শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

ধারণক্ষমতার তিনগুণ যাত্রী নিয়ে চাঁদপুরে লঞ্চ চলাচল

প্রকাশের সময় : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

চাঁদপুর জেলা সংবাদদাতা : বোঝাই হয়ে গেছে লঞ্চে সব কটি ডেক। তারপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হুড়োহুড়ি করে লঞ্চে উঠছে ঈদ শেষে কর্মস্থলমুখী মানুষ। ধারণক্ষমতার দু-তিনগুণ বেশি যাত্রী নিয়ে চাঁদপুর থেকে ঢাকা অভিমুখে ছেড়ে যাচ্ছে লঞ্চগুলো।
গত শনিবার ও রোববার চাঁদপুর লঞ্চঘাটে এমন চিত্রই দেখা গেছে। লঞ্চে জায়গা না পেয়ে অনেক যাত্রীকে টার্মিনালে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
ঈদ উপলক্ষে চাঁদপুর নৌ-টার্মিনালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকলেও অতিরিক্ত যাত্রী বহনের দায়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়ার কাউকে দেখা যায়নি।
যাত্রীদের অধিক চাপ থাকায় লঞ্চ মালিকরা ঢাকা-চাঁদপুর, চাঁদপুর-নারায়ণগঞ্জ, মতলব-নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ-কাঠপট্টি নৌ-রুটে ফিটনেসবিহীন লঞ্চ নামিয়েছে। এগুলো অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করছে। এ ছাড়া এ রুটে যেসব লঞ্চকে নৌ-অধিদপ্তর ত্রæটিপূর্ণ বলে যাতায়াত নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল, সেসব লঞ্চ তড়িঘড়ি মেরামত ও রং করে ঈদ উপলক্ষে যাত্রী পারাপারে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
চাঁদপুর-মতলব-নারায়ণগঞ্জ ও মতলব-নারায়ণগঞ্জ, মতলব-ঢাকা রুটে যাতায়াতকারী ছোট ছোট যাতায়াতকারী অধিকাংশ লঞ্চই ত্রæটিপূর্ণ। আর এ কথা স্বীকার করেছেন নৌ-পরিবহন অধিদপ্তর পরিদর্শক মো. জহিরুল ইসলাম। অতিরিক্ত যাত্রী বহনের কারণে যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বিরাজ করছে।
চাঁদপুর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে লঞ্চ যেন না ছাড়ে সেজন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত। সকাল থেকেই লঞ্চঘাটে পুলিশ, কোস্টগার্ডসহ সবাই কাজ করে যাচ্ছে। তবে যাত্রীদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়ে উঠছে না বলে জানান তিনি। তিনি দাবি করেন মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চে উঠছে ।
পরিবারের সঙ্গে ঈদুল আযহা উদযাপন শেষে কর্মমুখী মানুষ তাদের কাজে যোগ দিতে গন্তব্য স্থলে যাওয়ার জন্য শনিবার থেকে রোববার পর্যন্ত লঞ্চঘাটে আসতে থাকে। শরীয়তপুর জেলার চরাঞ্চল, রায়পুর, ল²ীপুর, নোয়াখালী, ফেনীসহ আশপাশের জেলার বেশিরভাগ মানুষ লঞ্চে যাতায়াত করে। এই সুযোগে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ তাদের ইচ্ছেমতো যাত্রী নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা করছে।
হাজীগঞ্জ থেকে আসা যাত্রী জেসমিন আক্তার জানান, অফিস খোলা, তাকে কাজে যোগ দিতে হবে। বাসের টিকেট পাননি। কোনো উপায় না পেয়ে লঞ্চে দাঁড়িয়ে রওয়ানা হয়েছে। যে কোনোভাবে তাকে ঢাকায় পৌঁছতে হবে।
অপর যাত্রী কাপড় দোকানের কর্মচারী শাহজাহান জানান, সকাল থেকেই লঞ্চঘাটে ভিড়। টার্মিনালে আসতেই লঞ্চ বোঝাই হয়ে যায় যাত্রীতে। কয়েক গুণ যাত্রী নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের আগে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে লঞ্চ।
এমভি রফ রফ-এর যাত্রী মাহমুদুল হাসান ও সুমন জানান, লঞ্চের ২য় ও ৩য় তলায় কোনো জায়গা নেই। তাই ছাদে দাঁড়িয়ে রওয়ানা হয়েছেন তারা। কারন তাদের কাজে যোগ দিতে হবে।
লঞ্চ মালিক প্রতিনিধি বিপ্লব সরকার জানান, ঈদের পরে তেমন ভিড় ছিল না। গতকাল হঠাৎ যাত্রীসংখ্যা বেড়ে গেছে। যাত্রীদের না ওঠার জন্য নিষেধ করলেও তারা জোর করে লঞ্চে উঠছে।এ কারণে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে লঞ্চগুলো ছেড়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের পরিবহন পরিদর্শক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, জনবল সংকটের কারণে বিভিন্ন ত্রæটিপূর্ণ (ফিটনেসবিহীন) যানবাহন ঠিকমতো পরিদর্শন করা যাচ্ছে না। ফলে এ রুটে ফিটনেসবিহীন কিছু নৌযান যাতায়াত করছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন