শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

করোনাকালীন ভ্রমণ ও কিছু অভিজ্ঞতা

অজয় কান্তি মন্ডল | প্রকাশের সময় : ২৩ মে, ২০২১, ১২:০১ এএম

একটা ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে যোগ দিতে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে একবার দেশে গিয়েছিলাম। এর পরে চীনের ফুজিয়ান প্রদেশের বাইরে আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি। এর প্রধান কারণ বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। বেশ কিছু কনফারেন্সে যাওয়ার কথা থাকলেও আমার টিউটরের একটাই কথা ছিল ‘যেতে পার তাতে কোন আপত্তি নেই। আমি তোমাকে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেব কিন্তু ফেরার ব্যবস্থা করতে পারব না, কারণ এখন চীনের বাইরে গেলে আর ফিরতে পারবে না’। তাই এগিয়ে গিয়েও আবার পিছিয়ে এসেছি। কিন্তু অতি সম্প্রতি চীনের ‘গোয়াংডং’ প্রদশের রাজধানী ‘গুয়াংজু’তে একটা কনফারেন্সে গিয়েছিলাম। সাথে ছিল আমার টিউটর এবং ল্যাবমেট। দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর পরে ফুজিয়ান প্রদেশের বাইরে ভ্রমণ তাও আবার করোনাকালীন সময়ে, একটু হলেও মনের ভেতর ভয় কাজ করছিল। সেইসাথে করোনাকালীন সময়ে চীনা প্রশাসনের নেওয়া বেশ কিছু পদক্ষেপও আমাকে অনেক বেশি অবাক করেছিল। বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে চীনে করোনাকালীন ভ্রমণের কিছু বিষয় তুলে ধরছি।

যাওয়ার আগে আমাদের ইন্টারন্যাশনাল কলেজের নোটিশ অনুযায়ী, সাধারণ ছুটির ফর্মের পাশাপাশি আরও একটি বাড়তি ছুটির ফর্ম জমা দিতে হয়েছিল। কারণ হিসেবে বলা যায়, করোনাকালীন সময়ে বাইরে ভ্রমণের প্রতি বেশ কড়াকড়ি এখানে এখনো বহাল আছে। যেখানে ছুটির ফর্মে আগে শুধুমাত্র একাডেমিক কলেজের স্ট্যাম্প নিলেই চলত সেখানে এখন বাড়তি যুক্ত হয়েছে আরও কয়েকজনের স্বাক্ষর এবং স্ট্যাম্প। অন্য প্রদেশে ভ্রমণের জন্য করোনা টেস্ট বাধ্যতামূলক। তাই যাত্রা শুরুর আগের দিন আমি এবং আমার ল্যাবমেট করোনা পরীক্ষা করানোর জন্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই অবস্থিত একটি হাসপাতালে গিয়েছিলাম।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাসপাতালে গিয়েই প্রথমে কাউন্টারে পাসপোর্ট ও মোবাইল নম্বর দিয়ে একটি কার্ড করিয়ে টেস্টের জন্য কার্ডে নির্দিষ্ট ফিস ডিপোজিট করলাম। এরপর যেখানে করোনা টেস্ট করানো হবে সেদিকে গেলাম। সেখানের একটা কাউন্টারে আমাদের কার্ডটা পাঞ্চ করে টেস্টটিউবের মতো একটা স্যাম্পল হোল্ডার দিল। স্যাম্পল হোল্ডারের গায়ে বার কোড এবং হাসপাতালের সদ্য ইস্যুকৃত কার্ডের সাথে কানেক্ট করাই মূলত ছিল ওই কাউন্টারে থাকা দায়িত্বরত ব্যক্তির কাজ। তারপর যেখানে স্যাম্পল নেওয়া হয় সেখানে গেলে কর্তব্যরত নার্স পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যবিধি অবলম্বন করেই নাকের ভেতর থেকে স্যাম্পল নিল। সব মিলিয়ে এক মিনিটের মতো সময় লাগল ওখানে। স্যাম্পল দিয়ে আমরা ফিরে এলাম। রিপোর্ট পরের দিন আমাদের কাছে পৌঁছে যাবে, এমনটায় জানানো হয়েছিল কাউন্টার থেকে।

পরের দিন আমাদের ভ্রমণ শুরু হয়েছিল দুপুরের খাবার সেরেই ১২টার দিকে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট থেকেই ‘এয়ারপোর্ট এক্সপ্রেস’ নামের একটা পরিবহনে ওঠার জন্য আগে থেকেই টিকিট করে রেখেছিলাম। এয়ারপোর্ট যাওয়ার জন্য এই সার্ভিসটি খুবই ভালো। যেটা কোনো বিরতি ছাড়াই এক থেকে দেড় ঘণ্টা পর পর মিনহউ (আমাদের বসবাসের কাউন্টি) টু এয়ারপোর্ট যাতায়াত করে।

বাসে ওঠার আগে বাধ্যতামূলক সবাইকে তাদের মোবাইল নির্দিষ্ট অ্যাপে থাকা হেলথ কোড দেখে এবং সকলকে মাস্ক পরার সাপেক্ষে বাসের সুপারভাইজার ভেতরে ওঠার অনুমতি দিচ্ছে। আমরা ৫০ মিনিটের মাথায় এয়ারপোর্টে পৌঁছে গেলাম। ফুজিয়ান প্রদেশের আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্ট ‘ফুজো চাংলা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট’, যেটা আমাদের দেশের ‘হযরত শাজালাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট’র চেয়ে আয়তনে কয়েকগুণ বড় এবং বাড়তি সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত। করোনাকালীন সময় হওয়ায় ভেবেছিলাম হয়ত এয়ারপোর্ট বা বিমানে খুব বেশি যাত্রীর চাপ থাকবে না। কিন্তু এয়ারপোর্টে পৌঁছে দেখি পরিস্থিতি অনেকটাই বিপরীত। অন্যান্য বারের চেয়ে এবার যাত্রীর চাপ তুলনামূলক বেশি। আমরা এয়ারপোর্টের ডোমেস্টিক ফ্লাইটের প্রবেশ দ্বার দিয়ে ভেতরে ঢুকতে গিয়ে দেখলাম, এয়ারপোর্টে প্রবেশের ক্ষেত্রে বেশ কড়াকড়ি। নিরাপত্তা কর্মীরা সবার হেলথ কোড দেখে এবং মাস্ক পরার পরেই ভেতরে ঢোকার অনুমতি দিচ্ছে। আমরা যথাযথ নিয়মনীতি অনুসরণ করেই ভেতরে প্রবেশ করলাম।

এয়ারপোর্টে প্রবেশের পরে দেখলাম, পুরো এয়ারপোর্টের অল্প দূরত্ব পরপর রাখা আছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। যেটা অনেকে সেলফ সার্ভিসের মতো ব্যবহার করছে। তাছাড়া এয়ারপোর্টে বার বার ঘোষণা করা হচ্ছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করার জন্য এবং সার্বক্ষণিক মাস্ক ব্যবহারের জন্য। যাইহোক, আমরা আমাদের বোর্ডিং পাস নিয়ে এয়ারপোর্টের চেক ইন কাউন্টারের দিকে অগ্রসর হলাম। বহু যাত্রীর চাপ এখানেও এবং বেশ লম্বা লাইন। সবমিলিয়ে প্রায় ১০টা লাইন এবং প্রতিটা লাইনে সমান তালে দুইজন কর্তব্যরত নিরাপত্তাকর্মী তাদের ডিউটি দ্রুত গতিতে পালন করে যাচ্ছে, তার পরেও আমরা প্রায় ২০ মিনিট লাইনে দাঁড়িয়ে পার করলাম। এখানেও দেখলাম মেঝেতে প্রতিটা মানুষের দাঁড়ানোর জন্য নির্দিষ্ট ১.৫ মিটার পর পর বৃত্তাকার করে দাগানো আছে। সবাই তার ভেতরে দাঁড়িয়েই শৃঙ্খলিতভাবে চেক ইন-এর জন্য অপেক্ষা করছে। যদি কেউ অখেয়াল বশত সামান্য এদিক সেদিক হয় তার জন্য নিয়োজিত আছে সার্বক্ষণিক দায়িত্বরত ব্যক্তি। তারা গিয়ে তাদেরকে সতর্ক করলে আবার সবাই নিয়ম মেনেই দাঁড়াচ্ছে। আমরা চেক ইন শেষ করে বিমানে ওঠার জন্য ট্রামিনালের নির্ধারিত গেটে অপেক্ষা করতে লাগলাম।

অল্প কিছুক্ষণের ভিতর আমাদের নির্ধারিত ফ্লাইটে ওঠার জন্য বোর্ডিং শুরু হলো। বোর্ডিংয়ের আগে একজন সবার হাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার স্প্রে করে দিল। ড্রেসআপ দেখে বুঝলাম, তিনি বিমান কোম্পানির কেউ অথবা বিমান ক্রুদের কেউ হবেন। এরপর আমরা বিমানের নির্ধারিত আসনে গিয়ে বসলাম। নির্ধারিত সময়ে বিমান উড়াল দিল। বিমানের ভেতরে সহকারী পাইলট সার্বক্ষণিক ঘোষণা দিচ্ছিলেন, মাস্ক ব্যবহার করার জন্য। কিছুক্ষণ পরে নাস্তা নিয়ে বিমান ক্রু-রা এলো। প্রথমে তারা যাত্রীদের হাত জীবাণুমুক্ত করার জন্য সবার হাতে একটি করে গরম পানিতে ভেজানো ছোট টাওয়েল দিল। এরপরে দিল একটা ওয়েট টিস্যু তারপর নাস্তা। অন্যান্য সময়ে শুধুমাত্র ওয়েট টিস্যুর ব্যবস্থা থাকলেও বুঝলাম করোনাকালীন সময়ে বাড়তি সতর্কতা হিসেবে ওই টাওয়েলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আমরা দেড় ঘণ্টা পর গুয়াংজু পৌঁছে গেলাম। গুয়াংজু পৌঁছে বিমান বন্দরের বাইরে বের হওয়ার ক্ষেত্রেও বেশ কড়াকড়ি লক্ষ করলাম। কয়েক জায়গায় হেলথ কোড দেখার ব্যবস্থা আছে। আমরা এয়ারপোর্ট থেকে ট্যাক্সিতে করে হোটেলে পৌঁছালাম। হোটেলে পৌঁছে সেখানকার নিয়মনীতি আরও বেশি কঠোর মনে হলো। হোটেলে প্রবেশ পথেই হ্যান্ড স্যানিটাইজেশন নিয়ে বসে আছে এক ব্যক্তি এরপর হেলথ কোডের পরীক্ষা। ভাবলাম এখানেই শেষ। কিন্তু না, পরে অনেক বেশি ফরমালিটিস অনুসরণ করে, অনেকগুলো ফর্ম ফিলাপ করে তবেই আমরা হটেলে চেক ইন করলাম। আমি ভিনদেশি ছিলাম তাই ওইসব ফর্ম ফিলাপ করা আমার জন্য অতীব জরুরি এবং বাধ্যতামূলক ছিল।

একটা ফোর স্টার হোটেলে আমাদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছিল। রুমে গিয়ে আমরা ব্যাগপত্র রেখে রাতের খাবার সেরেই রওনা হলাম আশপাশে ঘুরতে। আমাদের হোটেলের পাশেই ছিল ‘পার্ল রিভার’ এবং ‘গুয়াংজু টেলিকমিউনিকেশন টাওয়ার’। গুয়াংজু শহর চীনের বাণিজ্যিক শহর নামেও বেশ পরিচিত। সৌন্দর্যের কোনো কমতি নেই এই শহরে। অনেক ভ্রমণ পিয়াসু এখানে আসে রাতে পার্ল রিভারে শিপিং এবং শিপিংয়ের সময়ে টেলিকমিউনিকেশন টাওয়ার এবং এর পার্শ্ববর্তী সৌন্দর্য অবলোকনের জন্য। আমরাও ওই সুযোগ হাতছাড়া করিনি। টিপটিপ বৃষ্টির মধ্যে ছাতা নিয়ে আমরা তিনজন বেরিয়ে পড়লাম। রাত তখন প্রায় দশটা। কিন্তু টাওয়ারের আশপাশে মানুষের কোনো কমতি নেই। আমরা শিপিংয়ের জন্য টিকিট করলাম। চীনের সবখানেই সব ভ্রমণের ক্ষেত্রে মাস্ক পরা এবং হেলথ কোড বাধ্যতামূলক। কেউ যদি অভ্যাসের বশে মাস্ক হালকা নাকের নিচে নামিয়ে ফেলছে তো নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ সেটার তদারকি করছে। আমরা নিজেদের হেলথ কোড দিখিয়ে শিপিংয়ের জন্য টিকিট করে একটা জাহাজে উঠলাম। শিপিং শেষে রাত ১২টার দিকে হোটেলে ফিরলাম। পরের দিন কনফারেন্স ছিল। সেখানেও একই কড়াকড়ি। স্বেচ্ছাসেবকরা সবাই মাস্ক এবং হেলথ কোড দেখেই কনফারেন্স রুমে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে। কনফারেন্স শেষে আমরা গুয়াংজুর আরও কিছু ঐতিহ্যবাহী স্থানে ঘুরলাম এবং সবখানেই স্বাস্থ্যবিধির কমন বিষয়গুলো খেয়াল করলাম। পরের দিন কনফারেন্স শেষে ফুজিয়ান প্রদেশে ফেরার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।

ফেরার সময় আমার টিউটরকে দুইদিন পূর্বে স্যাম্পল দেওয়া করোনা টেস্টের রিপোর্টের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, ‘রিপোর্ট নিয়ে উদবিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। রিপোর্ট যদি পজেটিভ হয় তাহলে প্রশাসন তোমাকে খুঁজে বের করবে।’ ওনার কথা শুনে একটু হাসলাম। এরপর তিনি ব্যাখ্যা করে বললেন। ‘তুমি যখন হাসপাতালে কার্ড করেছিলে তখন তোমার মোবাইল নম্বর দিয়েছিলে। ওই মোবাইল নম্বর তোমার হেলথ কোডের সাথে যুক্ত। তাই রিপোর্টের হার্ড কপি তোমার না হলেও চলবে। অর্থাৎ তোমার রিপোর্ট প্রস্তুত হওয়ার পর সরাসরি হেলথ কোড সেটাকে ডিটেক্ট করবে’। তার কথা শুনে ভাবলাম, কতই না প্রযুক্তিনির্ভর এদের সবকিছু। সামান্য ছোট্ট একটা অ্যাপ দিয়ে একশো কোটিরও বেশি মানুষের প্রতিদিনকার চলাফেরা এরা পর্যবেক্ষণ করতে পারে। আর সেটা পারে বলেই চীন পেরেছে বা পারছে করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে। তিনি আরও বললেন ‘এখন তোমার হেলথ কোড গ্রিন কালার দেখাচ্ছে যদি করোনা টেস্টের রিপোর্টে পজেটিভ আসে তাহলে এটা অটোমেটিক লাল হয়ে যাবে। সে সময়ে তুমি কোথাও ভ্রমণ করতে পারবে না। ভ্রমণের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক হেলথ কোড দেখাতে গেলেই লাল কোড দেখাবে। সাথে সাথে ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে। আর মুহূর্তের মধ্যেই মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ ধরে ফেলবে বর্তমানে তুমি কোথায় আছ এবং ইতোপূর্বে কোথায় কোথায় গেছো’। তার এই সহজ ব্যাখ্যার পরেই বুঝলাম, কীভাবে চীনারা আক্রান্ত ব্যক্তিকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে খুঁজে বের করে এবং তাৎক্ষণিক আইসোলেশন করে করোনা নিয়ন্ত্রণ করে।

এই হেলথ কোডটির ব্যবহার এখানে সর্বত্র। বিশেষ করে কোনো জনবহুল এলাকায় ঘুরতে গেলে। আর এক প্রদেশ থেকে অন্য প্রদেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে তো কথাই নেই। এই হেলথ কোড দেখার প্রক্রিয়াটি চীনাদের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘উইচ্যাট’র এপ্লিকেশনের সাথে যুক্ত। এছাড়া ‘ঈঅগচটঝঐঙণ’ নামে আরও একটি মোবাইল অ্যাপ আছে, যেখানে এই হেলথ কোডের ব্যবস্থা আছে এবং সকলের চলাচল ট্র্যাকিংয়ের ব্যবস্থাসহ আরও নানান এপ্লিকেশন আছে। হেলথ কোডের পাশাপাশি সব জায়গায় তাপমাত্রা মনিটরিংয়ের ব্যবস্থাও এখানে সমান্তরালে বহাল আছে। বিপণি বিতান, হাসপাতাল, বিমানবন্দরসহ যেকোন জনাকীর্ণ এলাকায় তাপমাত্রা মনিটরিং করা হয় স্বয়ংক্রিয়ভাবে। অর্থাৎ যেকোন স্থানে প্রবেশের সাথে সাথে সকলের তাপমাত্রা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিটেক্ট করে সেখানে রাখা মনিটরের স্ক্রিনে দেখাচ্ছে। যেটাতে কোনো ঝামেলা ছাড়া দ্রুত গতিতে নির্ভুলভাবে সবার তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে।

এসকল নিয়মনীতি এত সুচারুভাবে চীনারা পালন করে, যেটা দেখলে সহজে অনুমান করা যায় যে, করোনা নির্মূল করেই এরা ক্ষ্যান্ত হয়নি, পরবর্তীতে যাতে আবারো বিপদে পড়তে না হয় তার জন্য সর্বদা তাদের নিয়মনীতি সমান তালে প্রয়োগ করে যাচ্ছে। আর এভাবেই সার্বক্ষণিক সব জায়গায় সর্বোচ্চ সতর্কতা দিয়েই প্রতিটি মুহূর্ত সকলকে মনিটরিং করেই চীন করোনা বিস্তার রোধে সফল হয়েছে বা হচ্ছে। চীন ছাড়া অন্যান্য দেশে করোনার যে ভয়াবহতা সেটা সহজেই মনে করিয়ে দেয় অন্যান্য দেশ চীনাদের মতো করোনা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করতে পারিনি বা পারছে না। লকডাউনের ভিতরেও জনসাধারণের সবখানে অবাধে বিচরণ করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে কোনো ইতিবাচক প্রভাব কোনো দেশ এখনো পায়নি, সেটা ভালোভাবে প্রমাণিত। করোনা চিরতরে নির্মূলের পূর্ব পর্যন্ত প্রয়োজন নিয়ন্ত্রণে রাখা। আর এই নিয়ন্ত্রণ রাখাটাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। যেটাতে পুরোপুরি সফল হয়েছে চীন।
লেখক: গবেষক, ফুজিয়ান এগ্রিকালচার এন্ড ফরেস্ট্রি ইউনিভার্সিটি, ফুজো, ফুজিয়ান, চীন।
ajoymondal325@yahoo.com

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন