সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

রোগীর চাপ কমছে ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতালে

করোনা চিকিৎসা সেবায় রোগীরা সন্তুষ্ট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ মে, ২০২১, ১২:০১ এএম

রাজধানী ঢাকার হাসপাতালগুলোর মতোই করোনা রোগীর চাপ কমেছে ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে। চালুর পর থেকে গত দিন আইসিইউতে সিট ফাঁকা পাওয়া না গেলেও কয়েকদিন ধরে সেই চাপও অনেকটাই কমেছে হাসপাতালটিতে। গতকাল সকাল থেকে মহাখালীর ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে অবস্থান করে দেখা গেছে, জরুরি বিভাগে ভর্তি হতে আসা রোগীর তেমন ভিড় নেই। দীর্ঘ সময় হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের সামনে অপেক্ষা করে দুই-একজন রোগী হাসপাতালটিতে আসতে দেখা গেছে। টিকিৎসা সেবা পেয়ে রোগীর আত্মীয়-স্বজনরা সন্তুষ্ট।

জানা গেছে, প্রতিদিন হাসপাতালটিতে রোগীর হালনাগাদ তথ্য জানাতে সংবাদ সম্মেলন করেন হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন। কিন্তু গতকাল রোববার সেই আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত না হলেও তিনি হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যার হালনাগাদ তথ্য জানিয়েছেন। সেই তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে হাসপাতালটিতে রোগী ভর্তি রয়েছেন ১২৪ জন। যা আগের দিন ছিল ১৩৩ জন।
এদিন জরুরি ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন ২৭ জন, এদের মধ্যে পুরুষ ১৬ জন, মহিলা ১১ জন। গত শনিবার মে দিবসে জরুরি ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন ২২ জন। এছাড়া আইসিইউতে গতকাল ভর্তি রয়েছেন ৭৫ জন রোগী, যা আগের দিন ছিল ৭৬ জন।

হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের সামনে দায়িত্বরত এক নিরপাত্তারক্ষী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আগে যেমন প্রচুর করোনা রোগীর ভিড় হতো, সেই তুলনায় কয়েকদিন ধরে রোগীর চাপ কম দেখা যাচ্ছে। এছাড়া আগে এই হাসপাতালের আইসিইউ বেড কখনও ফাঁকা থাকতো না। বেডের জন রোগীকে অপেক্ষা করতে হতো। কিন্তু এখন বেড ফাঁকা রয়েছে। আগের দিনগুলোর তুলনায় রোগী বা রোগীর স্বজনদের ভিড় নেই হাসপাতালটিতে। আগে একটির পর একটি অ্যাম্বুলেন্স রোগী নিয়ে আসতো। সেই চাপ অনেকটাই কমে গেছে।
গতকাল হাসপাতালের প্রশাসনিক বিভাগ থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, হাসপাতালটিতে আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন মোট ৭৫ জন। এরমধ্যে আইসিইউ-৩ এ ১১ জন, আইসিইউ-৪ এ ১০, আইসিইউ-৫ এ ১০, আইসিইউ-৬ এ (এইচডিইউ) ২৪ এবং আইসিইউ-৭ এ (এইচডিইউ) ২০ জন ভর্তি রয়েছেন। এছাড়া পুরো হাসপাতালে মোট রোগী ভর্তি আছেন ১২৪ জন। যার মধ্যে জরুরি ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন ২৭ জন রোগী।

জানা যায়, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হলে এক হাজার শয্যার হাসপাতালে ২৫০টি শয্যা নিয়ে যাত্রা শুরু করে হাসপাতালটি। রাজধানীর মহাখালীতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পাইকারি কাঁচাবাজারের ভবনে স্থাপন করা এক হাজার বেডের এই হাসপাতালের নাম দেয়া হয়েছে ‘ডিএনসিসি ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল’।

গত ১৮ এপ্রিল হাসপাতালটি উদ্বোধন করা হয়। হাসপাতালটিতে ২১২ শয্যার আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) রয়েছে। এছাড়াও ২৫০ শয্যার এইচডিইউ (উচ্চ নির্ভরতা ইউনিট), ৫০ বেডের জরুরি বিভাগ (৩০টি পুরুষ, ২০টি নারী) ও ৫৪০ (সিঙ্গেল) রুমের আইসোলেশন ব্যবস্থাা এখানে রয়েছে। এই রুমগুলো অনেকটা কেবিনের মতো। দ্রæতই বেডের সংখ্যা আরো বাড়নো হবে।

ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতাল মূলত করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য। কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছেন বা উপসর্গ আছে- এমন রোগীদের এখানে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তারা প্রথমে ট্রায়াজে প্রবেশ করবেন। সেখানে দুটি জোন আছে। যাদের মৃদু উপসর্গ আছে বা হেঁটেই আসতে পারছে চিকিৎসা নেয়ার জন্য তাদের যদি ভর্তির প্রয়োজন না হয় তবে ভর্তি করা হয় না। সেক্ষেত্রে অবশ্যই তাকে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেয়া হচ্ছে। পরে এসে তিনি আবার রিপোর্ট করতে পারবেন।

ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থাপনা রয়েছে। যারা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আসেন তারা ট্রায়াজ-২ এ চলে যাবে। সেখানে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা আছে। ৬ বেডের একটা আইসিইউ সেটাপ আছে নিচ তলাতেই। সেখানে ভেন্টিলেটরের সুযোগও রয়েছে। আর তাই ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডেই ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের স্ট্যাবল হওয়ার সুযোগ আছে। সেখানে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে পাঠিয়ে দেয়া হয় দ্বিতীয় তলার ওয়ার্ডে।

সেখানে যদি কারও অবস্থা খারাপ হয় তবে তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় আইসিইউ বা এইচডিইউতে। আর যদি একটু স্ট্যাবল হয় বা ঝুঁকির মাত্রা কমে আসে তাদের কেবিনে দিয়ে দেয়া হয়। এই কেবিনগুলোতে সেন্ট্রাল অক্সিজেনসহ হাই-ফ্লো নজেল ক্যানোলা সুবিধা রয়েছে। এক্ষেত্রে মনিটরের ব্যবস্থাাও করা হবে খুব দ্রুত। ওখানে তারা কিছুটা স্ট্যাবল হলে তাদের ধীরে ধীরে ডিসচার্জ হওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন