শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

শুষ্ক মৌসুমেও মেঘনায় ভাঙন

বিলীন ফসলিজমি, বাড়িঘর সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা

আমানত উল্যাহ, রামগতি (লক্ষ্মীপুর) থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

শুষ্ক মৌসুমেও মেঘনার তীব্র ভাঙনে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার কয়েকটি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে করালগ্রাসী মেঘনা গিলে খাচ্ছে ওইসব গ্রামের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা। ভাঙন কবলিত গ্রামগুলো হচ্ছে- আসলী পাড়া, রামগতি বাজার, রামদয়াল ও কমলনগর উপজেলার চরকালকিনি ইউনিয়নের নাছিরগঞ্জ ও হাজীগঞ্জ, সাহেবেরহাট ইউনিয়নের কাদির পন্ডিতেরহাট, চরফলকন ইউনিয়নের লুধুয়া ফলকন এবং পাটারীরহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ চরফলকন। বর্তমানে শুষ্ক মৌসুমেও ভাঙনের তীব্রতা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। এতে করে ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে ওইসব গ্রামের বাসিন্দাদের। যে কারণে এ শুষ্ক মৌসুমেই তারা ভাঙন রোধে প্রস্তাবিত প্রকল্পের অনুমোদনসহ অর্থ ছাড়ের দাবি জানান।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, শুষ্ক মৌসুমেও মেঘনা তীরবর্তী এলাকাগুলোতে তীব্র ভাঙন চলছে। ভাঙনের মুখে পড়ে নদীতে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি, বাড়িঘর, মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট ও পোল-কালভার্টসহ সরকারি- বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা। দীর্ঘ পাঁচ দশকে মেঘনার এ অব্যাহত ভাঙনে মতিরহাট, চরকাঁকড়া, কাদির পন্ডিতেরহাট, চরসামছুদ্দিন ও তালতলি, সাহেবেরহাট, হাজিগন্জ, চরজগবন্ধু, মাতব্বরনগর এবং চরফলকন ইউনিয়নের চরকটোরিয়া, চরকৃষ্ণপুর, মাতব্বরচর ও পাতারচর এবং পাটারীরহাট ইউনিয়নের উরিরচর, পশ্চিম চরফলকন ও ডিএস ফলকনসহ প্রায় ১৪ টি গ্রাম সম্পূর্ণ মেঘনার গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে করে ওইসব গ্রামগুলোসহ বর্তমানে ভাঙনকবলিত পাঁচটি গ্রামের প্রায় অর্ধলাখ মানুষ সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন।
গত ৫০ বছরের ভাঙনে মেঘনাগর্ভে বিলীন হয়েছে এসব এলাকার প্রায় ১৫ হাজার একর ফসলি জমি, সরকারি- বেসরকারি ১৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, আশ্রয়ণ কেন্দ্রের পাঁচটি কলোনি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এবং কয়েক কিলোমিটার কাঁচা-পাকা সড়কসহ অসংখ্য মসজিদ, বিভিন্ন স্থাপনা ও হাটবাজার।
স্থানীয়দের অভিমত, বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগে মেঘনার ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু না হলে এবং ভাঙন এভাবে অব্যাহত থাকলে আগামী দু’বছরের মধ্যে রামগতি-কমলনগর উপজেলার অনেক গুরুত্বপূর্ণ এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফারুক আহমেদ জানান, মেঘনার ভাঙনরোধে কমলনগর ও রামগতি উপজেলার তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজের নতুন ডিপিপি প্রস্তুত করা হয়েছে। বর্তমানে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে থাকা নতুন প্রস্তাবনাটি অনুমোদন হলে ভাঙনরোধে টেকসই বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আবদুল মান্নান জানান, দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে মেঘনার ভাঙনে রামগতি-কমলনগর উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ সর্বস্ব হারিয়েছেন। ভাঙন প্রতিরোধে ব্যক্তিগত অর্থে বাঁধ নির্মাণসহ তিনি বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেছেন। ২য় পর্যায়ে একটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। আশাকরি অল্প সময়ের মধ্যে এটি অনুমোদন হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন