চট্টগ্রামে পৃথক তিনটি সড়ক দুর্ঘটনায় মা-মেয়ে, মসজিদের ইমামসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় বাঁশখালীর বৈলগাঁও এলাকায় ট্রাকের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকসার সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে তিনজনের মৃত্যু হয়। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়কে প্রাণ ঝরেছে আরো ৬ জনের। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যে প্রতিবেদন :
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায় : নিহত তিনজন হলেন-কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ফাসিয়াখালী হাঁসের দীঘি এলাকার মো. আরমানের স্ত্রী সানজিদা করিম (২৩) ও তার মেয়ে প্রিয়া মণি (৩) এবং নাইক্ষ্যংছড়ির মধ্যম বাইশারি এলাকার মো. হাশেমের ছেলে আবদুর রহিম (২৫)। আহতরা হলেন-সানজিদার স্বামী মো. আরমান (২৭) ও অটোরিকশা চালক মো. আইয়ুব (২৭)। এ দু’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তার আগে বাঁশখালী উপজেলা সদরে মিনি ট্রাকের ধাক্কায় দুলাল চক্রবর্তী (৭০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছে। তিনি উপজেলার দক্ষিণ জলদি ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত অনঙ্গ মোহন চক্রবর্তীর পুত্র। এ ঘটনায় আহত দু’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে রোববার রাতে নগরীর কর্ণফুলী সেতু এলাকায় বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজন ভোগ্যপণ্য ব্যবসায়ী এবং আরেকজন মসজিদের ইমাম। তারা হলেন- মো. আবু বক্কর (২৯) ও মো. মফিজ উদ্দিন (৫০)। আবু বক্করের বাড়ি বোয়ালখালী উপজেলার আহলা-করলডেঙ্গা ইউনিয়নের শেখ চৌধুরী পাড়ায়। তিনি খাতুনগঞ্জে পাইকারি বাজারে ভোগ্যপণ্যের ব্যবসা করেন। মফিজ উদ্দিন খাতুনগঞ্জে একটি মসজিদের ইমাম। তার বাড়ি চন্দনাইশ উপজেলার কানাইমাদারী গ্রামে।
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রুহুল আমীন জানান, দু’জন মোটরসাইকেলে খাতুনগঞ্জ থেকে বের হয়ে কর্ণফুলী সেতুর দিকে যাচ্ছিলেন। আবু বক্কর মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন। এ সময় এস আলম সার্ভিসের একটি বাস পেছন থেকে মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়।
বড়াইগ্রাম (নাটোর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান : নাটোরের বড়াইগ্রামে দ্রæতগামী ট্রাকের ধাক্কায় আব্দুল কুদ্দুস (৫০) নামে এক ভ্যান চালক নিহত হয়েছেন। সোমবার সকালে উপজেলার রাজ্জাক মোড়ে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আব্দুল কুদ্দুস উপজেলার উপলশহর গ্রামের মৃত আব্দুল গণির ছেলে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নুর ইসলাম সিদ্দিকী জানান, সোমবার সকালে রাজ্জাক মোড়ে আব্দুল কুদ্দুস তার ভ্যান নিয়ে মহাসড়ক পার হচ্ছিলেন। এ সময় ঢাকাগামী একটি মালবোঝাই ট্রাক ভ্যানটিকে ধাক্কা দিলে তিনি মহাসড়কে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে তিনি মারা যান।
মানিকগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান : ঢাকা আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জের পুখুরিয়া নাকম স্থানে যাত্রীবাহী একটি মিনিবাসের চাপায় দুই মোটরসাইকেলের আরোহী নিহত হয়েছে।দুর্ঘটনায় নিহতদের নাম পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ।নিহত দুই ব্যক্তির লাশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার সকাল ৭টার দিকে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার পুখুরিয়া এলাকয় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
বরংগাইল হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির এস আই আলমগীর হোসেন নিহত দুই ব্যক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সকালে স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে মহাসড়কের পুখুরিয়া থেকে মরদেহটি দুইটি উদ্ধার করা হয়। নিহত ব্যক্তিদের নাম পরিচয় শনাক্তকরণের চেষ্টা চলছে। লাশ দুইটি উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) সংবাদদাতা জানান : দিনাজপুরের চিরিরবন্দরের রাণীারবন্দর ইছামতি কলেজ মোড়ে ট্রাক ও ট্রাক্টরের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় ঘটনাস্থলে ট্রাকচালক এবং হাসপাতালে নেয়ার পথে ট্রাক্টরের হেলপার নিহত হয়েছে। এসড়ক দূর্ঘটনাটি গতকাল ১০ মে সোমবার ভোর আনুমানিক ৫টায় উপজেলার রাণীরবন্দরের নশরতপুর ইউনিয়নের রাণীপুর গ্রামের সৈয়দপুর-দশমাইল মহাসড়কের কলেজ মোড় নামক স্থানে ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ওইসময় দশমাইল থেকে সৈয়দপুরগামী একটি ট্রাক্টরের চাকা পাংচার হয়ে সামনের চাকা খুলে চলে যায়। এসময় সৈয়দপুর থেকে দশমাইলগামী একটি ট্রাকের (যার নং ঢাকা মেট্টো ড ১২-২৭৪৭) সাথে ওই ট্রাক্টরের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ট্রাকের সম্মুখভাগ দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং ট্রাকেরচালক ঘটনাস্থলেই নিহত হন। সংঘর্ষে ট্রাক্টরের হেলপার এরশাদ আলী ট্রাক্টর থেকে ছিটকে রাস্তারপাশে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করলে তিনি পথে মারা যান। নিহতরা হলেন- ট্রাকচালক পাবনা জেলার সাথিয়া উপজেলার নারেন্দা গ্রামের ইউনুস মাষ্টারের ছেলে বাদল মিয়া (৩৫) এবং ট্রাক্টরের হেলপার দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার দীপনগর গ্রামের বগুড়াপাড়ার আজিজার রহমানের ছেলে এরশাদ আলী (৪৫)। দশমাইল হাইওয়ে থানার ওসি মো. কেরামত আলী বলেন, নিহত ট্রাকচালকের লাশ এবং ট্রাক ও ট্রাক্টর হাইওয়ে থানার হেফাজতে রয়েছে।
নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা জানান : নওগাঁর সাপাহারে পাওয়ার ট্রলির চাকায় পিষ্ট হয়ে জোবায়ের হোসেন ( ৩ ) নামের এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
জানাগেছে, গত রোববার সন্ধ্যা পৌনে ৭ টার দিকে উপজেলার তিলনা ইউনিয়নের বাদ দোঁয়াশ গ্রামের পাওয়ার ট্রলির চালক নুর হোসেন তার পাওয়ার ট্রলি চালিয়ে গ্রামের একটি আম বাগানে রাখতে যায়। এসময় নুর হোসেন এর ছ্ট্টো ছেলে জোবায়ের হোসেন তার বাবার পাওয়ার ট্রলিতে ওঠে বসে। পথিমধ্যে অসাবধানতা বশতঃ ওই শিশু পাওয়ার ট্রলি থেকে ছিটকে চাকার নিচে পড়ে যায়। পরে মাথা থেতলে গিয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ বিষয়ে সাপাহার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন