আইয়ুব আলী : বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। ঈদের দিন বিকেল থেকেই বিনোদন পিয়াসী নানা বয়সের মানুষের ঢল নেমেছিল বন্দরনগরীসহ আশেপাশের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে।
টানা ঈদের ছুটিতে চট্টগ্রাম নগরীর চিরাচরিত চেহারা না থাকলেও নগরীর বিনোদন ও পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে এখন দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। সাধারণত বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে প্রতিদিন যে দর্শনার্থী থাকে, ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থীর সংখ্যা এখন কয়েকগুণ বেশী। এসব বিনোদন কেন্দ্রে অভিভাবকরা তাদের শিশুদের নিয়ে এসেছেন। বিশেষ করে যেসব কর্মজীবী দম্পতিদের শিশুরা এতদিন একটি নির্দিষ্ট গÐির মধ্যে আবদ্ধ ছিল, সেসব শিশুরা এখন ঈদের ছুটিতে মা-বাবার সাথে বিনোদন কেন্দ্রে আসতে পেরে বেজায় খুশি।
ঈদের দিন পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, ফয়’স লেক, পারকি সৈকতসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে মানুষের ভিড় লেগেই আছে। মহানগরী ফাঁকা হলেও দর্শনার্থীর ভারে ঠাসা প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্র। বিনোদন পিয়াসী মানুষ ভিড় করছে পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। আজ (শুক্রবার)ও বিনোদন কেন্দ্রগুলো কোলাহলমুখর থাকবে।
শিশু-কিশোর ছাড়াও সব বয়সের মানুষের ভিড় পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে। পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে সন্ধ্যার পর মানুষের ঢল নামছে। সারাদিন লোকে লোকারণ্য থাকছে পুরো সৈকত। মহানগরীর বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকেও সেখানে পর্যটকরা আসছেন। তবে ফিরতি পথে পর্যটকদের যানবাহন সংকটের কবলে পড়তে হচ্ছে। একই অবস্থা ফয়’স লেকেও। শত শত দর্শনার্থীর ভিড়ে পুরো এলাকা এখন জনারণ্য। ফয়’স লেকের চিড়িয়াখানায়ও দর্শনার্থীদের ভিড়। ছেলে-বুড়ো সব বয়সের মানুষ ভিড় করছেন পশু-পাখির খাঁচার সামনে।
দেশের প্রধান পর্যটন এলাকার মধ্যে চট্টগ্রাম কক্সবাজার ও তিন পার্বত্য জেলা অন্যতম। চট্টগ্রামে রয়েছে পর্যটনের অফুরন্ত সম্ভার। দেশের সকল বিনোদন কেন্দ্রের চাইতে চট্টগ্রামে রয়েছে সবচাইতে বেশি বিনোদন সুবিধা। প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে ওঠা চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ছাড়াও রয়েছে ফয়’স লেক ও চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, আগ্রাবাদ কর্ণফুলী শিশুপার্ক, স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিয়া শিশু পার্ক, কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু, বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল সংলগ্ন জিয়া স্মৃতি কমপ্লেক্স (বর্তমানে স্বাধীনতা পার্ক), জিয়া স্মৃতি যাদুঘর, আগ্রাবাদ প্রতœতাত্তি¡ক যাদুঘর, নেভাল এভিনিউ মেরিটাইম মিউজিয়াম, ওয়ার সেমিট্রি, ডিসি হিল, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশে বাটারফ্লাই পার্ক।
নগরীর বাইরে আনোয়ারা পারকি বিচ, সীতাকুÐ ইকোপার্ক ও মিরসরাইয়ের মহামায়া লেক। এখন উল্লেখিত বিনোদন ও পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীর ঢল নেমেছে। শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের ছেলে-মেয়েসহ তাদের অভিভাবকরা ঈদের দিন বিকেল থেকে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ভিড় করছে।
দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারা মোহছেন আউলিয়া কলেজের পাশে অবস্থিত হিলটপ পার্কের কর্ণধার মইনউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী মেন্না জানান, প্রতিনিয়ত এ পার্কে দর্শনার্থীরা আসছে। তবে ঈদকে ঘিরে এখানে এখন দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। চট্টগ্রাম শহরের পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর মোহনায় অবস্থিত সৌন্দর্যে ঘেরা বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে গড়ে উঠা পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে ঈদের দিন থেকে বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী ভিড় করছে।
এদিকে নগরীর শিশুপার্ক গুলোতেও মানুষের প্রচÐ ভিড়। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে ভিড় করছেন পার্কে। নগরীর শিশুদের বিনোদনের সুবিধার্থে গড়ে উঠা বিনোদন কেন্দ্র আগ্রাবাদ কর্ণফুলী শিশু পার্কে এখন বিভিন্ন বয়সের শিশুদের উপচেপড়া ভিড়। এখানে শিশুদের বিনোদনের জন্য রয়েছে চুকচুক গাড়ি, ভয়েজার বোট, ক্যাবল ট্রেন, দোলনা ও অন্যান্য সামগ্রী।
চট্টগ্রামে আরেক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে গড়ে উঠা ডিসি হিল পার্ক। পাহাড়ের উঁচুনীচু ছায়া সুনিবিড় পরিবেশে ডিসি হিলেও দশনার্থী ভিড় করছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মৃতিকে স্মরণে রাখার মানসে গড়ে উঠেছে চট্টগ্রাম ওয়ার সেমিট্রি। চট্টগ্রাম আর্ট কলেজের পাশে গড়ে উঠা নীরব প্রকৃতিঘেরা এ স্মৃতিসৌধে এখন প্রচুর দর্শনার্থীর সমাগম ঘটছে। নগরীর পাহাড়তলীতে অবস্থিত পাহাড়ের পাদদেশে লেক সমৃদ্ধ বিনোদন কেন্দ্র ফয়’স লেক। এ লেকে ঈদ ঘিরে প্রচুর দর্শনার্থীর সমাগম ঘটেছে। ফয়’স লেকের সামনে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায়ও দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। এছাড়া নগরীর জিয়া স্মৃতি যাদুঘর চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ২৫ কি.মি. উত্তরে অবস্থিত সীতাকুÐ চন্দ্রনাথ মন্দির ও ইকোপার্কেও দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন