স্টাফ রিপোর্টার ঃ ২০১৫ সালে ১০ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন। আগের বছরের তুলনায় আয় বেড়েছে ২ শতাংশ। ইন্টারনেট ডেটার ব্যবহারে প্রবৃদ্ধির ওপর ভর করে এই আয় বেড়েছে বলে জানিয়েছে অপারেটরটি। ২০১৪ সালে গ্রামীণফোনের আয় ছিল ১০ হাজার ২৭০ কোটি টাকা। গতকাল (সোমবার) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ২০১৫ সালের আর্থিক প্রতিবেদন তুলে ধরেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রাজীব শেঠী ও সিএফও দিলীপ পাল।
রাজীব শেঠী বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে গত বছরের শুরুটা কঠিন হলেও পরে আমরা গ্রামীণফোনের ব্যবসায়িক সাফল্য অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছি। ভয়েস কলের চেয়ে ডাটা ছিল প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি। অন্যদিকে ভয়েস প্রতিযোগিতামূলক অফারের কারণে চাপে ছিল। তিনি আরো বলেন, ভবিষ্যতে গ্রাহকের জীবনে ডিজিটাল পার্টনার হিসেবে অবস্থান নিয়ে প্রবৃদ্ধি এবং মূল্য সংযোজনের লক্ষ্য আমরা স্থির করেছি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত বছর নতুন গ্রাহক এবং সেবা থেকে গ্রামীণফোনের রাজস্ব বেড়েছে ২ দশমিক ৪ শতাংশ, একই সময়ে গ্রাহকদের ব্যবহার্য ডিভাইস এবং অন্যান্য ক্ষেত্র থেকে রাজস্ব বেড়েছে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। ডাটা রাজস্বের ৬৬ শতাংশ ও মূল্য সংযোজিত সেবার রাজস্ব ৩১ শতাংশ বাড়ায় এই প্রবৃদ্ধি এসেছে। চতুর্থ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) নতুন গ্রাহক ও ট্রাফিক রাজস্ব ২০১৪ সালে তুলনায় ৫ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছর গ্রামীণফোনে নতুন গ্রাহক যোগ হয়েছে ৫২ লাখ, যার ফলে বছর শেষে অপারেটরটির গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৬৭ লাখ। এই ১০ শতাংশ গ্রাহক প্রবৃদ্ধির ফলে সিম মার্কেট শেয়ার দাঁড়িয়েছে ৪২ দশমিক ৪ শতাংশ। ডাটা গ্রাহকের সংখ্যা ৪৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৫৭ লাখ এবং ডাটা ব্যবহারের পরিমাণ গতবছরের তুলনায় প্রায় তিন গুণ বেড়েছে। আয়কর প্রদানের পর ২০১৫ সালে মুনাফা হয়েছে এক হাজার ৯৭০ কোটি টাকা, যা ২০১৪ সালে ছিল এক হাজার ৯৮০ কোটি টাকা। দক্ষ পরিচালন ব্যয়ের কারণে এ বছর ইবিটা হয়েছে ৫৩ দশমিক ৪ শতাংশ মার্জিনসহ ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এবছর শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ১৪ দশমিক ৫৯ টাকা।
গ্রামীণফোনের সিএফও দিলীপ পাল বলেন, ২০১৫ সালে দুর্বল টপ লাইন পারফরম্যান্স সত্তে¡ও আমরা লাভজনক প্রবৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের ২ শতাংশ রাজস্ব বৃদ্ধির তুলনায় ইবিটা (অন্যান্য আইটেমের পূর্বে) বেড়েছে ২ দশমিক ৮ শতাংশ। উচ্চতর অবচয় ও অ্যার্মোটাইজেশন এবং সিম পরিবর্তন বিরোধসংক্রান্ত এককালীন আপিল ব্যয় সত্তে¡ও আমাদের আয় স্থিতিশীল ছিল।
গ্রামীণফোন ২০১৫ সালে ৩জি নেটওয়ার্ক স্থাপন, ২জি নেটওয়ার্কের মানোন্নয়ন এবং আইটি অবকাঠামোর দক্ষতা বৃদ্ধিতে এক হাজার ৯৩০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। গত বছর কর, ভ্যাট, শুল্ক ও লাইসেন্স ফি হিসেবে ৫ হাজার ১১০ কোটি টাকা দিয়েছে, যা কোম্পানির মোট রাজস্ব আয়ের ৪৮ দশমিক ৮ শতাংশ। গত ৭ ফেব্রæয়ারি অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গ্রামীণফোনের পরিচালকমÐলী ২০১৫ সালের জন্য পরিশোধিত মূলধনের ৬০ শতাংশ (প্রতিটি ১০ টাকার শেয়ারের জন্য ৬ টাকা) চ‚ড়ান্ত নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন