ব্রাহ্মণবাড়িয়া আশুগঞ্জে একদিকে মেঘনার পাড়ে উচ্ছেদ অভিযান অন্যদিকে নতুন করে দখলে নেমেছে প্রভাবশালীরা। এ অবস্থায় মেঘনার পাড়ে উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে নদী রক্ষা আন্দোলনের সাথে সংশ্লিষ্টরা।
এলাকাবাসীসহ সংশ্লিষ্টরা জানান, আশুগঞ্জ নৌবন্দর ঘোষণার পর দীর্ঘ এক দশক পর গত ২৪ ও ২৫ জানুয়ারি উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিওটিএ)। অভিযানের এক মাস না যেতেই আশুগঞ্জ লঞ্চঘাট এলাকায় নতুন করে ইট আর বালি দিয়ে মেঘনা বক্ষে প্রায় ৭ শতাংশ নদীর জায়গা দখল করছে আক্তারুজ্জামানের পরিবারের সদস্যরা। নদী ভরাটকারীদের দাবি এটি তাদের পৈত্রিক সম্পতি। অন্যদিকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিওটিএ) বলছেন এটা নদীর তীর এবং নদীর জায়গা। তারা অবৈধ ভাবে প্রভাবখাটিয়ে মেঘনা নদীর পাড় ভরাট করছেন। এ অবস্থায় অবৈধ বালিভরাটের কাজ সরেজমিনে গিয়ে বন্ধ করে দেয় বিআইডব্লিওটিএ কর্তৃপক্ষ।
দখলদার ও নদী ভরাটকারী আক্তারুজ্জামানের ছেলে মো. সাইমন মিয়া জানান, নদীর পাড়ের যে জায়গাটি ভরাট করা হচ্ছে তার সম্পূর্ণ কাগজপত্র আমাদের কাছে আছে। দলিল পত্রের উপর ভিত্তি করে আমরা আমাদের জায়গা ভরাট করছি। তবে যেহেতু এর পাশে বিআইডব্লিওটিএ জায়গা আছে তাদেরকে জানানো আমাদের প্রয়োজন ছিল। আমরা আমাদের কাগজপত্র নিয়ে বিআইডব্লিওটি এর কাছে যাব। তবে যে জায়গাটি ভরাট করা হচ্ছে সেটি পৈত্রিক বলে দাবি করেন মো. সাইমন।
আশুগঞ্জ-ভৈরব নৌবন্দর পরিদর্শক জসিম উদ্দিন জানান, নদী আইন অনুযায়ী আমরা অভিযান পরিচালনা করে ছিলাম। নৌবন্দর পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর জায়গা মাপ করে অভিযান পরিচালনা করেছি। এরপরেও দেখা যাচ্ছে কিছু লোক অনুমতি ছাড়া কোনো নিয়ম কানুন না মেনেই অবৈধভাবে মেঘনা নদীর জায়গা ভরাট করছে। তিনি জানান, নতুন ভরাটকৃত জায়গা পরির্দশনে এসে দেখা যাচ্ছে অবৈধভাবে প্রভাব দেখিয়ে মেঘনার জায়গা ভরাট করছে একটি প্রভাবশালী মহল। আমরা তাদের কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। তাদের কাজগপত্র যাচাই বাচাইয়ের জন্য সুযোগ দেয়া হবে। আমাদের বাঁধা অমান্য করলে আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদেক্ষপ গ্রহণ করা হবে। নদী ভরাট সম্পর্কে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নদী নিরাপত্তা বিষয়ক সামাজিক সংগঠন নোঙরের সভাপতি শামীম আহমেদ জানান, যে জায়গাটি ভরাট করা হচ্ছে আমাদের দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে সেটি নদীর জায়গা।
নদীর প্লাবন ভূমি এটি। বিআইডব্লিওটিএ যে অভিযান করেছে সেটি যদি সঠিক হয় তাহলে যে জায়গাটি ভরাট করা হচ্ছে সেটি অবৈধভাবে করা হচ্ছে। আর যদি এই জায়গা ভরাটটি বৈধ হয়ে থাকে তাহলে বিআইডব্লিওটিএ অভিযানটি অবৈধ। এখানে প্রশ্ন থেকে যায় যে, অভিযানের পদক্ষেপটি সঠিক ছিল কিনা। গত কয়েক দিন আগে অভিযানের পর আবার ভরাটের বিষয়টি প্রভাবশালীদের বিষয়ে নতুন করে ভাববার সময় এসেছে। বিষয়টি বিআইডব্লিওটিএ কর্তৃপক্ষকে আরো কঠোর হতে হবে। অন্যথায় নদী দখল আর উচ্ছেদের খেলা অব্যাহত থাকবে। তিনি নদীর জায়গা নদী যেন ফিরে পায় সে বিষয়টি নিশ্চিত করার আহবান জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন