শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি

প্রকাশের সময় : ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : খাদ্য নিরাপত্তার জন্য হুমকি, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিধ্বংসী প্রাণঘাতী তামাকের চাষ নিয়ন্ত্রণ জরুরি। আগামী দিনে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও নানাবিধ কারণে খাদ্য উৎপাদনযোগ্য কৃষিজমির পরিমাণ কমতে থাকায় খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে খাদ্য উৎপাদনযোগ্য কৃষিজমিতে তামাক চাষের আগ্রাসন ও ক্রমবর্ধমান হার খাদ্যঘাটতি ত্বরান্বিত করবে। অথচ তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণে নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত এবং বিলম্বিত হচ্ছে। এজন্য তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণে সরকারকে দ্রæত পদক্ষেপ নিতে হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট আয়োজিত এক অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা এসব কথা বলেন। প্রত্যাশা মাদকবিরোধী সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল হেলাল আহমেদের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন মাদক ও নেশাবিরোধী কাউন্সিলের (মানবিক) উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম মিলন, ডবিøউবিবি ট্রাস্টের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান, এইড ফাউন্ডেশনের প্রকল্প কর্মকর্তা রেজা আহমেদ, টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেল’র সহকারী গবেষক ফারহানা জামান লিজা, প্রদেশের নির্বাহী পরিচালক অনাদী কুমার মন্ডল, বাংলাদেশ দুস্থ নারী ও শিশুকল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান আঁখি আক্তার প্রমুখ। অবস্থান কর্মসূচি সঞ্চালনা করেন ডবিøউবিবি ট্রাস্টের সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা আবু রায়হান।
রফিকুল ইসলাম মিলন বলেন, সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণে আইন প্রণয়ন, সংশোধনসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। যা অত্যন্ত ইতিবাচক। বর্তমানে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে হলে সরকারের সুনির্দিষ্ট কিছু নীতিমালা প্রয়োজন। আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণে অনেক নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলেও তা বাস্তবায়নে কৃষি মন্ত্রণালয় ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা নেই। বাংলাদেশে কৃষিজমিসহ অন্যান্য জমিতে তামাক চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা একটি দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক এবং উদ্বেগজনক।
হেলাল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ জনবহুল ও ছোট রাষ্ট্র হওয়া সত্তে¡ও খাদ্যশস্য উৎপাদনে শীর্ষ পর্যায়ে অবস্থান করছে। খাদ্য ও কৃষিপণ্য উৎপাদনে এ ধরনের সম্মানজনক অবস্থানের পরও একদল কুচক্রী দেশের এ অর্জনকে ধ্বংস করতে দেশে তামাক চাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করেছে। এ ধরনের অপতৎপরতা দেশের খাদ্যনিরাপত্তাকে মারাত্মক ঝুঁকিতে ফেলছে।
আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা অনুসারে বলা যায়, কৃষি এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে তামাক কোম্পানিগুলোর অবৈধ প্রভাব বিস্তার ও সুযোগ সুবিধা প্রদান এর অন্যতম কারণ। জনস্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিয়ে দেশের স্বার্থে সম্মিলিতভাবে এধরনের অপচেষ্টায় লিপ্তদের প্রতিহত করতে হবে।
সৈয়দা অনন্যা রহমান বলেন, তামাকজাত দ্রব্যের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে জনগণকে রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করতে হলে তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা এবং চাষ নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা দ্রæত প্রণয়ন করতে হবে। তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে মুনাফালোভী তামাক কোম্পানির প্রভাব থেকে মুক্ত রাখতে আন্তর্জাতিক চুক্তি এফসিটিসি-এর আর্টিক্যাল ৫ দশমিক ৩ সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং এবিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোর এগিয়ে আসতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, কৃষি বিভাগের অনেক কর্মকর্তা অদৃশ্য কারণে তামাক নিয়ন্ত্রণের বিরোধিতা করছে।
তামাক নিয়ন্ত্রণে কৃষি বিভাগের কোনো ধরনের জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ না করা এবং তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা প্রদান না করায় সরকারের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। কর্মসূচিতে তামাকবিরোধী নারী জোট (তাবিনাজ), এলআরবি ফাউন্ডেশনসহ অন্যান্য তামাকবিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন