শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

অবকাঠামো উন্নয়নে ৬০ কোটি ডলার ঋণ নেবে সরকার

প্রকাশের সময় : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : দেশের দ্রæত অগ্রগতি সাধনের জন্য বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে অবকাঠামোর মতো উৎপাদনশীল ও প্রবৃদ্ধি সহায়ক প্রকল্পে নমনীয় অর্থায়নের পাশাপাশি স্বল্প পরিমাণে অনমনীয় ঋণসহ মোট ৬০ কোটি ডলার ঋণ নেয়ার চিন্তা করছে সরকার। সম্প্রতি অর্থ বিভাগের ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন অ্যান্ড ফিন্যান্সিং ফ্যাসিলিটি (আইপিএফএফ) প্রকল্প শেষে পরবর্তী ফলো-অন প্রকল্পের সুদের হার নির্ধারণ সংক্রান্ত এক কার্যপত্র থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বাংলাদেশ সরকার গত ২০০৭ সাল থেকে আইপিএফএফ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত প্রকল্প হিসেবে অর্থ বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়িত হলেও, অর্থ বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে সম্পাদিত একটি প্রশাসনিক চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করছে।
এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো অবকাঠামো উন্নয়নে স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন করা, যাতে স্থানীয় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সামর্থ্যরে ঘাটতি রয়েছে। আইপিএফএফ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে বিশ্বব্যাংকের ৫ কোটি ডলার ও সরকারের কাউন্টারপার্ট ফান্ডসহ মোট ৬ কোটি ডলার বরাদ্দ ছিল, যার ৯৮ শতাংশ প্রথম তিন বছরে ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে বেসরকারি খাতে সাতটি পাওয়ার প্লান্টে অর্থায়ন করা হয়, যা জাতীয় গ্রিডে ১৭৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সংযোজন করে। প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের সাফল্য মূল্যায়ন করে বিশ্বব্যাংক দ্বিতীয় পর্যায়ে আরো সুপরিসর লক্ষ্য তথা সরকার অনুমোদিত পিপিপিভিত্তিক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নে বেসরকারি খাতের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির জন্য আর্থিক সহায়তার পরিমাণ প্রায় পাঁচ গুণ বৃদ্ধি করে।
মোট ৩ কোটি ৭ লাখ ডলার অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে বর্তমানে প্রকল্পটির দ্বিতীয় পর্যায় চলমান রয়েছে, যা আগামী ডিসেম্বরে শেষ হবে। অতিরিক্ত অর্থায়নের আওতায় এ পর্যন্ত ৩৬৫ মেগাওয়াট ক্ষতাসম্পন্ন চারটি পাওয়ার প্লান্ট, তিনটি পানি শোধনাগার, একটি ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো ও দেশব্যাপী একটি ফাইবার অপটিক ক্যাবল নেটওয়ার্ক স্থাপন প্রকল্পে প্রায় ২৮ কোটি ডলার দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারের ৩ কোটি ডলার সমপরিমাণ কাউন্টারপার্ট ফান্ড রয়েছে।
এসব ঋণের বিপরীতে এখন পর্যন্ত সুদ ও আসল বাবদ প্রায় ৮ কোটি ১৮ লাখ ডলার রিপেমেন্ট পাওয়া গেছে, যা সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, এ প্রকল্পের মাধ্যমে বেসরকারি খাতে বিতরণ করা ঋণের কোনো রিপেমেন্ট কিস্তি অপরিশোধিত নেই। সরকারের প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে বিশ্বব্যাংক নতুন প্রস্তাব দিয়েছে, যা অর্থ বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যালোচনা করে দেখছে।
দেখা গেছে, ২০ কোটি ডলারের স্কেল আপ ফ্যাসিলিটিজ (এসইউএফ) এবং ৪০ কোটি ডলারের আইডিএ ঋণ বেন্ড করা হলে সর্বমোট ৬০ কোটি ডলারের বিপরীতে ওয়েটেড অ্যাভারেজ ইন্টারেস্ট রেট দাঁড়ায় ১ দশমিক ৬০ শতাংশ, যা গ্রহণযোগ্য প্রস্তাব।
ফলে বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ বিভাগ থেকে এ ধরনের একটি প্রস্তাব তাদের জানানোর বিষয়ে সুপারিশ করা হয়েছে। বাংলাদেশের বেসরকারি অবকাঠামো খাতে অর্থায়ন ও পিপিপি বিষয়ে কারিগরি সক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে আইপিএফএফ প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ফলে এ প্রকল্পের ধারাবাহিকতায় ভবিষ্যতে আইডিএ ঋণের মতো নমনীয় অর্থায়ন ধীরে ধীরে কমে আসবে এমনটাই স্বাভাবিক।
এ পরিপ্রেক্ষিতে, অবকাঠামোর মতো উৎপাদনশীল ও প্রবৃদ্ধি সহায়ক প্রকল্পে নমনীয় অর্থায়নের পাশাপাশি স্বল্প পরিমাণে অনমনীয় ঋণ নেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করার সুপারিশ করেছে অর্থ বিভাগ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন