষেত্রে আগামী মৌসুমে আখের অভাব প্রকট আকার ধারণ করবে এবং মিলের ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন