আরিচা সংবাদদাতা : পদ্মার তীব্র স্রোতে দৌলতদিয়ায় নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এ নদী ভাঙনের কবলে পড়ে দৌলতদিয়ার ফেরিঘাটগুলো ও সংযোগ সড়ক একাধিকবার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। অবশেষে শনিবার রাতে তীব্র স্রোতে দৌলতদিয়ার ৪ নং ফেরিঘাটের সংযোগ সড়ক নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ২ নং ফেরিঘাটটি গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে। চারটি ঘাটের মধ্যে এখন ১ ও ৩ নম্বর ঘাট দিয়ে ফেরিতে যানবাহন লোড-আনলোড করা হচ্ছে। নদী ভাঙনের কারণে ৩ নং ঘাটটিও ঝুঁকিতে রয়েছে, যে কোন সময় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এমতাবস্থায় ফের বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ার ফেরি সার্ভিস। ফলে ঈদ উদযাপন শেষে কর্মস্থলমুখী মানুষের সিমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে এ ঘাট হয়ে যাত্রীদের নিরাপদ ও নির্বিঘেœ যাতায়াতের জন্য সকল আয়োজনই ভেস্তে গেছে।
গত কয়েক দিন ধরে দৌলতদিয়ায় ৫-৬ কিলোমিটার পর্যন্ত যানজট লেগেই আছে। এতে নদী পার হতে আসা যাত্রীদের হয়রানি ও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কোটি কোটি টাকা খরচ করেও পদ্মার স্রোতকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডবিøউটিএ) প্রকৌশল বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
বিআইডবিøউটিএ-এর নির্বাহী প্রকৌশলী নিজাম উদ্দিন জানান, স্রোতের কারণে নদী ভাঙন রোধে তাদের কোন উদ্যোগই কাজে আসছে না। একদিকে ঘাট মেরামত করছে। পর মুহূর্তে স্রোতের তোড়ে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ভাঙনকবলিত ফেরিঘাট সংযোগ রাস্তার তীরে জিও ব্যাগ ফেলছে। দ্রæত চার নম্বর ঘাটটি চালু করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
জানা গেছে, অব্যাহত পদ্মার ভাঙনে দফায় দফায় ফেরিঘাট ভাঙা-গড়া নিয়ে সরকারের বিআইডবিøউটিএ, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সড়ক ও জনপথ তিনটি বিভাগের সাথে মনস্তাত্তি¡ক বিরোধ চলছে। ফলে ভাঙনের পর দ্রæত গতিতে ঘাট মেরামত হয় না। রাস্তা ভাঙলে কোন বিভাগ তা ঠিক করবে তা ঠিক করতেই চলে যায় অনেক সময়।
গত এক মাসের বেশি সময় ধরে দৌলতদিয়ার চারটি ফেরিঘাটের মধ্যে সবগুলো ঘাটই কয়েক দফায় ভেঙেছে। বন্যা শুরুর পর থেকে তীব্র স্রোতের কারণে ঘাট টিকিয়ে রাখা দুরূহ হয়ে পড়ছে। বন্যার পানি কমে যাওয়ায় পর ভাঙন কিছুটা রোধ করা গেলেও ভারত ফারাক্কার বাঁধ খুলে দেয়ায় নতুন করে নদীতে পানি বৃদ্ধি পায় এবং নদী ভাঙ্গন শুরু হয়।
বিআইডবিøউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শফিকুল ইসলাম জানান, শনিবার রাতে ৪ নং ঘাটের সংযোগ সড়কটি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ২ নং ঘাটটি গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে ১, ৩ নং দুটি ঘাট দিয়ে যানবাহন লোড-আনলোড হচ্ছে। ফলে ঘাট এলাকায় যানবাহনের লম্বা লাইন থেকেই যাচ্ছে। রোববার ঘাটে দূরপাল্লার বাস ও ট্রাকসহ শত শত যানবাহনের লাইন পড়ে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন