মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের সংরক্ষিত বনে আগুন লাগার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। বিভাগীয় বন কর্মকর্তার অফিসে গতকাল বুধবার দুপুরে প্রতিবেদনটি জমা দেওয়া হয়। বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, লাউয়াছড়া সংরক্ষিত বনে আগুন লাগার ঘটনায় তার কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। তদন্তে দুই সদস্যের কমিটিতে ছিলেন বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা মির্জা মেহেদি সরোয়ার ও বন মামলা পরিচালক জুলহাস উদ্দিন।
প্রতিবেদনে আগুন লাগার ঘটনায় লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত ৩ কর্মচারী ও কর্মকর্তার দায়িত্বে অবহেলাকে তারা দায়ী করেন। তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে ১০টি বিষয় গুরুত্ব দিয়ে উল্লেখ করেছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ইচ্ছাকৃত ভাবে আগুন লাগার ঘটনার প্রমাণ সেভাবে পাওয়া যায়নি। তবে বনে কোন ময়লা বা আগাছায় কোনভাবেই আগুন দেওয়া যাবে না বলে পূর্বেই নির্দেশ ছিল বিভাগীয় বনকর্মকর্তার। আগুন লাগার ঘটনায় ওই নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে। এই ঘটনায় দায় দেওয়া হয়েছে বনবিভাগের ৩ জনের উপর। যারা ওখানকার কাজের তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন।
তারা হলেন বাঘমারা ক্যাম্পের বনপ্রহরী মোতাহার হোসেন, লাউয়াছড়ার বিট অফিসার মিজানুর রহমান, সহযোগি সদস্য (কমিনিউটি পেল্ট্রল দল) মো. মহসিন। সেদিন যে শ্রমিকরা কাজ করছিল এবং যারা ওই স্থান তদারকির দায়িত্বে ছিলেন তাদের দায়িত্ব পালনে চরম অবহেলা পরিলক্ষিত হয়েছে তদন্ত কমিটির তদন্তে। এই তিনজন তাদের দায়িত্ব পালন অবহেলা করায় তদন্ত কমিটি এই ঘটনার জন্য তাদেরকেই দায়ী করেছেন। ঘটনাস্থলে তারা তিনজন দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন। কিন্তু আগুন লাগার ঘটনাটি বিভাগীয় বনকর্মকর্তা অন্য সূত্র থেকে জানতে পেরে লাউয়াছড়ার রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলামকে আগুন নেভানোর নির্দেশ দেন। বনবিভাগ এবং ফায়ার সার্ভিসের যৌথ প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন উল্লেখ করেছেন আগুনের সুত্রপাত বনায়নের জায়াগ থেকেই।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় আগুনে পুড়েছে দেড় একর জায়গা। তবে তেমন বড় কোনো গাছ পোড়েনি। ওই তদন্ত কমিটি বেশ কিছু সুপারিশ করেছে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বনবিভাগের স্টাফদের উপর তদারকি বাড়ানো। প্রাকৃতিক ভাবে জন্ম নেয়া গাছ ও লতাপাতার প্রতি যতœশীল হওয়া। বনের উন্নয়নমূলক কাজের সময় গ্যাস লাইট বা দেয়াশলাই সাথে না রাখা। অগ্নি নির্বাপক সরঞ্জাম সাথে রাখা। এ দিকে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আমলে নিয়ে দায়িত্বে অবহেলার কারনে ৩ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী। তিনি বলেন প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন