মহান সৃষ্টিকর্তার দেয়া আমাদের দেশি ফল-ফলাদির মধ্যে আমলকি অন্যতম। ভেষজ শাস্ত্রে আমলকির মতো গুণ আছে এমন ফল বিরল। তাই এটাকে অনেকেই ফলের রাজাও বলে থাকেন। আমলকি দেখতে ছোট হলেও এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি। পুষ্টি বিজ্ঞানী ও ভেষজবিদদের গবেষণায় ১টি আমলকিতে ৩টি পেঁয়ারা ও ১০টি কাগজি লেবুর চেয়ে বেশি ভিটামিন সি রয়েছে। ১টি আমলকিতে ১৫ থেকে ২০টি কমলার চেয়ে বেশি গুণ, ১২০টি আপেলের চেয়ে বেশি গুণ, ২৪টি আমের চেয়ে বেশি গুণ এবং ৬০টি কলার চেয়ে বেশি গুণ বা ভিটামিন সি রয়েছে। প্রতিটি মানুষ নিত্যদিন অন্তত একটি আমলকি খাওয়ার অভ্যাস করা দরকার। ফলে প্রকৃতিক এ ফলের মধ্যে যেমনি রয়েছে ভিটামিন সি, তেমনি রয়েছে এর ঔষধি গুণ। আমলকি এমন একটি ফল যার মধ্যে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বলতে কিছু নেই। এ ফলটি খেলে শরীরের মধ্যে বিভিন্ন ভাবে গড়ে উঠা রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতা অবশ্যই বৃদ্ধি পাবে। কারণ এটি মহান আল্লাহর সৃষ্টি মানব জাতির উপকারে সৃজিত অসংখ্য নেয়ামত রাজির মধ্যে ছোট ও অন্যতম। এ ফলটি গ্রীষ্মকালীন হলেও বর্তমানে তা বছরের প্রায় সময় ফলে থাকে। এবার জেনে নেয়া যাক আমলকির অসংখ্য গুণাবলীর মধ্যে কিছু জীবন্ত গুণাগুণ ও উপকারিতা-
আমলকি শরীরে ভিটামিন সি এর ঘাটতি মেটায়। ভিটামিন সি এর অভাবে যেসব রোগ হয়, যেমন : স্কার্ভি, মেয়েদের লিউকরিয়া, অর্শ্ব প্রভৃতি ক্ষেত্রে আমলকি ভালো কাজ করে। আমলকি হার্টের রোগীর ধড়ফড়ানি কমতে সাহায্য করে। তাজা আমলকি তৃষ্ণা মেটায়, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া বন্ধ করে এবং পেট পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। আমলকি খেলে মুখে রুচি আসে, খিদে বাড়ায় এবং শরীর ঠা-া রাখে। এছাড়া পেটের পীড়া, সর্দি, কাশি ও রক্তহীনতার জন্যও খুবই উপকারী। পিত্ত সংক্রান্ত যে কোনো রোগে সামান্য মধু মিশিয়ে আমলকি খেলেও যথেষ্ট উপকার পাওয়া যায়। বমি বমি ভাব অথবা বারবার বমি হলে শুকনো আমলকি এককাপ পানিতে ভিজিয়ে ঘণ্টা দুয়েক পরে সেই পানিতে একটু শ্বেত চন্দন ও চিনি মিশিয়ে খেলে বমি বন্ধ হয়। নিয়মিত আমলকি খেলে চোখের দৃষ্টিশক্তি অটুট থাকে। বিভিন্ন ধরনের তেল তৈরিতেও আমলকি ব্যবহার হয়ে থাকে। আমলকি থেকে তৈরি তেল মাথায় ব্যবহারে মাথা ঠা-া রাখে। কাঁচা বা শুকনো আমলকি বেটে একটু মাখন মিশিয়ে মাথায় লাগালে খুব তাড়াতাড়ি ঘুম আসে। কাঁচা আমলকি বেটে রস প্রতিদিন চুলে লাগিয়ে দু-তিন ঘণ্টা রাখলে এবং এভাবে একমাস মাথায় মাখলে চুলের গোড়া শক্ত, চুল উঠা এবং অল্প বয়সে চুল পাকা বন্ধ হবে। এভাবে ছোট এ ফলটির মধ্যে আরো জানা-অজানা বহু উপকারিতা রয়েছে। প্রতিটি মানুষ ছোট-বড় সবাই অনায়াসে আমলকির ব্যবহারে অব্যস্ত হয়ে অনেক কঠিন ও জটিল রোগ থেকে আরোগ্য লাভে সুখি হতে পারেন। আল্লাহর দেয়া নেয়ামতের যথাযথ ব্যবহারে আমাদের শান্তি লাভে ধন্য হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমীন।
ষ কাজী এম এস এমরান কাদেরী।
সাংবাদিক, কলামিস্ট।
বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম।
ধসৎধহশধফবৎর@মসধরষ.পড়স
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন