রংপুর জেলা সংবাদদাতা ঃ তিস্তা সেচ প্রকল্পে পানি না থাকায় বোরো মওসুমে চাষাবাদে বিঘœ ঘটছে মারাত্মকভাবে। ফলে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে রংপুরসহ গোটা উত্তরাঞ্চলের কৃষক সমাজ। এর প্রতিবাদে এবং তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে আগামি ১৫ই ফেব্রæয়ারি রংপুর থেকে তিস্তা ব্যারেজ অভিমুখে রোডমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাসদ (মার্কসবাদী) সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট রংপুর ও রাজশাহী বিভাগ কমিটি। গত শনিবার রংপুর জিএল রায় রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠক মঞ্জুর আলম মিঠু। এতে জানানো হয়, দেশে এখন বোরো মৌসুম শুরু হয়েছে। রংপুর, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলার প্রায় ১ লাখ ১১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের জন্য যতটুকু পানির প্রয়োজন তার পুরোটাই নির্ভরশীল তিস্তা সেচ প্রকল্পের ওপর। অথচ বর্তমানে সেই সেচ প্রকল্প পানির অভাবে চলতি বছরে মাত্র ১০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ প্রদান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সেচ প্রকল্প থেকে জমিতে সেচ দিতে বিঘাপ্রতি খরচ হয় ১’শ ৫০ থেকে ২’শ টাকা। আর ভূগর্ভস্থ ব্যবহার করে সেচ দিতে বিঘাপ্রতি খরচ হয় ২ হাজার ৫’শ থেকে ২ হাজার ৭’শ টাকা। এ অবস্থা চলছে গত কয় বছর ধরে। এতে করে গত বছরে পানি না পাওয়ায় চষিদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩শ কোটি টাকা। চলতি বছরেও ভয়াবহ সংকটে পড়বে চাষীরা। কারণ, এখন বাংলাদেশ এলাকায় তিস্তার পানির পরিমাণ এক হাজার কিউসেকের নিচে নেমে এসেছে। আগামি দিনগুলোয় সেটা আরও কমে যাবে। অথচ পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসেব মতে, এক সময় শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশ অঞ্চলে তিস্তা নদীতে ১৪ হাজার কিউসেক পানি প্রবাহিত হতো।
ভারত তিস্তার উজানে গজল ডোবায় বাঁধ দিয়ে এবং উজানে বেশ কিছু জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ও ক্যানেল করে এক তরফা পানি প্রত্যাহার করায় তা কমতে কমতে আজ শুষ্ক মৌসুমে ৩শ থেকে ৪শ কিউসেকে দাঁড়িয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বাসদ নেতা আনোয়ার হোসেন বাবলু, পলাশ কান্তি নাগসহ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন