শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

স্বাধীনতা অর্জন করেছি সংগ্রামের পথ বেয়েই

মাতৃভাষা পদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মাতৃভাষার জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে বারবার আমাদের ছাত্রদের জেলে যেতে হয়েছে। জেলে যাওয়াদের মধ্যে বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব অন্যতম এবং দীর্ঘদিন তিনি কারাবরণ করেন। মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে; কিন্তু বাঙালি জাতি তার মুক্তির সংগ্রাম অব্যাহত রাখে।
মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন, বিকাশ, চর্চা, প্রচার-প্রসারে অবদানে স্বীকৃতির জন্য জাতীয় অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামসহ তিন ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক দিয়েছে সরকার। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে ২০২১ সালের এ সম্মাননা পদক তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

গতকাল রোববার মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২১ এর উদ্বোধন এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক-২০২১ প্রদান অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু ভাষা আন্দোলন শুরু করেছিলেন এবং সেখানে তার অবদান আছে, এ কথাটা আমাদের অনেক জ্ঞানী-গুণী ও বুদ্ধিজীবীও মানতে রাজি হতেন না। তাদের কথা হলো, শেখ মুজিব তো জেলে ছিল সে আমাদের ভাষা আন্দোলন করল কীভাবে? জেলে তিনি গিয়ে ছিলেন কেন? এ ভাষা আন্দোলন যখন শুরু করল, প্রচার শুরু করল সেখানে তিনি বারবার গ্রেফতার হন। তারপর তার দীর্ঘ কারাবাস। এটাই দুর্ভাগ্য। শেখ মুজিব সারাটা জীবন এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য সংগ্রাম করেছেন। তিনি বলেন, একটা ভাষা একটা মানুষের পরিচয় এবং সেই পরিচয়টাই আমাদের সম্মান দেয়। জাতির পিতা তার আত্মজীবনীতে লিখেছেন- মাতৃভাষা আন্দোলনে পৃথিবীতে প্রথম বাঙালিরাই রক্ত দিল। দুনিয়ার কোথাও ভাষা আন্দোলন করার জন্য গুলি করে হত্যা করা হয়নি। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা, বাঙালিরাই প্রথম রক্ত দিয়ে মাতৃভাষার কথা বলে গেছে। জাতির পিতা শেখ মুজিব সারাটা জীবন এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য সংগ্রাম করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংগ্রামের পথ বেয়েই আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমাদের ইতিহাস আমাদের ঐতিহ্য আমরা রক্ষা করতে হবে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক যোগাযোগের জন্য অন্য ভাষা শিখতে হবে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী যারা আছেন তাদের ভাষাও যেন সংরক্ষণ করতে পারে সেজন্য আমরা বিনা পয়সায় বই ছাপিয়ে তাদের দেই। যেন তারা নিজেরা নিজেদের ভাষায় পড়তে পারে। ভাষার অধিকার রক্ষা করা, ভাষাকে সম্মান দেওয়া এবং পৃথিবীর হারিয়ে যাওয়া ভাষাগুলো সংরক্ষণ করার জন্য আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট আমি গড়ে তুলি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছিল। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট যখন আমরা গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেই এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করি তখন জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল কফি আনান আমার সঙ্গে ছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় ২০০১ সালে আমরা সরকারে আসতে পারিনি। তখন বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর এই ইনস্টিটিউটের নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছিল।

তিনি বলেন, আমরা দ্বিতীয়বার যখন সরকারে আসি তখন এটা নির্মাণকাজ সম্পন্ন করি। এখানে ভাষা জাদুঘর করা হয়েছে, সারাবিশ্বের হারিয়ে যাওয়া ভাষা এবং চলমান ভাষাগুলোর নমুনা এখানে রাখা, গবেষণা করা, ভাষার ইতিহাস সংগ্রহ করা, যারা শিক্ষা গ্রহণ করবে এবং গবেষণা করবে তারা যেন সুযোগ পায়, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। কাজেই আমি মনে করি, এটা বাংলাদেশের জন্য একটা সম্মানজনক প্রতিষ্ঠান। আন্তর্জাতিক পর্যায়েও অনেক কাজ হয়ে গেছে, ইউনেস্কো এটিকে দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে উন্নীত করেছে। এজন্য ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন