স্টাফ রিপোর্টার : কারাবন্দিদের অর্থদÐ পরিশোধ সহজ করতে নির্দেশনা জারি করেছে সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন। কারাদÐ ও অর্থদÐ পাওয়া কোনো আসামির কারাভোগ শেষে মুক্তি সহজ করতে এ নির্দেশনা জারি করা হয়। এতে বলা হয়েছে, অর্থদÐ পরিশোধের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আদালতের অনুমতি ছাড়াই আসামির প্রতিনিধি বা আত্মীয়-স্বজন আসামির কারাদÐ শেষ হওয়ার আগে বা পরে সরাসরি ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে এই অর্থ পরিশোধ করতে পারবেন। কারা কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি যাচাই করে নিশ্চিত হয়ে আসামিকে মুক্তি দেবেন। আগে এ ক্ষেত্রে আদালতের অনুমতি নিতে হতো। গতকাল মঙ্গলবার হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন স্বাক্ষরিত সার্কুলারে এ নির্দেশনা জারি করা হয়। এই সার্কুলার জারির ক্ষেত্রে সুপ্রিমকোর্টের ফুল কোর্ট সভার অনুমোদন নেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সার্কুলারের অনুলিপি আইজি প্রিজন, দেশের সব জেলা ও দায়রা জজ আদালতসহ বিভিন্ন আদালতে, সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সব কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপারসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, অর্থদÐ ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে ব্যাংকে জমা দেয়ার পর চালানের কপি কারাবন্দি যে কারাগারে সাজা ভোগ করেছেন, সরাসরি সেই কারাগার কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কারা কর্তৃপক্ষ ট্রেজারি চালান পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে অনলাইনে বা টেলিফোনের মাধ্যমে চালানটির সত্যতা এবং সাজা পরোয়ানায় উল্লিখিত অর্থদÐের পরিমাণ যাচাই করবেন। এ ক্ষেত্রে আরোপিত সমুদয় অর্থদÐ পরিশোধিত হয়েছে বলে কারা কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট হলে বিধি অনুসারে বন্দিকে মুক্তি দেবেন এবং অর্থদÐ পরিশোধ ও কারাবন্দিকে মুক্তি প্রদানের বিষয়টি বিচারিক আদালতকে অবহিত করবেন। এতে বলা হয়, রায় প্রদানকারী আদালত যে জেলায় অবস্থিত বা যে জেলার কারাগারে আসামি অবস্থান করছেন, সেই জেলার ওই ব্যাংকে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে এই অর্থ জমা দেয়া যাবে।
প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ হয়েছে, সাধারণত অর্থদÐসহ কারাদÐপ্রাপ্ত বন্দিরা সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার কাছাকাছি সময়ে বা শেষ হওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে অর্থদÐ পরিশোধে আগ্রহী হন। বিদ্যমান কারাবিধি অনুযায়ী, কারা কর্তৃপক্ষ বরাবর অর্থদÐ সরাসরি পরিশোধের সুযোগ না থাকায় সাজাপ্রাপ্ত অধিকাংশ কারাবন্দির প্রতিনিধি বা নিকট আত্মীয়দের পক্ষে আদালতে গিয়ে অর্থদÐ পরিশোধ করা সহজসাধ্য হয় না। অনেক ক্ষেত্রে আইনজীবীর শরণাপন্ন হতে হয়, মামলার নথি তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায় না, ক্ষেত্রভেদে ঊর্ধ্বতন আদালতে নথি পাঠানোর কারণে তা সংশ্লিষ্ট আদালতে সংরক্ষিত থাকে না এসব কারণে সহজে অর্থদÐ পরিশোধ করা সম্ভব হয় না। আবার দÐ প্রদানকারী আদালত থেকে কারাবন্দি দূরবর্তী ভিন্ন জেলার কোনো কারাগারে আটক থাকলে বা তাঁর আত্মীয়-স্বজন দূরে বসবাস করলে অর্থদÐ পরিশোধ কষ্টসাধ্য, সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে। এসব জটিলতার কারণে ইচ্ছা থাকা সত্তে¡ও কারাবন্দিরা সময়মত অর্থদÐ পরিশোধ করতে না পেরে অতিরিক্ত কারাদÐ ভোগ করেন। ফলে বন্দির কারাবাস দীর্ঘায়িত হয়। সরকারের ব্যয় বাড়ে এবং কারাগারে বন্দির সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে নানা ধরনের জটিলতা তৈরি হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন