সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বাস্থ্য

মনের রোগ ডিসথাইমিয়া

| প্রকাশের সময় : ২১ মে, ২০২১, ১২:০৪ এএম

ডিসথাইমিয়া মনের এমন অসুখ যা মানসিকভাবে ভারাক্রান্ত রোগীকে কুরে কুরে খায়। এ অসুখটি বিষন্নতা বা ডিপ্রেশনের মতো কতক উপসর্গ আর লক্ষণ নিয়ে এসে থাকে। অতএব মনের এ অসুখটিতে এক ধরনের দীর্ঘমেয়াদি বিষন্ন বা অবসাদগ্রস্ত মনোভাব/মানসিক অবস্থা বিরাজ করে। এ ধরনের পীড়াদায়ক মানসিক অবস্থা দিনের পর দিন নয়, দুই বছর বা তার চেয়েও বেশি হলে একে ডিসথাইমিক ডিসঅর্ডার বলা হয়। তবে শিশু-কিশোরদের মধেও এ রোগ পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। তাদের ক্ষেত্রে উত্তেজনা ও বিরক্তিকর মনমেজাজ কমপক্ষে এক বছর হয়ে গেলে তারা ডিসথাইমিয়াতে ভুগছে বলা যেতে পারে। যাদের মধ্যে গত দুই বছর মোটামুটি নিম্নরূপ উপসর্গ ও লক্ষণ বিরাজ করেছে তারাই এ রোগে পড়ে।

এ রোগের মূল উপসর্গগুলো হলো-
১. খাবার-দাবারে অনীহা/রুচিহীনতা অথবা খাবার রুচি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়া
২. ঘুমের সমস্যা (ঘুম কমে যাওয়া অথবা ঘুম অনেক বেড়ে যেতে পারে)
৩. মনোশারীরিক শক্তি কমে যাওয়া
৪. অল্পতেই অবসন্নতাবোধ বা অবসাদজনিত ক্লান্তি অনুভ‚ত হওয়া।
৫. আত্মমর্যাদাবোধ/আত্মসম্মানবোধে ঘাটতি
৬. মনোযোগ কমে যাওয়া
৭. অল্পতেই একাগ্রতা হারিয়ে ফেলা
৮. সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যায় ভোগা, প্রায়শ সিদ্ধান্ত নিতে অনেক দেরি হওয়া।
৯. সারাক্ষণ মনে আশাহত অনুভ‚তি, দুঃখের ভাব।

ডিসথাইমিক ডিসঅর্ডারকে নিম্নবর্ণিত অসুখ থেকে আলাদা করে যেভাবে রোগ নির্ণয় করা হয় তা হলো-
১) প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে গত ২ বছরে বড় ধরনের বা মেজর ডিপ্রেসিভ এপিসোড হয়ে থাকলে তাকে ডিস থাইমিয়াতে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। তবে শিশু-কিশোরদের ক্ষেত্রে এর মাত্রা কম পক্ষে ১ বছর।
২) বাইপোলার ম্যানিকদশা যদি রোগীর জীবনে একবারও হয়ে থাকে তবে সেটিকেও ডিস-থাইমিয়াতে ফেলা যাবে না।
৩) ম্যানিক ডিপ্রোসিভ অর্থাৎ কিছুদিন আনন্দ-স্ফুর্তি আবার কিছুদিন বিষাদগ্রস্ততায় ভুগলে তাকেও এ রোগের আওতায় ফেলা যাবে না।
৪) রোগীর জীবনে সাইকোথাইমিক ডিসঅর্ডার অর্থাৎ মনমেজাজ আনন্দ-স্ফুর্তির বর্ডার লাইনে অবস্থান করে তাদেরও এতে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না।
৫) অ্যালকোহল বা মদপান, ড্রাগ বা মাদকাসক্তি, ওষুধ সেবন বা অন্য কোনো মেডিকেল অসুখে এরকম উপসর্গ দেখা দিলে সেটিকেও ডিসথাইমিয়াতে ফেলা যাবে না। শেষে উল্লেখ থাকে যে, এতে যে নানা ধরনের উপসর্গ হয়ে থাকে তাতে ব্যক্তির সামাজিক, পেশাগত, শিক্ষাগত ও অন্যান্য জরুরি দৈনন্দিন কর্মকান্ডে বেশি ক্ষতি হয়ে থাকে। এর জন্য চাই সঠিক সময়ে মানসিক সুচিকিৎসা সেবা নেয়া।

ডা. মোহাম্মদ আব্দুর রহমান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন