নানা ইস্যুতে সম্প্রতি সময় গণমাধ্যমের বারবার নাম আসা ফরিদপুরের আলোচিত দুই ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেল ও সাজ্জাদ হোসেন বরকত ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবি করেছে পরিবার। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, রুবেল-বরকতের নামে ২০০০ কোটি টাকার মানি লণ্ডারিং মামলা সম্পূর্ণভাবে ভিত্তিহীন এবং ষড়যন্ত্রমূলক। এখন পর্যন্ত দায়ের করা ভিন্ন মামলায় রিমাণ্ডে এনে জোর পূর্বক ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে। এমন কি বাচ্চু রাজাকার নামে তাদের কোন আত্মীয়ও নেই।
আজ শনিবার রাজধানীর ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্র্যাব) অডিটোরিয়ামে পরিবারে পক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব দাবি করা হয়। পরিবারের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন ইমতিয়াজ হাসান রুবেল কন্যা যাওয়াতা আফনান রাদিয়া। রুবেল ও বরকতকে ষড়যন্ত্রমূলক মানিলণ্ডারিং মামলায় জড়ানো হয়েছে দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আব্বু এবং কাকার বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে একের পর এক আঘাত করা হচ্ছে। সেটা যদি না হতো তদন্তকারী সংস্থাগুলোর বক্তব্যে এমন বৈপরীত্য কেন? অপ্রদর্শিত আয়ের একই মামলা সিআইডি করলো ২০০০ কোটি টাকার আর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) করলো ৭২ কোটি টাকার। জোর করে নির্যাতনের মুখে রুবেল-বরকতের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী নেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলন থেকে দাবি করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে
রাদিয়া বলেন, আমার আব্বু এবং কাকার লাইসেন্সকৃত ৪টি আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। এরপরও তারা কেন অবৈধ অস্ত্র রাখবেন? ৭ জুন গ্রেফতারের আগে তাদের নামে কোন মামলাও ছিলো না। আব্বু এবং কাকাকে মোট ২৭ দিন রিমাণ্ডে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। নির্যাতন সইতে না পেরে কাকা কার্টে নিজের শরীরে নিজে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান।
গ্রেফতার নিয়েও ছিলো অনেক লুকোচুরি এমন দাবি করে রাদিয়া বলেন, গতবছর জুনে যখন সারা দেশে করোনা মহামারি সর্বোচ্চ পর্যায়, তখন ৭ তারিখ আব্বু এবং কাকাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর ফরিদপুর জেলা পুলিশ সুপার সাংবাদ সম্মেলনে জানালেন, বদরপুর থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। গতবছর জুনের ৯ তারিখের সকল পত্রিকায় তা প্রকাশও করা হয়। কিন্তু অস্ত্র মামলার এজাহারে বলা হচ্ছে তাদের বাইপাস এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে! তাহলে তাদের গ্রেফতার করা হলো কোথা থেকে? রাদিয়া তার বাবা এবং চাচাকে গ্রেফতার থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত চলা প্রতিটি ঘটনাকে ষড়যন্ত্রে অংশ বলে দাবি করেন।
রাদিয়া তার পরিবারের রাজনৈতিক আদর্শের কথা তুলে ধরে বলেন, আমার বাবা সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। চাচা (বরকত) ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। এখন বলার চেষ্টা করা হচ্ছে আব্বু এবং কাকা আওয়ামী লীগের হাইব্রিড নেতা। আমার দাদা মরহুম আব্দুস ছালাম মন্ডল ফরিদপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতিও ছিলেন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে আমার দাদার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূক রাজনৈতিক মামলা করা হয়। ওই মামলায় তাকে তিন মাস কারাবাসও করতে হয়। বাচ্চু রাজাকার সংশ্লিষ্টতা সম্পূর্ণ ভুয়া বলে দাবি করেন রুবেলের মেয়ে। ১৯৭১ সালে যখন মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলো, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ফরিদপুরে সর্বপ্রথম আমার দাদার বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার নামে আমাদের কোনো আত্মীয় নেই।
এছাড়া, পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে এসময় গণমাধ্যমে প্রচার হওয়া রুবেল-বরকতের ৫ হাজার ৭০৬ বিঘা জমির যে প্রতিবেদন প্রচার হয়েছে তা অসত্য এবং রুবেল ও বরকতের সম্পদ- আয়ের বিবরণ উপস্থাপন করা হয়। এসময় রুবেল ও বরকতের সকল সম্পদই বৈধ বলে দাবি করে পরিবার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন