ওরাল লাইকেন প্ল্যানাস সাধারণত গালের অভ্যন্তরে বাক্কাল মিউকোসাতে বেশি দেখা যায়। কিন্তু এছাড়া মাড়ি, জিহবা, ঠোঁট এবং মুখের অন্যান্য অংশেও হতে পারে। মাঝে মাঝে ওরাল লাইকেন প্ল্যানাস গলা পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করে থাকে। আর অন্য দিকে চর্মে লাইকেন প্ল্যানাস সাধারণত দুই হাতের রিস্ট বা কব্জি এবং পায়ের হাঁটুর নিচের সম্মুখ ভাগের হাড় টিবিয়ার শিনের উপরিভাগের ত্বকে দেখা যায়।
আক্রান্ত স্থান : আক্রান্ত স্থান সাধারণত শরীরের উভয় দিকে হয়ে থাকে। আক্রান্ত স্থানে বেগুনি বা কালচে রং এর দাগ দেখা যায়। আর মুখের লাইকেন প্ল্যানাস এর ক্ষেত্রে আক্রান্ত স্থান ক্রিস ক্রস ধরনের হয়ে থাকে। আবার বাক্কাল মিউকোসাতে সাদা সাদা দাগ দেখা যেতে পারে।
রোগের কারণ : লাইকেন প্ল্যানাস রোগে ইমমিউনো প্যাথোজেনেসিস এর প্রমাণ রয়েছে যদিও দায়ী এন্টিজেন শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। ইমমিউনো প্যাথোজেনেসিস বলতে শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ব্যবস্থা ব্যাহত হয় বুঝায়। লাইকেন প্ল্যানাস অথবা লাইকেন প্ল্যানাস এর মত দেখতে সংক্রমণের যোগসূত্র থাকতে পারে যে সব ক্ষেত্রে সেগুলো হল : ১। অ্যামালগাম ডেন্টাল ফিলিং ২। ঔষধজণিত কারণ বিশেষ করে এনএসএআইডি গোত্রভুক্ত ব্যথানাশক ওষুধ ৩। স্বর্ণ নির্মিত কোন ডেন্টাল অ্যাপ্লায়েন্স ৪। ম্যালেরিয়া রোধকারী ওষুধ ৫। মিথাইল ডোপা জাতীয় ওষুধ ৬। অটোইমমিউন ডিসঅর্ডার ৭। ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ৮। এইচআইভি ভাইরাস আক্রান্ত হলে।
যে সব রোগে লাইকেন প্ল্যানাসের যোগসূত্র কম সেগুলো হলো : ১। দীর্ঘমেয়াদি যকৃতের রোগ ২। হেপাটাইটিস সি ভাইরাস সংক্রমণ।
লাইকেন প্ল্যানাসের চিকিৎসা : আক্রান্ত স্থানে স্থানীয়ভাবে প্রয়োগকারী স্টেরয়েড সমৃদ্ধ সঠিক ওষুধ প্রয়োগ করা যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে সঠিক ওষুধ নির্বাচন না করে প্রয়োগ করলে কোন কাজে আসবে না। অতিমাত্রায় সংক্রমণের ক্ষেত্রে এন্টিফাংগাল ওষুধ সেবন করতে হবে। ধূমপান ও এলকোহল সেবন বর্জন করতে হবে। তাজা ফলমূল ও শাক-সবজি খেতে হবে। এতে করে ওরাল ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটা কমে যাবে। লাইকেন প্ল্যানাস যেহেতু দীর্ঘ মেয়াদে অবস্থান করতে পারে তাই লাইকেন প্ল্যানাস থেকে যেন মুখে স্কোয়ামাস সেল কারসিনোমা (ক্যান্সার) হতে না পারে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ডাঃ মোঃ ফারুক হোসেন
মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ
মোবাইল : ০১৮১৭৫২১৮৯৭
ই-মেইল : dr.faruqu@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন