কুমিল্লা ময়নামতি জাদুঘর ও শালবন বিহারের ভেতরের ৯টি মূল্যবান গাছ কাটার ঘটনায় তদন্ত কমিটির পর্যালোচনা ও মতামত যথাযথ হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন প্রত্মতত্ত¡ অধিদফতর কুমিল্লা ও সিলেট অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক (আরডি) ড. মো. আতাউর রহমান। অপরদিকে লালবাগ দুর্গ জাদুঘর নামের একটি বইয়ের পুন:মুদ্রনের ঘটনায় অধিদফতরের তৎকালীন মহাপরিচালকের তদন্ত ও পর্যালোচনা নিয়েও ক্ষোভ ঝেড়েছেন এই আঞ্চলিক পরিচালক।
ময়নামতি জাদুঘর ও শালবন বিহারের ভেতরের ইউক্যালিপটাস, মেহগনি, শিল, কড়ই, রাজ কড়ই, একাশিয়া, তাল ইত্যাদি মূল্যবান গাছ যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া কেটে অপসারণ করার ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন। এ অভিযোগের ভিত্তিতে প্রত্মতত্ত¡ অধিদফতরের প্রত্মতাত্ত্বিক রসায়নবিদ মো. লিয়াকত আলীকে আহবায়ক, সহকারী পরিচালক মো. ছাদেকুজ্জামানকে সদস্য সচিব ও সহকারী পরিচালক ড. আহমেদ আবদুল্লাহকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে পর্যালোচনা ও মতামতে অ্যাসিস্ট্যান্ট কাস্টোডিয়ান হাফিজুর রহমানকে অভিযুক্ত করে গাছ কাটার ক্ষেত্রে তার অনিয়ম ও অস্বচ্ছতার বিষয়টি উল্লেখ করেন। এরপর হাফিজুর রহমানকে বদলি করা হয় দিনাজপুরের কান্তাজিইতে। ওই তদন্তের বিষয়ে হাফিজুর রহমান বলেন, আমাকে অন্যায়ভাবে অভিযুক্ত ও বদলি করা হয়েছে। আমি একটি সিন্ডিকেটের শিকার।
প্রত্মতত্ত¡ অধিদফতর কুমিল্লা ও সিলেট অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক ড. মো. আতাউর রহমান মুঠোফোনে এবিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে তদন্তটি যথাযথ হয়নি। যারা অভিযোগ করেছেন তাদের খোঁজও করেননি তদন্ত কমিটি। এছাড়া আমি এখানকার রিজিওনাল ডিরেক্টর, আমার বক্তব্য নেয়ার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু ওনারা আমাকে প্রয়োজন মনে করেননি। অ্যাসিস্ট্যান্ট কাস্টোডিয়ান হাফিজুর রহমানকে বদলি না করার জন্য আমি উপরে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু আমার কথা কেউ শুনেনি। আমাকে নিয়েও ষড়যন্ত্র হচ্ছে। মনে হয় আমি এখান থেকে চলে যেতে হবে।
এদিকে প্রত্মতত্ত¡ অধিদফতরের অবসরপ্রাপ্ত পরিচালক (অফিস প্রধান) এ. কে. এম সামছুল আলম তার লেখা লালবাগ দুর্গ জাদুঘর নামের বইটি অনুমতি ব্যতিত পুন:মুদ্রন ও পরবর্তী সংস্করণের স্বীকৃতি না নিয়ে তার নামের সাথে লেখক হিসেবে ড. আতাউর রহমানের নাম যুক্ত করায় অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবর অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগ ও তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে গত বছরের ২৯ নভেম্বর ড. মো. আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর স্মারকপত্রের মাধ্যমে অনুরোধ জানান প্রত্মতত্ত¡ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. হান্নান মিয়া।
আঞ্চলিক পরিচালক ড. মো. আতাউর রহমান তৎকালীন মহাপরিচালক মো. হান্নান মিয়ার ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বইটি পুন:মুদ্রন কমিটির আহবায়ক ছিলেন তিনি। পুন:মুদ্রনের আগে তিনি এটি যাচাই-বাছাই করে দেখেছেন। আবার সামছুল আলম সাহেবের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি (মো. হান্নান মিয়া) আমার বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়েও লিখেছেন। মানে সরিষায় ভ‚ত। আমাকেও চিঠি দেয়া হয়েছিল। আমি গত ফেব্রুয়ারি বা মার্চের দিকে এটির জবাব দিয়েছি। আসলে সামছুল হক প্রবীণ মানুষ। ওনাকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে এসব করানো হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন