শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের কবলে দেশ

সীমান্তের ওপরের অভিন্ন নদ-নদীর প্রবাহ হৃাসর সাথে বৃষ্টি না হওয়ায় সাগরের নোনা পানি দক্ষিণাঞ্চল ছাড়িয়ে চাঁদপুরের মেঘনায়

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ১০ এপ্রিল, ২০২১, ৫:৫৫ পিএম

উজানে প্রবাহ হৃাসের সাথে বৃষ্টির পরিমান কম থাকায় সাগরের জোয়ারে ভর করে মাত্রাতিরিক্ত নোনা পানি উঠে এসে দক্ষিনাঞ্চল সহ দেশের মধ্যভাগে ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয় সৃাষ্ট করছে। ইতোমধ্যে বঙ্গোপসাগরের জোয়ারে ভর করে মাত্রাতিরিক্ত লবনাক্ত পানি ১শ কিলোমিটার উজানে বরিশালকে অতিক্রম করে চাঁদপুরের ভাটিতে মেঘনা’য় পৌছে গেছে। বরিশালের পাশে প্রবাহমান কির্তনখোলা নদীতে লবনাক্ততার মাত্রা  স্বাভাবিকের দ্বিগুনেরও বেশী পর্যায়ে পৌছেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পানি বিশেজ্ঞগন এটাকে স্বাভাবিক পরিবেশের জন্য অত্যন্ত দুঃসংবাদ বলে সতর্ক করে উজানে পানির প্রবাহ হৃাসের সাথে শুষ্ক মৌসুমে বৃষ্টির পরিমান কম হবার কারনকেও দায়ী করেছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি সূত্রের মতে ২০০৬ সালের জানুয়ারীতে বরিশালের কির্তনখোলা নদীর পানিতে যেখানে লবনাক্ততার মাত্রা ছিল ৬১০-৬৩০ পার্সেন্ট পার মিলিয়ন-পিপিএম, সেখানে ২০১৭ সালের জানুয়ারীতে তা ৯১০ পিপিএম-এ পৌছে। ২০১৮ সালে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও ’১৯ সালে একই নদীতে লবনাক্ততার মাত্রা প্রায় ৯শ পিপিএম-এ বৃদ্ধি পায়। গত বছর জানুয়ারীতেও লবনাক্ততার মাত্রা ছিল প্রায় ৯শ পিপিএম-এর কাছে।
কিন্তু গত ডিসেম্বরের পর থেকে দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীতে লবনাক্ততার মাত্রা বাড়তে শুরু করে। গতমাস থেকে পরিস্থিতি আরো নাজুক আকার ধরন করেছে। চলতি মাসের শুরু থেকে বরিশালে কির্তনখেলার পানিতে লবনাক্ততার মাত্রা ১ হাজার পিপিএম অতিক্রম করেছে বলে একাধীক সূত্র জানিয়েছে।
নদী বিশেষজ্ঞদের মতে, পদ্মা সহ সীমান্তের ওপার থেকে প্রবাহিত ৫৪টি অভিন্ন নদ-নদীর পানির হিস্যা থেকে বাংলাদেশকে বঞ্চিত করায় উজান থেকে আমাদের সাগরমুখি প্রবাহ হ্রাস পাচ্ছে। সাথে গত কয়েক বছর থেকেই শীত বিদায়ের পরে বসন্তে দক্ষিণাঞ্চল সহ দেশের মধ্যাঞ্চল ও উত্তরবঙ্গে বৃষ্টিপাত কম হবার কারনেও ভাটিতে মিঠা পানির প্রবাহ হ্রাসের সুযোগে সাগরের নোনা পানি অতিমাত্রায় উজানে উঠে আসছে। গত মাসে দেশের বৃষ্টিপাতের পরিমান ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৮০ ভাগ কম। যা বরিশাল অঞ্চলে ৯৯.৫% ও রাজশাহী অঞ্চলে ছিল ৯৪.২% কম। বরিশাল অঞ্চলে ৫৩ মিলিমিটারের স্থলে মাত্র .০৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে মার্চ মাসে। গত জনুয়ারী মাসে বরিশল অঞ্চলে কোন বৃষ্টিপাত হয়নি। আর ফেব্রুয়ারীতে বৃষ্টিপাতের পরিমান ছিল মাত্র ১ মিলিমিটার। উজানের প্রবাহ হ্রাসের সাথে বৃষ্টিপাতের পরিমান উদ্বেগজনক হারে কমে যাওয়ায় নদ-নদীতে মিঠাপানির প্রবাহে ক্রমশ ঘাটতি সৃষ্টি হওয়ায় সাগরের নোনা পানি সে স্থান পুরন করছে।  
এরফলে দক্ষিণাঞ্চলের ফসলী জমি সহ একাধীক জনপদে লবনাক্ত পানি প্রবেস করে নতুন বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। এমনকি গত পূর্ণিমার ভরা জোয়ারে বরিশাল ছাড়িয়ে চাঁদপুরের ভাটিতে পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরের নোনা পানি পৌছে যায়। মাত্রাতিরিক্ত এ নোনা পানি শুধু ফসলি জমিকেই ক্ষতিগ্রস্থ করছে না, তা মৎস্য ও উপক’লীয় বনজ সম্পদের জন্যও ক্রমশ হুমকি সৃষ্টি করছে বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞগন।  তাদের মতে, আমাদের ফসল ও মৎস্য সম্পদ সহ  পরিবেশ  যেখানে ৫শ পিপিএম পর্যন্ত লবনাক্ততা সহ্য করতে পারে, সেখানে ইতোমধ্যে তার মাত্রা হাজার ছাড়িয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি যথেষ্ঠ হুমকির মুখে পড়তে যাচ্ছে। এথেকে উত্তরনে উজানে পানির প্রবাহ বৃদ্ধির জরুরী পদক্ষেপ গ্রহনের কোন বিকল্প নেই বলেও মনে করনে পানি বিশেষজ্ঞগন। পাশাপাশি পরিকল্পিত বনায়নের মাধ্যে বৃষ্টিাতের পরিমান বৃদ্ধি সহ পরিবেশ সুরক্ষার দিকে নজর দেয়ারও তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞগন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Jack+Ali ১০ এপ্রিল, ২০২১, ৬:১২ পিএম says : 0
Our ruler have destroyed our country in every way.... Why we liberated our country??? Ruler only want to stay in power and kill our people if any body speak their criminal activities, they abduct people and they never come back, looting our hard earned taxpayers money and sending to foreign countries. They don't love us and love our Beloved Mother Land. O'Allah appoint a muslim leader who will rule our country by Qur'an then Allah's help will come and we will be able to live in our country in peace, security with human dignity and there will be no more poor people and India will fear us because muslim only fear Allah.
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন