কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার সোনাকান্দা দারুল হুদা দরবারে দুইদিন ব্যাপী ইছালে ছাওয়াব মাহ্ফিল শুরু হয়েছে। গতকাল বাদ জোহর কোরআন তেলাওয়াত, হামদ্, নাতে রাসুল (সা.) পরিবেশনের পর দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের মাধ্যমে বার্ষিক ইছালে ছাওয়াবের মাহফিল আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন দরবারের পীর ও বাংলাদেশ তা’লিমে হিযবুলাহ’র আমীর প্রিন্সিপাল আলহাজ মাওলানা মাহমুদুর রহমান। প্রিন্সিপাল আলহাজ মাওলানা মাহমুদুর রহমান বলেন, পৃথিবীর মানুষকে কল্যাণকর পথের সন্ধান দিতে যত নবী-রাসূলের আগমন হয়েছে তন্মধ্যে হযরত মুহাম্মদ (সা.)’ই একমাত্র নবী; যিনি বিশ্বব্যাপী মিশন ও ভিশন নিয়ে প্রেরিত হয়েছেন। আর হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনী যেভাবে চুলচেরা বিশ্লেষিত ও আলোচিত হয়েছে পৃথিবীতে আর কারো জীবনী এমনটি হয়নি। মুসলিম, অমুসলিম কোন গবেষক, আলোচক তার পবিত্র জীবন-জিন্দেগীর মধ্যে প্রাক নবুয়াত এবং নবুয়াত পরবর্তী কোন অংশেই মানুষের অকল্যাণ হয় কিংবা মানবতার অপমান হয় এরকম কোন কিছুই পাননি। সঙ্গত কারণে হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর যাবতীয় আচার-আচরণ আন্তর্জাতিক মানেরও অনেক উর্ধ্বে। আমরা যদি জীবনের সকল পর্যায়ে পথে-ঘাটে, মাঠে-প্রান্তরে, সমাজে-সংসারে, অফিসে-আদালতে অর্থাৎ জীবনের সর্বক্ষেত্রে তাঁর অনুসরণ করি তাহলে আর কোন দুঃখ-দুর্দশা অভাব-অভিযোগ, অনুযোগ, মান-অভিমান, অন্যায়-অশান্তি ইত্যাদি কোন কিছুই থাকবে না। এ গ্যারান্টি স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে বর্ণনা করেছেন। বর্তমান সময়ের কোভিড-১৯ মহমারি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মহান আল্লাহর দরবারে তওবা করে ফিরে আসতে হবে। তওবা না করলে সামনের দিনগুলোতে আরো কঠিনতম ও ভয়াবহ সমস্যা আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। বাদ মাগরিব সোনাকান্দা দারুল হুদা দরবারের পীর প্রিন্সিপাল আলহাজ মাওলানা মাহমুদুর রহমান কর্তৃক পেশকৃত চার তরিকার গুরত্বপূর্ণ জিকিরের তালীম ও তাহাজ্জু প্রদান করেন। এতে সারা দেশ থেকে আগত লাখ লাখ আশিকীন, যাকেরীন, মুহিব্বীন ও খলিফাবৃন্দসহ দেশ-বিদেশের অসংখ্য ওলামায়ে কেরাম, পীর-মাশায়েখগণ উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ তা’লিমে হিযবুল্লাহ’র কেন্দ্রীয় মহাসচিব শায়খুল হাদিস মাওলানা মোতালেব হোসাইন সালেহীর উপস্থাপনায় এতে বক্তব্য রাখেন সোনাকান্দা দারুল হুদা দরবারের খলিফা আবুবকর সিদ্দিক প্রমুখ।
পুরো মাহফিলকে নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরাসহ স্থানীয় প্রশাসন ও মাদরাসার একদল প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত চৌকস ছাত্রবৃন্দ স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছে। মাহফিলকে কেন্দ্র করে আশ-পাশের এলাকাগুলো ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আনন্দঘন পরিবেশ লক্ষ্য করা গেছে।
আজ মাহফিলে দেশ-বিদেশের বরেণ্য পীর-মাশায়েখগণ, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক নেতৃবৃন্দসহ ভক্তবৃন্দের সমাগম হবার সম্ভাবনা রয়েছে। সোামবার বাদ ফজর তালিম, যিকির-আযকার ছওয়াব রেছানি শেষে বাংলাদেশ ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি-সমৃদ্ধি কামনা করে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দুইদিন ব্যাপী বার্ষিক ইছালে ছাওয়াব মাহফিল শেষ হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন