ডাকাত চক্রটি গত কয়েক বছর ধরে ঢাকার আশেপাশের জেলাগুলোতে প্রবাসীদের বাসা-বাড়িতে অভিনব কৌশলে ডাকাতি করে আসছিলো। চক্রটির সদস্যরা ডাকাতির আগে ও পরে বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করত। এই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গত বুধবার রাতে রাজধানীর খিলগাঁও ও শাহজাহানপুর এলেকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- রুবেল ফরাজী ওরফে রিফাত হাওলাদার (২৮), সোহাগ শেখ ওরফে রুবেল ও মো. সোহেল (২৪)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির সময় হাফ প্যান্ট, গেঞ্জি, গ্রীল ভাঙার যন্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। গতকাল সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন।
তিনি বলেন, ডাকাত চক্রটি গত কয়েক বছর ধরে ঢাকার আশেপাশের জেলাগুলোতে প্রবাসীদের বাসা-বাড়িতে অভিনব কৌশলে ডাকাতি করে আসছিলো। এই ডাকাত চক্রের সদস্যরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য মোবাইল সিমের পরিবর্তে বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করতো। এছাড়া তারা বাসা-বাড়ির গ্রীল ও জানালা কেটে মুখে মাস্ক ও হাতে গ্ল্যাভস পরে ঘরে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বর্ণালংকার ও টাকা ডাকাতি করতো। ডাকাতির কোনো ছাপ যাতে না থাকে মূলত সেজন্যই তারা ভারতীয় সিরিয়াল সিআইডি দেখে মাস্ক ও গ্ল্যাভস ব্যবহার করতো।
তিনি বলেন, ঢাকার দোহার, কেরানীগঞ্জ ও নবাবগঞ্জের অনেকেই প্রবাসে থাকে। মূলত প্রবাসীদের বাড়িতে টার্গেট করে ডাকাতি করত তারা। যাতে করে টাকা, স্বর্ণালংকার ও ডলার পাওয়া যায়। অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, গ্রেফতার রুবেল ফরাজী ওরফে রিফাত হাওলাদারের বিরুদ্ধে রংপুরের বিভিন্ন থানায় সাতটি মামলা রয়েছে। সোহাগ শেখ ওরফে রুবেল ঝালকাঠিতে অস্ত্র আইনে মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি এবং সোহেলের বিরুদ্ধে খুলনা, যশোর ও মৌলভীবাজারের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এই চক্রের একজন মূলহোতা রয়েছে। সে অনেক চতুর। কবে, কোথায়, কোন বাসায় ডাকাতি করতে হবে তিনিই মূলত নেতৃত্ব দিতেন। যাকে এখনও আমরা গ্রেফতার করতে পারিনি। তবে তাকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ডাকাতদের গ্রেফতারের বিষয়ে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর জানান, গত ৪ মার্চ রাত ৩টার দিকে সাত-আটজন ডাকাত কেরানীগঞ্জের রামেরকান্দা গ্রামে শাহবুদ্দিন ওরফে সাহার বাড়ির জানালার গ্রিল কেটে ভেতরে প্রবেশ করে দেশীয় ধারালো চাপাতি ও দা-এর ভয় দেখিয়ে ১১ লাখ টাকা, ৩০০ ইউএস ডলার ও ৩৩ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় মামলা হয়। ওই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এই অভিনব কৌশলে ডাকাত চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। চক্রটির বাকি সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন