শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

লকডাউনের প্রথম দিন

গণপরিবহন বন্ধ : অলিগলিতে মানুষের ভিড় : সিএনজি ও রিকশার ভাড়া দ্বিগুণ : ভোগান্তি

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৬ এপ্রিল, ২০২১, ১২:১৪ এএম

আন্তঃজেলা বাস-ট্রেন-লঞ্চ চলাচল বন্ধ। বন্ধ শপিংমল, দোকানপাট। চালু শিল্প-কারাখানা। সীমিত পরিসরে খোলা সরকারি-বেসরকারি অফিস। ঢাকার রাস্তা গণপরিবহন শূন্য। দাপট ব্যক্তিগত গাড়ি, রিকশা ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার। রাস্তায় রীতিমতো মানুষের ভিড়। কোথাও কোথাও হালকা যানজট। দোকানপাট খুলে দেয়ার দাবিতে চলছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলেছে বিক্ষোভও।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সামলাতে সাত দিনের জন্য জারি করা বিধিনিষেধ কার্যকরের প্রথম দিনে এমনই ছিল দৃশ্যপট। গণপরিবহন সংকটে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে কর্মজীবী মানুষকে। গণপরিবহন বন্ধের সুবাদে সিএনজি অটোরিকশা ও রিকশার বাড়ার দ্বিগুণ বা সময়ভেদে তারও বেশি হাঁকতে দ্বিধা করেনি চালকরা। ভাড়া নিয়ে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রায়েরবাগ এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন অফিস ও কর্মস্থলগামী মানুষ। পরে পুলিশ তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়। এরই মধ্যে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার থেকে রায়েরবাগ পর্যন্ত ভয়াবহ যানজটে আটকা পড়ে সহস্রাধিক গাড়ি। এদিকে, দোকানপাট খুলে দেয়ার দাবিতে ফের বিক্ষোভ হয়েছে ইসলামপুর ও নিউমার্কেট এলাকায়। ঢাকার বাইরেও কয়েকটি এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন ব্যবসায়ীরা।

গণপরিবহন না পেয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবরোধ করেন অফিস ও কর্মস্থলগামী মানুষ। এতে রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়। গতকাল সোমবার সকাল ৯টার দিকে তারা সড়কে অবস্থান নেন। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ এসে অবরোধকারীদের সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। অবরোধকারীরা বলেন, সরকারের নির্দেশনার কারণে প্রায় সকল কারখানা খোলা রয়েছে। কিন্তু শ্রমিক-কর্মচারীদের যাতায়াতের জন্য গাড়ির তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। এ অবস্থায় তাদের কর্মস্থল খোলা থাকলেও তারা পরিবহন সংকটে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না।

গতকাল বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নিত্যদিনের মতো মানুষের চলাচল নেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়। খোলা আছে পাড়া মহল্লার দোকান, ফেরি করে চলছে তরকারি-মাছ বিক্রি। অনেকেই ঘর থেকে বাইরে এসেছেন কিন্তু মুখে নেই মাস্ক। বরাবরের মতোই মাস্ক না পরার পেছনে নানা অজুহাত। কোনও কোনও এলাকায় দেখা গেছে চায়ের আড্ডাও। সরকারের নির্দেশনা অনুসারে কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। তবে পাড়া মহল্লায় সব ধরনের দোকানই খোলা ছিল। শুধু তাই নয়, চায়ের দোকানে আড্ডা ছিল আগের মতোই। আড্ডা দেয়া লোকজনের অনেকের মুখেই মাস্ক ছিল না। রাজধানীর মিরপুরের পীরেরবাগ ফেরি করে তরকারি বিক্রি করেন রহিম মিয়া। মুখে মাস্ক নেই কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাস্ক অনেকক্ষণ পরা ছিলাম। মুখ ঘামিয়ে যায়, মাত্র খুললাম। আবার পরবো, একটু পরেই। সরকারের নির্দেশনা অনুসারে, খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁয় কেবল খাদ্য বিক্রি ও সরবরাহ করা যাবে। কোনও অবস্থাতেই হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ করা যাবে না। তবে রাজধানীর অনেক এলাকায় হোটেল খোলা ছিল। হোটেলে বসে লোকজনকে খেতেও দেখা গেছে। রাজধানীর মিরপুর ১ এর দক্ষিণ বিশিল এলাকায় খোলা ছিল চায়ের দোকান। সেখানে চা খাচ্ছিলেন, মিথুন ও তার বন্ধুরা। জানালেন, ঘরে থেকে বিরক্ত লাগছে, তাই অল্প সময়ের জন্য বের হলাম। আবার ঘরে চলে যাবো। মোহাম্মদপুর, গ্রিনরোড, লালবাগ, হাজারীবাগ এলাকা ঘুরেও দেখা গেছে একই চিত্র। দোকানপাট খোলা, রয়েছে মানুষের চলাচল। কিছু মানুষ মাস্ক পরে বের হলেও অনেকেই এ ব্যাপারে উদাসীন। যদিও সরকার বলছে, আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে কোনও এলাকায় আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

লকডাউনের প্রথম দিনে রাজধানী থেকে ছাড়েনি কোনো আন্তঃজেলা বাস, লঞ্চ ও ট্রেন। ফাঁকা ছিল বাস টার্মিনালগুলো। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালেও কোনো যাত্রীর দেখা মেলেনি। কমলাপুর স্টেশনজুড়ে ছিল সুনসান নিরবতা। একদিন আগেও স্টেশনটি যাত্রীদের পদচারণায় ছিল মুখর। ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিল কর্তৃপক্ষ।
গতকাল সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, স্টেশনে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে দেশের এ প্রান্ত থেকে অপ্রান্ত পর্যন্ত ছুটে চলা ট্রেনগুলো। স্টেশনে যাত্রীদের পদচারণা নেই। নেই কোলাহল। নেই হকার ও কুলিদের বিকিকিনির চিৎকার চেঁচামেচি। কিছু পরিচ্ছন্ন কর্মী প্ল্যাটফর্ম ধোঁয়ামোছার কাজ করছেন। এছাড়াও রেল স্টেশনের নিরাপত্তায় দায়িত্ব নিয়োজিত আনসার সদস্যরা বিভিন্ন বুথে অবস্থান করছেন। কমলাপুর রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, লকডাউনের কারণে ৫ এপ্রিল সোমবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত সব ধরনের যাত্রীবাহী রেল চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে মালামাল ও তেল পরিবহনকারী কিছু রেল চলাচল করবে। তিনি বলেন, সকালে দুইটি কনটেইনার রেল কমলাপুর থেকে ছেড়ে গেছে চট্রগ্রামের উদ্দেশে। এরমধ্যে একটি সকাল ছয়টা ৫০ মিনিটে আরেকটি সকাল ১০ টা ১০ মিনিটে ট্রেন দুটি চট্রগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। তবে আজ ঢাকায় কোনো মালবাহী ট্রেন প্রবেশ করেনি।

লকডাউন আর বাড়বে কিনা জানা যাবে বৃহস্পতিবার
আগামী সোমবার পর্যন্ত চলমান লকডাউন আর বাড়বে কিনা এ সপ্তাহ দেখে বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকের ব্রিফিংয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ কথা জানান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমরা দেখি কী হয়। মানুষকে কো-অপারেট করতে হবে। আপনারা তো বার বার বলছেন। কিন্তু এখনো পুরোপুরি কো-অপারেশন। সবাই যদি মাস্ক ব্যবহার করে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে তাহলে তো অসুবিধা হওয়ার কথা না। তিনি বলেন, দেখি আমরা সাত দিন পর কী অবস্থা হয়। বৃহস্পতিবার আমরা রিভিউ করব ইনশাআল্লাহ। মানুষকে তো কো-অপারেট করতে হবে। আপনারা তো বলছেন সবাই যদি একটু মাস্ক পরে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে, তবে তো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যে প্রতিবেদন :
বরিশাল ব্যুরো জানায় : দেশব্যাপী সপ্তাহকালের লকডাউন দক্ষিনাঞ্চলেও শুরু হলেও তা এখনো কিছুটা ঢিলেঢালাভাবে পালিত হচ্ছে। প্রত্যুশে রাজধানী থেকে আসা নৌযনগুলো অন্তত ৫০ হাজার যাত্রী বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠী ও বরগুনাতে পৌছে দেয়ার পরে তাদের ঘরে পৌছার যানবাহন পেতে অনেকটাই হুড়োহুড়ি লেগে যায়। তবে বরিশাল মহানগরী সহ দক্ষিনাঞ্চলের সবগুলো শহরেই সকাল থেকেই সীমিতকারে রিক্সাসহ বিভিন্ন ধরনের থ্রী-হুইলার চলাচল অব্যাহত রয়েছে। বরিশাল-ফরিদপুর-ঢাকা, বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা, বরিশাল-গোপালগঞ্জ-খুলনা ও বরিশাল-পিরোজপুর-খুলনা ও বরিশাল-ভোলা মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস ও মিনিবাস চলাচল বন্ধ থাকলেও সিমিত কিছু থ্রী-হুইলার চলাচল করছে। তবে পণ্যবাহী সব যানবাহন চলছে।

নোয়াখালী ব্যুরো জানায় : লকডাউনের প্রথম দিনে নোয়াখালীতে রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে গেছে। ওষধের দোকান ও কয়েকটি মুদি দোকান ব্যতীত প্রায় সব দোনানপাট বন্ধ রয়েছে। সোমবার করেনায় ১১১জন আক্রান্ত হবার পর প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। লকডাউন কার্যকর করার জন্য ম্যাজিস্ট্রেটের কয়েকটি টিম তৎপর রয়েছে।

প্রশাসনের নির্দেশক্রমে কাাঁচাবাজার খোলা মাঠে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্পটে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। অফিস আদালতে উপস্থিতির হার কম। রাস্তায় গাড়ি চলছে না। করোনা বিস্তাররোধ এবং লকডাউন সম্পর্কে পৌরসভার উদ্যোগে জনসাধারণকে সচতেন করার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।

খুলনা ব্যুরো জানায় : ‘লকডাউন’ এর প্রথমদিন গতকাল সোমবার খুলনায় ঢিলেঢালাভাবে অতিবাহিত হয়েছে। নগরীর অধিকাংশ দোকানপাট খোলা ছিল। রাস্তায় বাস ট্রাক মিনিবাস মাহেন্দ্র ইজিবাইক রিক্সা সবই প্রায় অন্যান্য দিনের মতই চলাচল করেছে। যাত্রী বহনের ক্ষেত্রে মাহেন্দ্রা ও ইজিবাইকগুলোকে কোনো স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি।

দিনাজপুর অফিস জানায় : দোকান, অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার যানবাহন ট্রেন বিমান বন্ধ থাকলেও কাঁচা বাজার থেকে সিএনজিচালিত অটো রিক্সা চলাচল করছে স্বাভাবিকভাবে। অটোরিক্সা ও ব্যাক্তিগত যানবাহন চলাচলের কারনে সাধারন মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে। আগের মতই শহরের রাস্তাঘাটে যানজট লেগেই আছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রচারনা আর দুএকটি রেষ্টুরেন্টকে জরিমানা ছাড়া আর কোন তৎপরতা লক্ষ করা যায়নি। এদিকে সবকিছু প্রায় স্বাভাবিক রেখে কেবল ক্ষুদ্র দোকান বন্ধ রাখার স্বিদ্ধান্তে সাধারন ব্যবসায়ী ও খেটে খাওয়া মানুষদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

আদমদীঘি (বগুড়া) উপজেলা সংবাদদাতা জানায় : বগুড়ার সান্তাহারে সরকারের ঘোষনাকৃত আইন অমান্য করে লকডাইনের মধ্যে বড় মার্কেট এর দোকান, ট্রেন এবং বাস ছারা অবৈধ ট্রাক্টরসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করতে দেখাগাছে।

আনোয়ারা (চট্টগ্রাম)উপজেলা সংবাদদাতা জানায় : চট্টগ্রামের আনোয়ারায় লকডাউনের প্রথম দিনে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়ে উপজেলা প্রশাসন ১৯ প্রতিষ্ঠান ও পথচারিকে জরিমানা করলেও উপজেলার সর্বত্র নিয়ম ভাঙার হিড়িক। সড়কে প্রচুর পরিমাণ যানবাহন চলাচল, হাট-বাজরে লোক সমাগমের কমতি নেই। এমনকি বিভিন্ন কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকতে দেখা গেছে।

স্টাফ রিপোর্টার জানান : সকাল থেকেই শহরে লোক সমাগম কম ছিলো। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে হোটেল-রেস্তোঁরা, কাঁচা বাজার, ওষুধের দোকানগুলো সীমিতভাবে খোলা রেখে বেচাকেনা করে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দিনভর শহরে সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম চালানো হয়। পাশাপাশি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা এবং মাস্ক বিতরণ করা হয় প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে।

ঝালকাঠি জেলা সংবাদদাতা জানান : ঝালকাঠিতে সকাল থেকে ঢিলেঢালাভাবে লকডাউন চলছে। শহরের বেশিরভাগ দোকান পাট বন্ধ রয়েছে। তবে বাজারে মানুষের ভিড় লেগে আছে। স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই ঘর থেকে বের হচ্ছে জনসাধারণ। শহরের বিভিন্ন মোড়ে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। বাসস্ট্যান্ড থেকে অভ্যন্তরিণ ৬ রুটসহ দূরপাল্লার কোন রুটেই বাস চলছে না। জরুরী প্রয়োজনে যাত্রীরা ছোট যানবাহনে যাতায়াত করছেন। লকডাউনের মধ্যেও মাস্ক ছাড়া জনসাধারণ ঘোরাফেরা করছেন। শুধু ঝালকাঠি শহরই নয়, একই অবস্থা নলছিটি, রাজাপুর ও কাঁঠালিয়া উপজেলাতে। ঢিলেঢালাভাবে লকডাউন চলছে উপজেলাগুলোতে।

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) উপজেলা সংবাদদাতা জানান : মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় লকডাউন মানতে রাজি নন ব্যবসায়ী ও নি¤œআয়ের লোকজন। লকডাউনকে উপেক্ষা করে সকাল থেকেই দোকানের দু’এক সাটার খুলে দোকানে অবস্থান করছেন ব্যবসায়ীরা। উপজেলার শমশেরনগর, ভানুগাছ বাজার, মুন্সীবাজারসহ কয়েকটি বাজারে এচিত্র দেখা গেছে। তবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লকডাউন, স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারের ১৮ দফা মানতে সচেতনতামূলক নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

স্টাফ রিপোর্টার, মাদারীপুর থেকে জানান : সপ্তাহব্যাপী লকডাউন কার্যকর করতে মাদারীপুর প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয় সোমবার সকালে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এসময় সতেচনামূলক হ্যান্ড মাইকিংসহ কঠোর অবস্থানের বিষয় জানানো হয়। মাদারীপুর পৌর শহরের পুরানবাজার, নতুন শহর, ইটেরপুরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অভিযান চালানো হয়।

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান : সরকারী ঘোষণা মোতাবেক নির্ধারিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়া বাকী ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। লকডাউন কার্যকর করতে মাঠে প্রশাসন তধারকি ভূমিকা ছিল চোখে পড়ার মত।
পার্বতীপুর (দিনাজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান : পার্বতীপুর উপজেলা ও পৌর শহরে সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত লোকজনের সমাগম ঘটে। দুপুর থেকে বিকেল সাড়ে ৫ টা পর্যন্ত পুরোপুরি লকডাউনের আওতায় চলে আসে শহরটি। শহরের বেশ কয়েকটি রেস্তোরা স্বাস্থ্য বিধি মেনে পার্সেলের মাধ্যমে খাদ্য সরবরাহ করতে দেখা যায়। কাঁচাবাজার, মুদি দোকান গতানুগতিক ভাবেই চলছে।

লকডাউন পর্যবেক্ষনে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) : দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে সরকারী ঘোষনা ও স্বাস্থ্য বিধি অমান্য করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনাসহ ব্যবসায়ী, পথচারী ও পরিবহন মালিকের ৬ হাজার ৭৫০ টাকা জরিমানা আদায় করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত।

সোমবার বেলা ১১ টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালতের পৃথক অভিযান চালিয়ে এই জরিমানা আদায় করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রিয়াজ উদ্দিন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোছাঃ কানিজ আফরোজ।

রাজাপুর ( ঝালকাঠি) উপজেলা সংবাদদাতা জানান : ঝালকাঠির রাজাপুরে স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে, মুখে মাস্ক না পড়ে উসকানিমূলক কথা বলায় ১৯ বছরের এক যুবককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। উপজেলার উত্তমপুর বাজারে অভিযান চালিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যামাণ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. মোক্তার হোসেন এ দন্ড প্রদান করেন।

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান : মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রভাব বিস্তার নিয়ন্ত্রণে সরকারের দেয়া লকডাউনের বিরূদ্ধে গতকাল ৫ এপ্রিল সোমবার নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের ভুলতা গাউছিয়া পাইকারি কাপড়ের মার্কেটের ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন করেছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতা এলাকায় তারা এ কর্মসূচি পালন করে। এ সময় মহাসড়কের উভয়দিকে ৫ কিলোমিটার জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। আয়োজিত মানববন্ধন পূর্বক সভায় সভাপতিত্ব করেন গাউছিয়া মার্কেট দোকান মালিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি আব্দুল মালেক।

সাতকানিয়া উপজেলা সংবাদদাতা জানান : সবকিছু চলছে স্বাভাবিক, মাঝে মধ্যে অভিযান চলায় কিছুক্ষন সবকিছু বন্ধ হলেও পরে আবারো চলছে পুরোদমে আগের মত। লকডাউন সকাল থেকে শুরু হলেও সাতকানিয়া উপজেলা প্রশাসন মাঠে নামে দুপুর ১টার দিকে, দুপুর ১টার দিকে সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নজরুল ইসলাম ও এসিল্যান্ড আল বশিরুল ইসলামসহ পুলিশ প্রশাসনের একটি টীম লকডাউনের নির্দেশনা মানার জন্য তৎপরতা শুরু করলেও সকাল থেকে মোটেও কোন কার্যক্রম না রাখার কারণে, দক্ষিন চট্টগ্রামের বানিজ্যিক শহর কেরানীহাটের সবকিছুই ছিলো আগের মতই।

স্টাফ রিপোর্টার, সাভার থেকে জানান : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রনে সারা দেশে লকডাউন শুরু হলেও সাভারের এর ছিটেফোঁটারও দেখা মেলেনি। কলকারখানা খোলা থাকায় সাভার ও আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে লকডাউনের প্রভাব তেমন একটা পড়েনি বললেই চলে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সোমবার সকাল থেকেই গাদাগাদি করে বাসে উঠেছেন বিভিন্ন শিল্প কারখানার শ্রমিকরা। আবার পোশাক শ্রমিকদের অনেকে পায়ে হেঁটে, রিকশাভ্যান কিংবা অটোরিকশায় গাদাগাদি করে বসে রওনা হলেও নিজ নিজ কারখানায় কাজে যোগ দিতে গিয়ে ভোগান্তীতে পড়তে হয়েছে। তবে শিল্পাঞ্চলের কল কারখানা খোলা রেখে লকডাউন কতটুকু কার্যকর হবে তা নিয়েও সংশয়ের কথা বলেছেন অনেকেই।

শেরপুর জেলা সংবাদদাতা জানান : শেরপুরে শুধুমাত্র দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ রয়েছে। এছাড়া আর সবকিছুই চলছে প্রায় স্বাভাবিক। পন্যপরিবহনগুলোকে সকাল থেকেই চলতে দেখা গেছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথেই জেলা শহরের বিভিন্ন দোকানপার্ট খোলে দেয়া হয়েছে। বড়বড় দোকানগুলো একটি করে সাডার খোলে দেয়া হয়েছে।
ঢিলেঢালাভাবে শুরু হয়েছে লকডাউন

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) উপজেলা সংবাদদাতা জানান : সুন্দরগঞ্জে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে রাস্তায় বের হওয়ায় ২৩ জনের দুই হাজার ৪৫০ টাকা অর্থদন্ড করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সোমবার সকালে উপজেলার বিভিন্ন হাট- বাজার ও জন সমাবেশপূর্ণ স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ- আল- মারুফ ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদ আল হাসান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন