শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাকদ্রব্যের ব্যবহার কমানো জরুরি- আলোচনা সভায় বক্তারা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০২১, ৮:৫৬ পিএম

বাংলাদেশে জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও তামাকজনিত আর্থিক ক্ষতি রোধের অন্যতম প্রধান উপায় তামাকের ব্যবহার কমিয়ে আনা। কিন্তু তামাকদ্রব্যের সহজলভ্যতা এক্ষেত্রে বড়ো একটি বাধা। তাই তামাকের ব্যবহার কমাতে এর মূল্য বাড়িয়ে সহজলভ্যতা কমানোর বিকল্প নেই। বুধবার (৩১ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও আর্থিক ক্ষতি মোকাবেলায় তামাক নিয়ন্ত্রণ : গণমাধ্যমের কাছে প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাবো ফ্রি কিডসের সহযোগিতায় ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টারস ফোরাম যৌথভাবে আলোচনা সভার আয়োজন করে।

সভায় বক্তারা বলেন, নিম্নস্তরে সিগারেটের দাম বাড়ানো হলে স্বল্প আয়ের মানুষ ধূমপান ছাড়তে উৎসাহিত হবে। দাম বাড়লে কিশোর-তরুণরা ধূমপান ও তামাক ব্যবহার শুরু করতে নিরুৎসাহিত হবে। তাছাড়া করা বাড়ানো হলে সরকারের রাজস্ব আয় উল্লেযোগ্য হারে বাড়বে।

সভায় ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ক্লিনিকাল রেজিষ্ট্রার (রিসার্চ) ডা. শেখ মোহাম্মদ মাহবুবুস সোবহান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, টোব্যাকো অ্যাটলাস অনুসারে, বাংলাদেশে প্রতিবছর তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে ১ লাখ ৬৬ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়। ২০১৮ সালের অপর এক গবেষণায় দেখা গেছে, বছরে তামাকজনিত রোগের চিকিৎসা ব্যয় ও উৎপাদনশীলতার ক্ষতি হয় ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি।

মূল প্রবন্ধে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে সিগারেটের ক্ষেত্রে সকল ব্রান্ডে অভিন্ন করভারসহ (সম্পূরক শুল্ক চ‚ড়ান্ত খুচরা মূল্যের ৬৫ শতাংশ শুল্ক প্রচলন করার প্রস্তাব করা হয়। সেখানে নিম্নস্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৫০ টাকা নির্ধারণ করে ৩২ দশমিক ৫০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পুরক শুল্ক আরোপ করা এবং মধ্যম স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৭০ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫ দশমিক ৫০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি উচ্চ স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১১০ টাকা নির্ধারণ করে ৭১ দশমিক ৫০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক করা এবং প্রিমিয়াম স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১৪০ টাকা খুচরা মূল্য নির্ধারণ করে ৯১ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার কথা বলা হয়। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত কর কাঠামো বাস্তবায়ন করা হলে প্রায় ১১ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ী ধূমপান ছেড়ে দিতে উৎসাহিত হবে এবং ৮ লক্ষাধিক তরুণ ধূমপান শুরু করতে নিরুৎসাহিত হবে। দীর্ঘমেয়াদে ৩ লাখ ৯০ হাজার বর্তমান ধূমপায়ী এবং ৪ লাখ তরুণের অকাল মৃত্যুরোধ করা সম্ভব হবে।

সভায় ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির পরামর্শক শরফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, তামাকদ্রব্যের সহজলভ্যতা হ্রাস করতে মূল্যস্ফীতি এবং আয় বৃদ্ধির সাথে সঙ্গতি রেখে দাম বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা ও ধোঁয়াবিহীন তামাকের খুচরা বিক্রি নিষিদ্ধ করতে হবে। সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টারস ফোরামের সভাপতি তৌফিক মারুফ ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ রাব্বি। তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে শক্তিশালী করতে গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দেন তারা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন