এ টি এম রফিক, খুলনা থেকে : একের পর এক মামলার ভারে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছে খুলনা জেলা ও নগর বিএনপি। তারপরও দলের নেতাকর্মীরা চাঙ্গা আছেন। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির আলোকে মিছিল-মিটিংয়ে অংশ নিচ্ছেন কর্মীরা। মহানগরী ও নয় উপজেলায় ২০ হাজার নেতাকর্মী আদালতে প্রায় প্রতিদিন হাজিরা দিচ্ছেন। কয়রা ও বটিয়াঘাটায় বিএনপির রাজনীতি ঝিমিয়ে পড়েছে। সমঝোতা থাকায় ডুমুরিয়া নেতাকর্মীদের নামে উল্লেখ্যযোগ্য মামলা নেই।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচন প্রত্যাখান করে লাগাতার অবরোধের সাথে দফায় দফায় হরতাল আহ্বান করে বিএনপি। বিরোধী দলকে দমন করতে তাদের নামে দেয়া হয় গাড়ি ভাঙচুর, নাশকতা, অগ্নিসংযোগ ও বোমা হামলার হামলা। অবরোধ শেষে হয়রানি এড়াতে অধিকাংশ কর্মীরা গা-ঢাকা দেয়। এখানকার মামলার উল্লেখ্যযোগ্য আসামীরা হচ্ছেন-বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, নগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি, জেলার সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম মনা, আমির এজাজ খান, নগর সহ-সভাপতি শাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, ফজলে হালিম লিটন, সিরাজুল ইসলাম, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, আরিফুজ্জামান অপু, মোঃ ফকরুল আলম, জিয়াউর রহমান জিকু, সাবেক চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী জুলু ও মনিরুল হাসান বাপ্পী, ফুলতলা উপজেলা শাখার সভাপতি কায়সার আলী জমাদ্দার, সাধারণ সম্পাদক সরদার আলাউদ্দিন মিঠু, শফিকুল আলম তুহিন, আজিজুল হাসান দুলু ও সেখ কামরান হাসান প্রমূখ।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এসব মামলায় জামিন থেকে হাজিরা পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিন হাইকোর্ট থেকে নি¤œ আদালতে আসতে হচ্ছে ২০ হাজার নেতাকর্মীকে। মামলার মধ্যে ৪০শতাংশ দুর্বল থাকায় চার্জশিট দিতে বিলম্ব হচ্ছে। ১০৬টি মামলা নিষ্পত্তি হলেও খালাসপ্রাপ্তরা নানাভাবে হয়রানি হচ্ছে। ৬১টি মামলায় চার্জশিটভুক্তরা জামিন নিয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকার পরও গত ১৮আগস্ট স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে সংশিষ্ট স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেয়।
অপর একটি সূত্র জানান, বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের নামে মামলাগুলো বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ ও দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সে সব মামলার এজাহারে আরও অজ্ঞাতনামা আসামী বলে উল্লেখ করা হয়েছে, সে সব মামলার চার্জশিট দ্রুত দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাগিদ দেয়া হয়েছে।
মহানগরীর পার্শ্ববর্তী রূপসা উপজেলায় দলীয় কর্মীদের নামে ২০টিরও বেশি মামলা হয়েছে বলে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোল্যা খায়রুল ইসলাম জানিয়েছেন। পুলিশের ভয়ে অনেকেই এলাকাছাড়া হয়েছে। মামলা সামাল দিতে নেতাকর্মীদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
নগর বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিরোধী দল-মতের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া সরকারের একটা কৌশল। সেই অপকৌশলে তো বিএনপি নেতাকর্মীদের দমিয়ে রাখা যায়নি, যাবে না।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা বলেন, মামলা মাথায় নিয়েও নেতাকর্মীরা দলীয় কর্মসূচিতে সোচ্চার ভূমিকা রেখেছে। হামলা-মামলার নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে অনেকেই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র বসবাস শুরু করেছেন। তবুও মনোবল হয়রানি তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রায় প্রতিদিনই আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন