ফতুল্লায় বুড়িগঙ্গা নদীর চোরাই তেল সেক্টরের নিয়ন্ত্রণের পর এবার বিসিক শিল্পনগরীর ঝুট সেক্টর নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সদ্য প্রয়াত সাংসদ সারাহ বেগম কবরীর পি,এস খ্যাত সিরাজুল ইসলাম সেন্টু ওরফে দৌড় সেন্টু’র অন্যতম সহোযোগি কথিত ভাগিনা পাভেল ওরফে মির্জা পাভেল । ইতিমধ্যোই মির্জা পাভেল ঝুট সেক্টর নিয়ন্ত্রণ পেতে বিসিক শিল্প নগরী, পঞ্চবটি ও মাসদাইর এলাকার একাধিক গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীর মালিককে ফোন করে ঝুট দেবার দাবী করতে। সে আজমেরী ওসমানের নাম ভাঙ্গিয়ে সদল বলে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতে শুরু করেছে। তবে আজমেরী ওসমানের ঘনিষ্ট সুত্র জানিয়েছে, পাবেল নামে তাদের কেউ নেই। এ ধরনের কর্মকান্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানিয়েছে সুত্রটি।
নারায়নগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক ও সদ্য প্রয়াত সাংসদ সারাহ বেগম কবরীর ব্যাক্তিগত সহকারী বহুল সমালোচিত সিরাজুল ইসলাম সেন্টু ওরফে দৌড় সেন্টু’র হাত ধরেই অপরাধ জগতের হাতে খড়ি হয় বর্তমান সময়ের নদী পথের চোরাই তেল সেক্টরের মুকুটহীন সম্রাট পাভেল ওরফে মির্জা পাভেল।তৎকালীন সময়ে মির্জা পাভেল তার কথিত মামা দৌড় সেন্টু’র আর্শীবাদে বিসিক আব্দুল্লাহ,হিটলার, ডাকাত শহিদ, ফুয়াদ, রনি, ডাকাত খেলাফত সহ এক ডজনের ও বেশী দূর্র্ধষ অপরাধীদের সাথে নিয়ে গড়ে তুলেছিলো অপরাধের বিশাল সমাজ্য। ২০১০ সালের দিকে এই সন্ত্রাসী বাহিনী আধিপত্য বিস্তার কে কেন্দ্র করে ফতুল্লা রেল স্টেশন ব্যাংক কলোনী এলাকায় কুপিয়ে সোহেলকে হত্যা করে।এ হত্যা মামলায় মির্জা পাভেল এজাহারভুক্ত আসামী হলেও মামা দৌড় সেন্টু’র বদৌলতে হত্যা মামলার চার্জশিট থেকে নাম বাদ পরে মির্জা পাভেলের। দ্বিতীয় মেয়াদে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় এলে নারায়নগঞ্জ -৪ আসনের সংসদ সদস্য হতে ব্যর্থ হন সাহারা বেগম কবরি। এ,কে,এম শামীম ওসমান ফিরে পান তার হারানো সিংসাহন। এক্ষেত্রে মির্জা পাভেল রাতারাতি ভোল্ট না পাল্টালেও মহাধূর্ত এই অপরাধী ধীরে ধীরে শাসক দলীয় প্রভাবশালী একটি মহলের সাথে গড়ে তোলে গভীর সখ্যতা। সেই সখ্যতাকে পুঁজি করে প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থেকে ফতুল্লার নৌ পথের চোরাই তেল সেক্টরের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে মির্জা পাভেল।
চোরাই তেল সেক্টর নিয়ন্ত্রণের পর এবার বিসিক ও মাসদাইর পুলিশ লাইন্স এলাকায় ঝুট সেক্টর নিয়ন্ত্রণে মরিয়া হয়ে উঠেছে এই মির্জা পাভেল। নিজ ছোট ভাই বাবু ওরফে মেজর বাবুকে নিয়ে মির্জা পাভেল গড়ে তুলেছে একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনীও। ওই বাহিনীতে অবৈধ অস্ত্রের মজুদ রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ঝুট সেক্টর নিয়ন্ত্রণে ২৮ এপ্রিল দুপুরে ফতুল্লার পুলিশ লাইন্স সংলগ্ন আরবি নীট ওয়্যার থেকে প্রতিষ্ঠানটির মালিক পক্ষের সম্মতিক্রমে ঝুট মালামাল নামাচ্ছিল ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান। এসময় সন্ত্রাসী মির্জা বাবু ওরফে মেজর বাবুসহ তার বড় ভাই তেলচোরা মির্জা পাভেল লোকজন নিয়ে ঝুট ব্যবসায়ী মিজানুর রহমানের উপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে তাকে রক্তাক্ত করে মালামাল ও নগদ দেড় লক্ষাধিক টাকা ছিনিয়ে নেয়। ওই ঘটনায় ভুক্তভুগি মিজানুর রহমান ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় মির্জা পাভেল ও তার ভাই মেজর বাবুর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত নামা ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামী করা হয়। পঞ্চবটিতে রহমান গার্মেন্ট মালিককেও গার্মেন্ট ঝুট দিয়ে বারে বারে ফোন দিয়ে নানা হমুকি ধামকি দিচ্ছে। অন্য কাউকে মাল দিলে সে হামলা চালাবে বলেও হুশিয়ারী দিয়েছে উক্ত গার্মেন্ট মালিককে। ফলে সৃষ্ট হয়েছে উত্তেজনা। দীর্ঘদিন ধরে সালাউদ্দিন নামে এক ব্যবসায়ীর কাছে ঝুট বিক্রি করে আসছেন মালিকপক্ষ। তাকে বাদ দিয়ে পাবেলকে ঝুট দিতে হবে বলে গার্মেন্টের আশপাশে মহড়া দিতে শুরু করেছে। ফলে যে কোন সময় সংঘর্ষের মত ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলে এলাকাবাসী শংকা প্রকাশ করেছেন।
ইতিপূর্বে র্যাব, পুলিশ ও ডিবির হাতে একাধিকবার গ্রেফতার হলেও দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল সন্ত্রাসী মির্জা পাভেল ও মেজর বাবু। ৩ হাজার লিটার চোরাই জ্বালানি তেলসহ মির্জা পাভেলকে র্যাব গ্রেফতার করলেও লাগাম কষা যায়নি চিহ্নিত এই সন্ত্রাসীর। সবশেষ ঝুট দখলে তান্ডব চালানোর মামলায় মেজর বাবু গ্রেফতার হলেও আইনের ফাক গলিয়ে জামিনে বেরিয়ে এসেছে। তবে এখনো অধরাই রয়ে গেছি মির্জা পাভেল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন