শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

জমজমাট হওয়ার অপেক্ষায় চট্টগ্রামে কুরবানির পশুর হাট দেশি গরুর বিপুল সমাহার, দামও নাগালের মধ্যে

প্রকাশের সময় : ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রফিকুল ইসলাম সেলিম : গরু-ছাগল-মহিষে ঠাসা পশুর হাট। মানুষের ভিড়ও উপচেপড়া। তবে সে তুলনায় নেই কেনাবেচা। ক্রেতারা বাজারে ঘুরে কুরবানির পশু দেখছেন। বুঝে নিচ্ছেন দাম দরের অবস্থা। চট্টগ্রামের কুরবানির পশুর হাটে চিত্র এখন এমনই। বিক্রেতাদের প্রত্যাশা ঘুরেফিরে দেখার পর্ব আজ (শুক্রবার) থেকে শেষ হবে, শুরু হবে বেচাকেনা। বাজার জমে উঠার অপেক্ষায় বিক্রেতারা।
শুরুতে বাজারগুলোতে বিক্রেতারা অতিরিক্ত দাম হাঁকলেও ধীরে ধীরে মূল্য সহনীয় হয়ে আসছে। বিক্রেতা, ইজারাদার ও ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এবার গবাদিপশুর সরবরাহ বেশি হওয়ায় দামও ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে থাকবে। তবে ইজারাদারদের অব্যবস্থাপনা পথে পথে যানজট ও চাঁদাবাজির ঘটনায় বিরক্তি প্রকাশ করেছেন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা।
বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, গবাদিপশুর সরবরাহ অন্যবারের তুলনায় বেশি। এরপরও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ট্রাকে ট্রাকে আসছে গরু-মহিষ। চট্টগ্রাম নগরীর দু’টি স্থায়ী বাজারসহ ৮টি পশুর হাটে কুরবানির পশু বেচাকেনা হচ্ছে। এসব হাটগুলোতে বেশিরভাগ দেশি গরু। বিশেষ করে দক্ষিণ চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ তিন পার্বত্য জেলার বিভিন্ন খামার ও কৃষকের বাড়িতে লালিত-পালিত গরুর আধিক্য দেখা গেছে পশুর হাটে।
পেশাদার ব্যবসায়ী ও মওসুমি ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি অনেক চাষী এবং গৃহস্থ সরাসরি গরু নিয়ে বাজারে এসেছেন। মহানগরীর নূর নগর হাউজিং এস্টেট মাঠে (কর্ণফুলী গরুর বাজার) বসেছে সবচেয়ে বড় অস্থায়ী পশুর হাট। সেখানে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ছাড়াও চকরিয়া, পেকুয়া, রামুসহ কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকা থেকে এবং বান্দরবান জেলা থেকে বিপুল সংখ্যক দেশি গরু এসেছে। হৃষ্টপুষ্ট এসব গরুর দামও আওতার মধ্যে বলে জানান ক্রেতারা।
নগরীর স্টিল মিল গরুর বাজারে বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকার গরুর পাশাপাশি এবারও কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, ঝিনাইদহ, রাজশাহী, রংপুরসহ উত্তরাঞ্চল থেকে বিপুল সংখ্যক গরু এসেছে। বেপারিদের পাশাপাশি খামারীরাও নিজেদের খামারে সযতেœ লালিত-পালিত গরুর পাল নিয়ে হাজির হয়েছেন পশুর হাটে। এখনো পর্যন্ত বেচাকেনা জমে না উঠলেও তাদের প্রত্যাশা আজ-কালের মধ্যে পুরোদমে বাজার জমজমাট হয়ে উঠবে। নগরীর বিবির হাট, সাগরিকা, কমল মহাজন হাট, সল্টগোলা ক্রসিং সংলগ্ন ইশান মিস্ত্রির হাট এবং পোস্তারপাড়ে ছাগলের হাটসহ মহানগরীর সবকয়টি পশুর হাটে হাজার হাজার ক্রেতার ভিড়। ঈদের বাকি আর তিনদিন। শহরের যারা স্থায়ী বাসিন্দা তারা দু’একদিনের মধ্যে কুরবানির পশু কেনা সেরে ফেলবেন। আর যারা বাসাবাসা কিংবা ফ্ল্যাট বাড়িতে থাকেন তারা পশু কেনা সারবেন ঈদের আগের দিন পর্যন্ত। প্রতিবছরই এমনটা হয় জানিয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা এখন শেষ কয়েকদিনের অপেক্ষায় আছেন।
বাজারে গরু আসা এখনও অব্যাহত আছে। ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদের আগের দিন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু আসবে। দেশের অন্য এলাকার তুলনায় চট্টগ্রামে কুরবানি ঈদে গরুর চাহিদা বেশি থাকে। এই অঞ্চলের লোকজন একাধিক গরু কুরবানি দেন। অনেকে আত্মীয় স্বজনদের মাঝেও কুরবানির গরু বিলি করেন। ফলে এখানে গরুর চাহিদা বেশি থাকে। সরকারি হিসাবে গেলবছর চট্টগ্রামে কোরবানি দেয়া হয় ৪ লাখ ৯৩ হাজার পশু।
এদিকে দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে গরু নিয়ে আসা ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, পথে পথে পশুর গাড়ি থামিয়ে চাঁদা নিচ্ছে কিছু পুলিশ সদস্য ও স্থানীয় মাস্তানরা। পশুর হাটেও নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে তাদের। পশুর হাটে গরু-মহিষ রাখার জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা একেবারেই কম। দূর-দূরান্ত থেকে পশু নিয়ে আসা বেপারী ও খামারীদের রোদে পুড়তে হচ্ছে আবার বৃষ্টিতে ভিজতে হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন