চট্টগ্রামের রাউজানে সাইফুদ্দিন খান (৪৯) নামের এক ব্যবসায়ীর পায়ে গুলি করার অভিযোগে পৌরসভার কাউন্সিলর আলমগীর আলী (৫৪)কে প্রধান আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে রাউজান থানায় মামলা করেন গুলিবিদ্ধ ব্যবসায়ীর ছোট ভাই আবদুল্লাহ আল মামুন। মামলায় কাউঞ্চিলর আলমগীর আলীর দুই ভাই রাশেদ আলী (৪৩) ও এরশাদ আলীসহ (৪০) মোট ৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।স্থানীয় একটি মসজিদ পরিচালনা নিয়ে বিরোধের জেরে বুধবার বিকেলে পশ্চিম গহিরার শেখ ইব্রাহিম জামে মসজিদ মাঠে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ব্যক্তিরা গুলিবিদ্ধ সাইফুদ্দিনকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। তাঁর গুলিবিদ্ধ পায়ে অস্ত্রোপচার হয়েছে বলে জানিয়েছে পরিবার। আলমগীর আলী রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আর গুলিবিদ্ধ সাইফুদ্দিন খান রাউজান পৌর যুবলীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুনের বড় ভাই। আলমগীর আলী আর আবদুল্লাহ আল মামুন একই এলাকার পাশাপাশি বাড়ির বাসিন্দা হলেও তাঁদের মধ্যে নানা বিষয়ে বিরোধ আছে। আহত সাইফুদ্দিন খান একসময় সংযুক্ত আরব আমিরাতে থাকতেন। পরে দেশে ফিরে মুরগির খামার ব্যবসায় যুক্ত হন। মামলার বাদী সাইফুদ্দিনের ছোট ভাই রাউজান পৌর যুবলীগের জ্যেষ্ঠ সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন এজাহারে উল্লেখ করেন, ‘আমার সামনেই কাউন্সিলর আলমগীর আলী পকেট থেকে পি¯তল বের করে আমার ভাইয়ের পায়ে দুবার গুলি করেন। প্রথমবার গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। দ্বিতীয়বার ভাইয়ের বাঁ পায়ে গুলি লাগে। তিনি বলেন তাঁরা এই হত্যাচেষ্টার বিচার চান।স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী বাসিন্দা ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় শেখ ইব্রাহিম জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি ছিলেন কাউন্সিলর আলমগীর আলীর বাবা মৃত আলী আজম। কয়েকমাস আগে তিনি মারা যাওয়ার পর থেকে আর নতুন কমিটি হয়নি। মসজিদের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় কাউন্সিলর আলমগীর আলীদের হাতে। এ নিয়ে পৌর যুবলীগ নেতা আবদুল্লাহ আল মামুন ও আলমগীর আলীর পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এর মধ্যে সম্প্রতি মসজিদে লাশ বহনের একটি খাটিয়া দেন স্থানীয় এক প্রবাসী। কিন্তু এর বিরোধিতা করে খাটিয়াটি ওই প্রবাসীর বাড়িতে ফেরত পাঠায় একটি পক্ষ। এ নিয়ে গত বুধবার বিকেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। তখন ব্যবসায়ী সাইফুদ্দিনের পায়ে গুলি করেন কাউন্সিলর আলমগীর আলী।এ বিষয়ে কাউন্সিলর আলমগীর আলীর ভাষ্য, ‘গোলাগুলির ঘটনা মিথ্যা। আমি কাউকে গুলি করিনি।’রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল হারুন আজ বৃহস্পতিবার বলেন, কাউন্সিলর আলমগীর আলীসহ অভিযুক্ত সব আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।এদিকে স্থানিয়রা জানিয়েছেন কাউঞ্চিলর সবকিছু তার নিয়ন্ত্রনে রাখতে গিয়ে সবসময় ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন।চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া কাউঞ্চিলর আলমগীর আলী একসময়ের সাবেক ছাত্র নেতা ও সদ্য বিদায় নেওয়া পৌর মেয়র দেবাশীষ পালিতের হাত ধরে ছাত্ররাজনীতি করেছিলেন। সে থেকে আলমগীর আলী কাউকে চার দিয়ে কথা বলতেননা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন