পাবনার মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ছিল শহরের পেটের ভেতর দিয়ে বয়ে চলা প্রায় ৮ কিলোমিটার নদীতে অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও খনন করে নদীর প্রাণ ফিরিয়ে আনা। এই দাবিতে পাবনার মানুষ দীর্ঘদিন সভা সমাবেশ আন্দোলন করে অবশেষে নদী উদ্ধার ও খননের কাজ শুরু হয় গত ৩০ মার্চ। কিন্তু দু মাস হতে না হতেই নদী পাড়ের অবৈধ স্থপনা উচ্ছেদ বন্ধ হয়ে গেছে এবং খননের কাজের তেমন অগ্রগতি না দেখে আবার হতাশ হচ্ছে শহরবাসী।
গতকাল সোমবার বেলা ১১ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত পাবনা ডিসি অফিস ঘেরাও কর্মসূচী পালন এবং জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন ইছামতি নদী উদ্ধার আন্দোলন পাবনা এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) পাবনা জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ এসময় স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে শহরবাসী কর্মসূচীতে যোগ দেন।
ইছামতি নদী উদ্ধার আন্দোলন পাবনা এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) পাবনা জেলা শাখার উদ্যোগে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন ( বাপা) পাবনা জেলা শাখার সহসভাপতি জেলা পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি এড তোসলিম হাসান সুমন কর্মসূচীর সভাপতিত্ব করেন। ইছামতি নদী উদ্ধার আন্দোলন পাবনার সভাপতি এস এম মাহবুব আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ঘেরাও কর্মসূচীতে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা আসম আব্দুর রহিম পাকন, বাপা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট কলামিস্ট সাংবাদিক আব্দুল হামিদ খান বক্তব্য রাখেন। তারা বলেন, পাবনার ঐতিহ্যবাহী ইছামতি নদী খনন এবং নদীপাড়ের অবৈধ উচ্ছেদ কার্যক্রম যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে হবে। তা না হলে আগামীতে কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। উল্লেখ্য, বাংলাবাজার ব্রিজ থেকে লাইব্রেরীবাজার হয়ে শ্মশানঘাট পর্যন্ত ৭.৭৬ কি. মি. ইছামতি নদীর ২ মিটার অথার্ৎ প্রায় ৭ ফুট খনন কাজের জন্য ইতোমধ্যে ৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকার টেন্ডার হয়েছে। কাজটি পেয়েছেন ঢাকার জনৈক ঠিকাদার আব্দুর রাজ্জাক। গত ৩০ মার্চ কাজটি উদ্বোধন করেন পাবনা সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স।
লাইব্রেরী বাজার থেকে শ্মশানঘাট পর্যন্ত ৫ কি. মি. নদী খননের কাজ শুরু হবে দেশের লকডাউন শেষ হলে, প্রথমে নদীর দুপাড়ে উচ্ছেদ অভিযান পরে খনন কাজ। বাকী ২.৭৬ কি. মি. অর্থাৎ বাংলাবাজার ব্রিজ থেকে লাইব্রেরীবাজার পর্যন্ত খনন কাজ চলছে। প্রায় দু‘মাসে মাত্র ২০ থেকে ২৫% কাজ করা হয়েছে। জুন - জুলাই বর্ষামৌসুমে কাজ করা অসম্ভব। বাকী কাজ আগামী ৩১ ডিসেম্বর এর মধ্যে কী ভাবে সম্ভব। এ ভাবে কাজ চলতে থাকলে খনন কাজের টাকা ফেরত দিতে হবে বলে জানান বাপাউবো পাবনার এক কর্মকর্তা। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের স্বাক্ষাত তো দূরের কথা মোবাইলেও পাওয়া যাচ্ছে না। জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ স্মারকলিপি গ্রহণ শেষে বলেন, মহামান্য হাইকোর্টের উর্ধ্বে আমরা কেউ নই। হাইকোর্টের আদেশ মত সিএস ম্যাপ অনুযায়ী পাবনার ঐতিহ্যবাহী ইছামতি নদীর দু’পাড়েরর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং খনন কাজ করা হবে। খননকাজে কোন রকম অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। খনন কাজ তদারকির জন্য আমরা আলাদা কমিটি করে দিব।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন