রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের মাস রমজানুল মোবারকের পবিত্রতা রক্ষা করতে সর্বস্তরের মুসলমানদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর, হাটহাজারী মাদরাসার শায়খুল হাদীস ও শিক্ষা পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। বুধবার (১৪ এপ্রিল) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে আল্লামা বাবুনগরী বলেন, মহান আল্লাহ এই মাসে পবিত্র ‘কোরআনুল কারিম’ অবতীর্ণ করার মাধ্যমে এ মাসকে মহিমান্বিত এবং বরকতময় করেছেন। রমজানুল মোবারক আল্লাহ তায়ালার নৈকট্যলাভের বিশেষ এক মাস। মুসলিম উম্মাহর কাছে এ মাসের গুরুত্ব অপরিসীম। যাবতীয় পাপ কাজ পরিত্যাগ করে রমজান মাসের পবিত্রতা রক্ষা করা আমাদের সবার জন্য অপরিহার্য। তাই প্রত্যেকেই নিজে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করার পাশাপাশি অন্যকেও এ ব্যাপারে সচেতন করে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, মুসলমানদের আত্মশুদ্ধি লাভের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় হচ্ছে রমজানুল মোবারক। আত্মশুদ্ধির জন্য প্রথম করণীয় হলো যাবতীয় পাপ কাজ পরিত্যাগ করে মহান প্রভুর ইবাদতে মনোনিবেশ করা। তাহলেই কেবল এ মাসে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জন হবে।
রমজানে চিনি-ভোজ্যতেলসহ অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের দাম না বাড়াতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আল্লামা বাবুনগরী বলেন, এ মাস একে অন্যের প্রতি সাহায্য-সহানুভূতির মাস। নিত্যপণ্যের দাম চড়া থাকলে সমাজের গরিব, মিসকিন, এতিম, অসহায় ও সাধারণ অনেক রোজাদার চাইলেও মন মতো ইফতার সাহরি করতে পারে না। তাই রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রেখে রোজাদারদের ইফতার সেহরিতে বিশেষ সহায়তা করুন।
সমাজের গরিব, মিসকিন, এতিম, অসহায় ও সাধারণ মুসলমানদের জন্য ইফতার সামগ্রী বিতরণসহ আনন্দচিত্তে তারাও যেন ইফতার সাহরি করতে পারে সে ব্যবস্থা করতে সমাজের বিত্তবানদেন প্রতি আহ্বান জানান হেফাজত আমীর।
আল্লামা বাবুনগরী বলেন, হাদীস শরিফে রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে সে ব্যক্তির গুনাহ ক্ষমা করা হবে, জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেয়া হবে এবং রোজাদারের সমপরিমাণ সওয়াব তাকে দেয়া হবে। তাই সমাজের বিত্তবানদের উচিত এ মাসে গরিব-দুঃখীদের খোঁজখবর রাখা।
তিনি আরও বলেন,করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধে পুরো দেশ লকডাউন। দোকানপাট, রাস্তাঘাট সব কিছুই আজ বন্ধ। নেই কাজের কোন উৎস। করোনা আতংকে কার্যতই মানুষ আজ গৃহবন্দী হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে রুজি রোজগার করতে না পেরে খেটে খাওয়া দিনমজুররা খাদ্য সংকটে অসহায় অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাই রহমতের মাস রমজানুল মোবারকে করোনায় সৃষ্ট উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দূর্দশাগ্রস্থ পরিবারের পাশে খাদ্যদ্রব্য, নগদ অর্থ সহ জরুরী ত্রাণসামগ্রী নিয়ে সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসুন।
তিনি আরো বলেন,মহামারির এই নাজুক সময়ে গরিব-দুঃখী মুসলমানদের মাঝে সাধ্যানুযায়ী ইফতার সামগ্রী বিতরণ করা আমাদের সবার অন্যতম দায়িত্ব। তারা আমাদের ভাই, সারাদিন রোজা রাখার পর তারাও যেন আনন্দচিত্তে ইফতার করতে পারে সে ব্যবস্থাটুকু করে দেয়া আমাদেরই দায়িত্ব ও কর্তব্য। তাই অসহায় দুঃস্থদের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখতে সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আমি আহ্বান জানাচ্ছি ।
এছাড়া অধীনস্থ কর্মজীবীদের কর্ম হালকা করা, দিনের বেলায় হোটেল রেস্তোরা বন্ধ রাখা, টিভি সিনেমা বন্ধ রাখা, গীবত, পরনিন্দা, হিংসা-বিদ্বেষ, চোগলখোরি, অহংকার ও কৃপণতার মতো গর্হিত কাজগুলো পরিত্যাগ করাসহ যাবতীয় গুনাহের কাজ থেকে বেঁচে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করে একাগ্রতার সহিত পুরো মাস ইবাদত করে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের আহ্বান জানান আমীরে হেফাজত আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন