বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

হঠাৎ করে গোদাগাড়ীর পদ্মা নদীতে ফের ধরা পড়ছে বাঘাইড়, পাঙ্গাস, বোয়াল, রুই কাতল

গোদাগাড়ী (রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ জুন, ২০২১, ১১:৫০ এএম

পদ্মা নদীতে জেলের জালে ধরা পরছে ঝাঁকে ঝাঁকে বাঘাইড়, পাঙ্গাস, রুই, বোয়াল, কাতল মাছ। বিগত বছরের তুলনায় এই বছর নদীতে এ সময় অনেক বেশি ধরা পরছে।
সরেজমিনে গতকাল গোদাগাড়ী উপজেলার রেলওয়ে বাজার, মৎস্য আড়ৎ ও নদীর পাশে দেখা যায়, সারিবদ্ধভাবে বাঘাইড় পাঙ্গাস, রুই কাতল, রেখে দিয়েছে জেলেরা। পরে সেই মাছগুলো আড়তের মালিকরা পাইকারদের কাছে বিক্রি করছেন। এছাড়াও দাম কম হওয়ায় দূরদূরান্ত হতে অনেক ক্রেতা ও পাঙ্গাস মাছ ক্রয় করছেন। একেকটা পাঙ্গাস মাছের ওজন ১০-১৮ কেজি এবং বাঘাইড় মাছ ৫ কেজি হতে ২৫ কেজি। দেখা গেছে প্রতি কেজি পাঙ্গাসের মূল্য পরে প্রায় ৬৫০-৭৫০ টাকা, বাঘাইড় প্রতিকেজি ৬শ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মৎস্য আড়তে মাছ বিক্রি করতে আসা জেলে কামাল হোসেন জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার এসময়ে নদীতে বেশি বেশি পাঙ্গাস ধরা পরছে। প্রত্যেক দিন সবাই মাছ পাচ্ছে, দামও ভাল পাওয়া যাচ্ছে।
এছাড়া রেলওয়ে বাজার মৎস্য আড়তদারদের সাথে এ বিষয়ে কথা হলে তারা জানান, জাটকা ইলিশের মতো যদি সরকার পাঙ্গাসের বাচ্চা বিক্রি বন্ধ করে তাবে ভবিষ্যতে আরো অনেক পাঙ্গাসের দেখা মিলবে। এ প্রসঙ্গে গোদাগাড়ী সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ শামসুল করিম বলেন, গোদাগাড়ীর রেলবাজার হতে সুতানগঞ্জ পর্যন্ত মাটিতে কঙ্গর জাতীয় খাবারের প্রাচুর্যতা থাকাই এসব মাঝের দেখা মিলছে এবং এসব অঞ্চলকে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে মনে করছে।এগুলি সংরক্ষণ করা হলে, মাছের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। রেলবাজার মাছের আড়ৎ গুলিতে চলছে জমজমাটভাবে মাছের ব্যবসা। কাঁক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে এ আড়ৎ গুলি।
পুরানো দিনের সেই এক সময়ের চিরচেনা পদ্মায় যখন জেলেরা মাছ ধরে আনন্দ করত আর সুখে রুজি রোজগার করত এখন সেই অবস্থা বিরাজ করছে গোদাগাড়ী উপজেলার জেলে সম্প্রদায়ের মাঝে। সারারাত জেগে মাছ ধরে খুব সকাল সকালে আড়তে আসছে বড় বড় পাঙ্গাস, চিংড়ি, বোয়াল ও বাঘাইর মাছ বিক্রয় করতে। আবার দুপুরের পর হতে রাত পর্যন্ত মাছ ধরে নিয়ে এসে গোদাগাড়ীর রেলওয়ে বাজার আড়ৎ গুলিতে বিক্রি করছে জেলেরা। আর রাজশাহী, নাটোর, বগুড়া, পাবনা, ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা হতে আগত পাইকারী ক্রেতারাও ছুটে আসছে বড় বড় পাঙ্গাস আর বাঘাইর মাছ ক্রয় করতে। খুব সকাল ও সন্ধ্যা বেলা গোদাগাড়ী সদরের রেলবাজারের আড়ৎ গুলোতে ঘুরলে এমনই চিত্র চোখে পড়বে সবার। আবার কেউ কেউ পূর্বে হতে বড় মাছের অর্ডার পৌছে যাচ্ছে বাড়ীতে বাড়ীতে । বসকে খুশি করতে কিংবা উপহার হিসেবে এমাছ ক্রয় করে পাঠানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। ফেসবুকে মাছের ছবি পোষ্ট দেখে বড় এ মাছ ক্রয় করতে আসছেন।
গোদাগাড়ীর রেলবাজরের আড়ৎদার জাহাঙ্গীর জানান সর্বনিন্ম ৫ কেজি ওজন হতে শুরু করে সর্বোচ্চ ২৫ কেজি পর্যন্ত ওজনের বাঘাইড় ও ২০ কেজি ওজনের পাঙ্গাস মাছ ধরা পড়ছে জেলেদের জালে। এছাড়াও বড় বড়, বোয়াল, কাতল মাছ ধরা পড়ছে। ২২ কেজি ওজনের কাতল মাছ ১০২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। গত ২ হতে ৩ বছর হতে এই মৌসুমে পদ্মায় হঠাৎ পাঙ্গাস ও বাঘাইর মাছের আবির্ভাবে পদ্মা পাড়ের বাসিন্দাদের মাঝেও চোখে মুখে আনন্দ দেখা দিয়েছে। তারা বলছে অনেক দিন পর অন্তত বড় বড় মাছ আমরা দেখতে ও কিনে খেতে পাচ্ছি। মাছ ব্যবসায়ী দয়াল বলেন, এমন বড় বড় মাছে ক্রয় করে রাজশাহী, বগুড়াসহ অন্য বাজারে নিয়ে বিক্রি করে ভালই হচ্ছে।
এই বছর পদ্মা নদীতে বড় বড় বাঘাইর ও পাঙ্গাস মাছের আবির্ভাব হওয়ার কারন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলেরা বলেন, পদ্মানদীতে এই সময় বেশী পানি থাকে। পানির গভীরতার জন্য এসব মাছ এই অঞ্চলে নিরাপদ আশ্রয় মনে করে এসেছে তাই এসব মাছ ঝাঁকে ঝাঁকে পাওয়া যাচ্ছে। সারারাত দিন কর্ডের ফাঁস জাল দিয়ে এসব মাছে পাওয়া যাচ্ছে বলে জেলেরা জানান। তারা আরও বলেন, প্রচুর পরিমানে বাঘাইর ও পাঙ্গাস ধরা পড়ায় মাছ বিক্রি করে তারা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে।
রেল বাজারের মাছের আড়ৎদার মোঃ জাহাঙ্গীর বলেন, মাঝের আড়ৎ এ ইলিশ মাছ আসে না তবে বড় বড় পাঙ্গাস আর বাঘাইর আসার ফলে ঢাকা হতে আগত মাছ ব্যবসায়ীরা এসব মাছ ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে এতে করে ব্যবসায় বেশ ভালো হচ্ছে বলে জানান। রাজবাড়ী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ সেলীম রেজা বলেন, ভাগে ৪ কেজি পাঙ্গাস কিনে ছিলাম সত্যি পদ্মা নদীর পাঙ্গাস দাম বেশী হলেও খুবই সুস্বাদু।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
মোঃআব্দুল্লাহ আল মারুফ ১১ জুন, ২০২১, ১১:৩৫ পিএম says : 0
করোনা কালিন সময়ে মধ্যেবিত্তদের জন্য এই জাতীয় মাছ ক্রয় সাদ্ধের বাহিরে।এক মন ধান বিক্রি করে এক কেজি মাছ হয় না।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন