করোনা সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির ৩১তম সভা জুম এর মাধ্যমে গত রোববার রাতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কমিটির সভাপতি প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি কমপক্ষে দুই সপ্তাহের জন্য পূর্ণ লকডাউন সুপারিশ করে। সরকার ইতোমধ্যে ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের লক ডাউন ঘোষণা করেছে। কমিটি এতে সন্তোষ প্রকাশ করে। যদিও বৈজ্ঞানিকভাবে দুই সপ্তাহের কম লক ডাউনে কার্যকর ফলাফল আশা করা যায়না। কমিটি আরো এক সপ্তাহের জন্য কঠোর লকডাউন এর সুপারিশ করে।
পরবর্তীসপ্তাহ শেষ হওয়ার আগে সংক্রমণের হার বিবেচনা করে পুণ:সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষযটি উল্লেখ করে ধীরে ধীরে লক ডাউন শেষ করার পূর্ব পরিকল্পনা প্রস্তুত রাখার পরামর্শ দেয়া হয়। সভায় দেশের অর্থনীতি সচল রাখার স্বার্থে শিল্প-কলকারখানা খোলা রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়। তবে, বেসরকারী দফতর, ব্যাংক খোলা রাখা, ক্রমবর্ধমানভাবে ব্যক্তিগত গাড়ী চলাচল, ইফতার বাজারে অনাকাঙ্খিত ও অপ্রয়োজনীয় ভিড় লকডাউনের সাফল্যকে অনিশ্চিত করে দেবে বলে মনে কারেন তারা। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য, ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য জরুরী সেবা ছাড়া সব কিছু বন্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়। পাশপাশি কমিটি খোলা রাখা জরুরী সেবার তালিকা প্রকাশ করার অনুরোধ করে। অন্যথায় বিরূপ পরিস্থিতির আশংকা প্রকাশ করা হয়। উদাহারণ হিসেবে চলমান লক ডাউন এ চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের ডিউটির জন্য চলাচলে বাধা ও অনাকাঙ্খিত ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়।
ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতাল চালু হওয়ায় সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে কমিটি রোগী ভর্তির বাড়তি চাপ থাকায় দ্রুত আরও সক্ষমতা বাড়তে জোর দেন। এছাড়া কমিটি বলে, করোনা রোগী দ্রুত সনাক্ত করা সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সরকার ল্যাবরেটরীর সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কাজ করছে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। নমুনা সংগ্রহ সহজ ও রোগীদের হাতের নাগালের মধ্যে আনতে শহর অঞ্চলে প্রতি ওয়ার্ডে নমুনা সংগ্রহের বুথ স্থাপন করতে পরামর্শ দেন। রিপোর্ট দ্রুত দিতে নমুনা সংগ্রহ বুথে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টকরার পরামর্শ দেয়া হয়।
নমুনা পরীক্ষা সহজলভ্য করতে ইতোমধ্যে সরকারী নমুনা পরীক্ষা বিনামূল্যে করার পরামর্শ দিয়েছে। পিসিআর টেস্ট কিটের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ায় বেসরকারী পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষার মূল্য পূণনির্ধারণের পরামর্শ দেয়া হয়। যাতে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ে এবং সাশ্রয়ীমূল্যে পরীক্ষা করা যায়।
কমিটির পক্ষ থেকে সরকারী-বেসরকারী সকল হাসপাতাল, ক্লিনিকে গর্ভবতী করোনা/নন করোনা মা’দের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে অনুরোধ করা হয়। করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে অবশ্যই গর্ভবতী মা’দের সেবার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। নতুন ডিএনসিসি হাসপাতালে গর্ভবতী মা’দের একটা কর্ণার এ বিশেষায়িত (আইসিইউ) ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ করা হয়। প্রতিটি হাসপাতাল তার নিজস্ব সক্ষমতা অনুযায়ী চেইন অফ রেফারেন্স সিস্টেম মেনে চলবেন। সভার শুরুতে করোনায় সংক্রমিত হয়ে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাঁদের রুহের মাগফেরাত কামনা করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন