শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

করোনা সংক্রমণ সীমান্ত জেলাগুলোতে বেশি

ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে উদ্বেগ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ মে, ২০২১, ১২:০৪ এএম

যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে সম্প্রতি যারা ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন তাদের মধ্যে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরন শনাক্ত বেশ ঊর্ধ্বমুখী। যশোর জেলার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি ভারত থেকে তিন হাজারের বেশি মানুষ বাংলাদেশে এসেছেন, যাদের বিভিন্ন আবাসিক হোটেল ও কোয়ারিন্টন সেন্টারে রাখা হয়েছে। এদের মধ্যে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪০০ জনের বেশিকে করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ হয়েছেন ১০ জন; যাদের মধ্যে ৭ জনই ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বহন করছেন। এ তথ্য জানিয়েছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনোম সেন্টারের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ইকবাল কবির জাহিদ।

দুই সপ্তাহ আগে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের অস্তিত্ব বাংলাদেশে প্রথম ধরা পড়েছিল যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে। বিষয়টিকে বেশ উদ্বেগজনক হিসেবে বর্ণনা করেন অধ্যাপক কবির।

গতকাল বিবিসির খবরে বলা হয়, সীমান্তের জেলাগুলোতে করোনা সংক্রমণ বেশি বলে জানা গেছে। ভারতের সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের বেশির ভাগ জেলায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এখন অন্য জেলাগুলোর চেয়ে বেশি।

সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় সংক্রমণের হার ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাওয়ায় বেশ নড়েচড়ে বসেছে সরকার। বিভিন্ন জেলায় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভারতের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেশি হবার পেছনে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের সংযোগ আছে কি না সেটি গবেষণার প্রয়োজন।

সিলেট, কুমিল্লা, খুলনা, যশোর, দিনাজপুর এবং ঝিনাইদহসহ বিভিন্ন সীমান্তবর্তী জেলায় সংক্রমণ বৃদ্ধির খবর পাওয়া যাচ্ছে। দিনাজপুরের সিভিল সার্জন আব্দুল কুদ্দুস বলেন, গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে জেলায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার দুই শতাংশের নিচে নেমেছিল। এপ্রিল মাসে সংক্রমণের হার বেড়ে ২০ শতাংশ পর্যন্ত হয়েছিল। এখন কিছুটা কমলেও শনাক্তের হার গড়ে ১৫ শতাংশের উপরে রয়েছে বলে জানান সিভিল সার্জন।

দিনাজপুরের হিলি বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ ট্রাক ভারতে যাওয়া-আসা করে। এই পরিবহনের সাথে সম্পৃক্ত প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৪৫০ ড্রাইভার এবং হেলপার আসা-যাওয়া করছে।
দিনাজপুরের সিভিল সার্জন আব্দুল কুদ্দুস বলেন, পণ্য পরিবহনের সাথে সম্পৃক্ত ড্রাইভার ও হেলপারদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি নিশ্চিত করা হচ্ছে।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনোম সেন্টারের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, অন্যান্য জেলার চেয়ে যশোরে সংক্রমণের হার বেশি। তিনি জানান, গত এক সপ্তাহে যশোরে করোনাভাইরাস শনাক্তের হার গড়ে ২০ শতাংশের মতো।

সীমান্ত বন্ধ থাকার কথা বলা হলেও বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে অনেক বাংলাদেশি বৈধ পথে আসা-যাওয়া করছেন। আবার অনেকে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে আসা-যাওয়া করছেন। যারা অবৈধ পথে আসা-যাওয়া করেন তাদের সবসময় ধরা যায় না। ফলে তাদের মাধ্যমে সংক্রমণ কতটা ছড়িয়ে যাচ্ছে সেটি নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে।

অধ্যাপক ইকবাল কবির বলেন, সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে ব্যাপক হারে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করাতে হবে। কিন্তু সেটি হচ্ছে না। মানুষ আমাদের কাছে এসে টেস্ট করাবেÑ এ ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমাদের আগ্রহী হয়ে মানুষের কাছে গিয়ে টেস্ট করাতে হবে। একমাত্র টেস্টই পারে সংক্রমণ কমাতে।

ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলা ভারতের সীমান্তের সাথে যুক্ত। সে এলাকা দিয়ে অনেকে অবৈধ পথে ভারতে আসা-যাওয়া করে। ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার একজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বলেন, অবৈধ পথে কিছু মানুষ এখনো ভারতে যাওয়া-আসা করছে। চলতি মে মাসে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে ঢোকার সময় অন্তত ৩০ জনকে আটক করেছে বিজিবি।

ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন সেলিনা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, ভারত থেকে যারা আসছে তাদের টেস্ট এবং কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা হচ্ছে। সে জেলায় এখন করোনাভাইরাস শনাক্তের হার প্রায় ১০ শতাংশ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন