গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধন করেছে এবং উন্নয়নের বিস্ময়ে পরিণত হয়েছে। গত শুক্রবার জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন আয়োজিত বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব উদযাপন অনুষ্ঠানে একথা বলেন জাতিসংঘের প্রতিনিধি, অন্যান্য মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা। জাতিসংঘ সদর দফতরের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি, সদস্য রাষ্ট্রসমূহের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত, জাতিসংঘের সংস্থাসমূহ ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিসহ বিপুল সংখ্যক বিদেশী কূটনীতিকের উপস্থিতিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান কোভিড-১৯ এর কারণে ভার্চুয়ালভাবে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটির মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পর্ব ও র্যাফেল ড্র গোটা আয়োজনে একটি ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। মিশনের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
স্বাগত ভাষণে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, জাতির পিতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালী জাতি মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাদের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে পেয়েছি স্বাধীনতা। ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী ভাষণের কথা স্মরণ করে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, এই ভাষণই পরবর্তীতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির গতিপথ নির্ধারণ করেছিল। ভাষণটিতে জাতিসংঘকে মানুষের সকল ভবিষ্যত আশা-আকাঙ্খা, নির্ভরতা ও বিশ্বাসের কেন্দ্রস্থল হিসেবে তুলে ধরা হয়েছিল।
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্রæত বর্ধমান অর্থনীতির একটি দেশে উন্নীত হয়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এই অর্জনের মাধ্যমে সমগ্র জাতির বহুদিনের কাঙ্খিত স্বপ্ন পূর্ণ হলো।
গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশ যে বিস্ময়কর অগ্রগতি সাধন করেছে তা প্রদত্ত ভিডিও বার্তায় উল্লেখ করেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ। সামাজিক উন্নয়ন, দুর্যোগ প্রস্তুতি ও মোকাবিলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্যের কথা উল্লেখ করেন মহাসচিব। বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মানবিক আশ্রয় প্রদান এবং ক্লাইমেট ভারণারেবল ফোরামের সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশের ভ‚মিকার প্রশংসা করেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
বহুপাক্ষিকতাবাদ, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা, শান্তির সংস্কৃতি এজেন্ডা এবং মানবিকতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অসামান্য অবদানের কথা তুলে ধরেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি ভলকান বজকির। বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দানের জন্য তিনিও বাংলাদেশের উদারতার প্রশংসা করেন। এছাড়া এসডিজি অর্জনে বাংলাদেশের সাফল্যের কথাও উল্লেখ করেন সাধারণ পরিষদ সভাপতি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- জাতিসংঘে নিযুক্ত মরক্কো, আয়ারল্যান্ড, বারবাডোস, ব্রুনেই দারুসসালাম, ওমান, সিয়েরা লিওন, জাপান, ভারত ও সউদী আরবের স্থায়ী প্রতিনিধি, জাতিসংঘের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল, ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক এবং ইউএনডিপির প্রশাসক। এর আগে সকালে, জাতিসংঘ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। সকালের পর্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের পবিত্র আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এরপর দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন