শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

অর্থ সংকটে ২শ’৮৭ জন শিক্ষক ১৪ মাস ধরে ‘স্কিলস ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের’ শিক্ষকদের বেতন ভাতা বন্ধ

প্রকাশের সময় : ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে : শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতায় ‘স্কিলস ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের’ (এসডিপি) ২শ’৮৭ জন শিক্ষকদের ১৪ মাস ধরে বেতন ভাতা বন্ধ। তারা নিয়মিত ক্লাশ কার্যক্রমের পাশাপাশি শিক্ষা কার্যক্রমের সব শাখায় সময় দিলেও তাদের ভাগ্যের চাকা ঘুরছে উল্টো পথে। প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হওয়ার সাথে সাথে তাদের মাসিক বেতনসহ অন্যান্য সকল সুযোগ-সুবিধা বন্ধ হয়ে যায়। এরপরেও ওই প্রকল্পের আওতায় নিয়োগকৃত শিক্ষকরা মহাপরিচালকের নির্দেশে অদ্যাবধি সকল কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। দীর্ঘ দিন তাদের বেতন-ভাতা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেশিরভাগ শিক্ষক অর্থসংকটের মধ্যে পড়েছে। ওই শিক্ষকগণ তাদের বকেয়া বেতন-ভাতা প্রদানসহ চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরসমূহে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।
স্মরাকলিপি সূত্রে জানা যায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতায় ‘স্কিলস ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের’ (এসডিপি) মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশে দেশের ৬৪টি সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজসমূহে প্রতি ইউনিটে ৫ জন করে মোট ৩শ’২০ জন শিক্ষক (ইন্সট্রাক্টর ও জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর) নিয়োগ দেয়া হয়। এদের মধ্যে পরবর্তীতে কিছুসংখ্যক শিক্ষক চাকরি ছেড়ে দিয়ে অন্য কোন চাকরিতে জয়েন করায় সর্ব শেষ ২শ’৮৭ জন শিক্ষক থেকে যায়। প্রকল্পটি ৩০শে জুন, ২০১৫ ইং সালে শেষ হয়। এতে ওই মাস থেকেই মাসিক ভাতাসহ সকল সুযোগ-সুবিধা বন্ধ হয়ে যায়। এর পরেও স্কিলস ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় নিয়োগকৃত শিক্ষকগণ কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয়ের নির্দেশে অদ্যবধি ১৪ মাস যাবৎ বেতন-ভাতা ছাড়াই (১ম ও ২য় শিফট) এ, পাঠদান ও শ্রেণী কার্যক্রমে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে আসছেন।
স্মারকলিপিতে তারা তাদের বকেয়া বেতন প্রদানসহ চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। আগস্টের ২৪ তারিখে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর স্মরকলিপি গ্রহণ করেন ভোকেশনাল পরিচালক মিজানুর রহমান, সহকারি পরিচালক (পরিকল্পনা) জাহাঙ্গীর আলমসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ। এরপর তারা সেখানে দাঁড়িয়ে মানববন্ধনও করেন। মানববন্ধনের সারা দেশ থেকে আসা ২শ’৫০ জনের বেশি শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন।
এদিকে খÐকালীন এসব শিক্ষকদের যাবতীয় বেতন-ভাতা প্রদানের জন্য কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিতভাবে আবেদ করেছেন রংপুর সরকারি পলিটেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন, নীলফামারী সরকারি পলিটেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ অরবিন্দু কুমার। এছাড়াও গাইবান্ধা, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ, লালমনিরহাট, ঠাকুর গাঁওসহ উত্তরাঞ্চলের প্রায় প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ এসব শিক্ষদের জন্য বেতন-ভাতা প্রদানের অনুরোধ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টদের কাছে।
সারাদেশ থেকে প্রাপ্ত এসব চিঠির প্রেক্ষিতে অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বাজেট ও ব্যয় নিয়ন্ত্রণ) এর সভাপতিত্বে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর ও অর্থ বিভাগের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি সভা হয়। ওই সভায় এসএসসি ও এইচএসসি ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটসমূহে প্রয়োজনীয় নিরিখে যথাযথ প্রক্রিয়ায় পদ সৃজনের ব্যবস্থাসহ দেশের ৬৪ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগকৃত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রদানের উপায় বের করার জন্য প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে অনুরোধ করা হয়। এতো কিছুর পরেও খÐকালীন ওই সব শিক্ষকগণ আশার আলো দেখছেন না। এদের অনেকের সরকারি চাকরির বয়সসীমা পার হওয়ায় হতাশায় পড়েছেন। কথা হয় শিক্ষক শাহিন আলম, শহিদুল্লাহ, বদরুজ্জামান, শামছুল কবীর, জাহাঙ্গীর আলম, তাছকিয়া, মো: রাকিব জানান বেতন-ভাতা বন্ধ হয়ে যাওয়া তাদের সামনে নেমে এসেছে চরম হতাশা।
এসডিপি চিচার্স ফোরামের সভাপতি মুহাম্মদ সামছুদ্দীন সেক্রেটারী রেদওয়ান চৌধুরী জানান, এসডিপির শিক্ষকদের নিরলস পরিশ্রমের ফলে অন্য যে কোন সময়ের তুলনায় ভালো ফলাফল করেছে ভোকেশনাল সেক্টর। প্রতিদিন দুই সিফটে কাজ করেও ১৪ মাসের বেতন-ভাতা এসব শিক্ষকদের কেউ পায়নি। অপরদিকে ভোকেশনাল সেক্টরে বর্তমানে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শিক্ষক সংকটে আছে। তাদের অভিযোগ শিক্ষক সংকটের পরেও তাদের চূড়ান্ত নিয়োগ দিচ্ছে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন