শুষ্ক এই মৌসুমে টেকনাফের তিনটি পাহাড়ি ইউনিয়নসহ উপজেলা জুডে চলছে বিশুদ্ধ সুপেয় পানির তীব্র সঙ্কট। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় নদী, খাল, বিল পুকুর আর জলাশয়গুলো শুকিয়ে ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে শত শত টিউবওয়েল। এসব এলাকার লোকজনকে পানির জন্য প্রতিদিনই যেন যুদ্ধ করতে হচ্ছে। বাধ্য হয়ে তারা ড্রাম, কলসে নিয়ে পানি সংগ্রহে ছুটে বেড়াচ্ছে গ্রাম থেকে গ্রামে।
স্থানীয়রা উপজেলা চেয়ারম্যান ও বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে আকুল আবেদন করেছেন। এ ব্যাপারে এলাকার লোকজন, জনপ্রতিনিধি, এনজিও সংস্থা ও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা নিকট পানির সঙ্কট নিরসনের জন্য আবেদন নিবেদন করে আসলেও এর কোনো সমাধান হয়নি। অন্যদিকে, বিশুদ্ধ পানির অভাবে এসব এলাকায় পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ আতাউর রহমান বলেন, প্রচন্ড গরম পড়ায় উপজেলার কয়েকটি এলাকায় পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে গেছে। আক্রান্তদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি।
বিশেষজ্ঞদের অভিমত, জলবায়ু পরিবর্তন, অব্যাহত বৃক্ষ নিধনের কারণে বৃষ্টির পরিমাণ কমে গেছে। এতে করে পানির উৎস শুকিয়ে যাওয়ায় নদী এবং খালগুলোর শুকিয়ে গেছে। টেকনাফ পৌরএলাকার প্রতিদিন রেস্টুরেন্ট, বেকারী, আবাসিক হোটেল ও বাসাবাড়িতে খাবার পানি সরবরাহ দিতে ২০/৩০ টি ভ্যানগাড়ি ব্যস্ত রয়েছে। এতে অর্ধলাখ মানুষের দূর্ভোগের পাশাপাশি অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হচ্ছে ।
পৌর এলাকার হত দরিদ্র নিম্নআয়ের মানুষ অর্থের অভাবে বিশুদ্ধ পানি না পেয়ে বাধ্য হয়ে দূষিত পানি সংগ্রহ করে খাবার পানির অভাব পুরণ করেছে। পৌর কর্তৃপক্ষ কোটি কোটি টাকা বিভিন্ন প্রকল্পে খরচ করলেও পৌর এলাকার প্রধান সমস্যা খাবার পানির দূর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে কোন পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে জানা নেই।
টেকনাফ উপজেলার বাহার ছড়া, রাজার চরা, পৌর এলাকার সাইড পাড়া, চৌধুরী পাড়া, উত্তর জালিয়া পাড়া, মধ্যম জালিয়া পাড়া, দক্ষিণ জালিয়া পাড়া, কুলাল পাড়া, কলেজ পাড়া, নাইট্যংপাড়া, কায়ুকখালী পাড়া,সদর ইউনিয়নের খানকার পাড়া, শিলবনিয়া পাড়ায় বর্ষাও শীত মৌসুম শেষে গ্রীষ্মের শুরু থেকে পানির সংকট সৃষ্টি হয়। পানির অভাবে সেচ সঙ্কটে ফেটে চৌচির হয়ে গেছে উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের আবাদি জমি। বিপুল পরিমাণ জমির বোরো ধান খরায় রোদে জ্বলে গেছে।
টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, সরকারি বরাদ্দ অপ্রতুল হওয়ায় সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে পানি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। যেসব এলাকায় নলকূপ স্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে না, সেখানে আইডিপি ও জিওবি প্রকল্পের আওতায় কিছু অগভীর নলকূপ বসানোর কাজ চলছে বলে তিনি জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন