রাজধানীর সাথে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের রকেট স্টিমার সার্ভিসটি কোনমতে চলছে। দৈনিক রকেট স্টিমার সার্ভিসটি এখন চলছে মাত্র সপ্তাহে ৩ দিন। গত বছর মার্চে দেশে করোনা মহামারি ছড়িয়ে পরার আগে থেকেই ঢাকা-চাঁদপুর-বরিশাল-ঝালকাঠি-পিরোজপুর ও বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ রুটের রকেটি স্টিমার সার্ভিসটি অনিয়মিত হয়ে পরে। অথচ বিআইডব্লিউটিসির কাছে অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রী পরিবহনের জন্য ৪টি প্যাডেল স্টিমার ছাড়াও তিনটি স্ক্র-হুইল নৌযান রয়েছে। তবে সংস্থাটি নিয়মিত যাত্রী পরিবহন নিশ্চিত করতে না পারলেও এসব নৌযানের মধ্যে দুটি বিনা দরপত্রে দীর্ঘ মেয়াদী ইজারা প্রদান করেছে।
আর সরকারি নৌপরিবহনের এ ব্যর্থতাকে পুজি করে বেসরকারি নৌ-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর নানামুখী নৈরাজ্য অব্যাহত রয়েছে। করোনা সঙ্কটকে পুঁজি করেও বেসরকারি নৌযান মালিকরা কথিত সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার শর্ত ভঙ্গ করে ধারণ ক্ষমতার প্রায় পূর্ণ যাত্রী নিয়েও ডেকে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছে।
বিআইডব্লিউটিসির পিএস অষ্ট্রিচ জাহাজটি বছর চারেক আগে বিনা দরপত্রে এক ব্যক্তিকে দীর্ঘ মেয়াদী ইজারা প্রদান করা হয়। রেলওয়ে থেকে ভর্তুকি মূল্যে সংগ্রহ করে প্রায় ১১ কোটি টাকা ব্যয় করে পুনঃমেরামতের পরে এমভি সোনারগাঁ এক ব্যক্তি ইজারা নিয়ে রাষ্ট্রীয় অপর একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে তা ভাড়া দিয়েছেন।
সংস্থার হাতে থাকা পিএস মাহসুদ, পিএস লেপচা ও পিএস টার্ন নৌযানগুলোর মধ্যে প্রথমটি মেরামতের নামে যাত্রী পরিবহনের বাইরে বিগত প্রায় দু’বছর। গত এপ্রিলের শেষভাগে নৌযানটি মেরামতে সংস্থার ডকইয়ার্ডে নেয়া হলেও আসন্ন ঈদুল আজহার আগে তা যাত্রী পরিবহনে ফেরার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। পিএস টার্ন জাহাজটিতে ২০০২ সালে নতুন ইঞ্জিন সংযোজনের পরে কোন পূর্র্ণাঙ্গ মেরামত হয়নি।
অপরদিকে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে প্রায় ৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এমভি বাঙালী ও এমভি মধুমতি নামের দুটি স্ক্রু-হুইল যাত্রীবাহী নৌযান সংস্থার বহরে যুক্ত হলেও তার পরিচালন ব্যয় প্যাডেল জাহাজগুলোর দ্বিগুণেরও বেশি। নৌযান দুটি প্রতি রাউন্ড ট্রিপে ৩-৪ লাখ টাকা লোকসান গুনছে।
কিন্তু ব্যয় সাশ্রয়ী ৪টি প্যাডেল জাহাজের পরিপূর্ণ মেরামতের মাধ্যমে আরো অন্তত দুই দশক যাত্রী পরিবহন সম্ভব বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির দায়িত্বশীল কারিগরি কর্মকর্তারা। এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিসির জিএম (ইঞ্জিনিয়ারিং) জানান, আমরা চেষ্টা করছি পিএস মাহসুদ যত দ্রুত সম্ভব মেরামত করে যাত্রী পরিবহনে দিতে। এছাড়া দুটি প্যাডেল ও দুটি স্ক্রু-হুইল নৌযান সচল রয়েছে বলে জানান তিনি। তবে সবগুলো প্যাডেল জাহাজ পরিপূর্ণ মেরামতের প্রয়োজনীতার সাথেও তিনি একমত পোষণ করেছেন।
এ বিষয়ে সংস্থার পরিচালক (বাণিজ্য) আশিকুর রহমান জনান, খুব শিগগিরই রকেট স্টিমার সার্ভিসটি সপ্তাহে ৪ দিন চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। পিএস মাহসুদ ফিরলে সার্ভিস আরো বাড়ানোর বিষয়ে চিন্তা করা হবে বলেও জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন