দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় হরিরামপুরের পদ্মারচরে আবাদকৃত কালি বোরো ধান ক্ষেত শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দূর থেকে ধান গাছগুলোকে স্বাভাবিক মনে হলেও ছড়ায় থাকা ধানগুলো চিটে হয়ে গেছে। ফলন্ত ধানের এমন ক্ষতিতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। করোনা পরিস্থিতিতে ধার দেনা করা টাকায় উৎপাদিত ফসলের এমন ক্ষতিতে হতাশ হয়ে পড়েছেন কৃষক।
সরেজমিনে দেখা যায়, এ বছর মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের বয়ড়া ইউনিয়ন ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের নদীর কোলঘেঁষে জেগে ওঠা চরে কালি বোরো চাষ হয়েছে। বর্ষার পানি নামতেই বয়ড়া ইউনিয়নের দাসকান্দি বয়ড়া থেকে শুরু করে রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ভাওরডাঙ্গি, দড়িকান্দি ও বড়বাহাদুরঘাট পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য চর জেগে ওঠে। নদীর কোলঘেঁষে জেগে ওঠা এ চরে তীরবর্তী কৃষকরা কালি বোরোর আবাদ করেছে।
দড়িকান্দি গ্রামের কৃষক আজমত আলী জানান, বর্ষার পানি নামতেই এখানে চর জেগে ওঠায় কয়েক কেজি কালি বোরোর বীজ বুনি। এতে তেমন কোনো খরচ নেই। শুধু বীজ বুনলেই হয়। বিকল্প কোনো পানি ব্যবস্থাও করতে হয় না। মাঝে মধ্যে বৃষ্টি হলেই চলে। কিন্তু এ বছর বৃষ্টি নেই, তাই ধান গাছের চারা শুকিয়ে যাচ্ছে। পদ্মাপারের কৃষক মজনু বেপারী জানান, এ বছর পদ্মায় চর জেগে ওঠায় আমি ১০ বিঘা জমিতে বোরো ধান লাগিয়েছি। বৃষ্টি না হওয়ায় ধান ক্ষেত শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ৩ বিঘা জমির ধান কেটেছি, তাতে ১১ মণ ধান উৎপাদন হয়েছে। তিনি আরো জানান, চরের এসব জমিতে আমরা পানি দেয়ার জন্য কোনো সেলোমেশিন ব্যবহার করি না। বৃষ্টির পানিতেই আবাদ করে থাকি। কিন্তু এ বছর দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যে ফলন দেখা গেছে তাতে খরচও ওঠবে না। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এখানে প্রায় ২৬৩ বিঘা জমিতে এই কালি বোরোর চাষ হয়েছে। তবে এখানে কৃষি অফিস থেকে ধান উৎপাদনের কোনো লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়নি।
কারণ এখানে শতভাগ ব্যক্তি মালিকাধিন জমি নেই। চর জেগে ওঠেছে। তাই যার যার এলাকায় যে যেভাবে পেরেছে চাষ করেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল গাফ্ফার মুঠোফোনে জানান, জেগে ওঠা চরে নদীর পার্শ্ববর্তী কৃষকরা কালি বোরোর চাষ করেছে। এখানে তেমন চাষাবাদ সম্ভব নয় বিধায় আমরা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করিনি। তবে যতটুকু আবাদ হয়েছে, বেশ ভালো ফলন হবে বলে আশা করা যায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন